প্রভাত রিপোর্ট: জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জাকসু) নির্বাচনের ফল ঘোষণার পর বিভিন্ন হলের পূর্ণাঙ্গ ভোট গণনায় অসঙ্গতি দেখা দিয়েছে। এতে নির্বাচনের স্বচ্ছতা ও নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। শনিবার (১৩ সেপ্টেম্বর) আনুষ্ঠানিক ফল ঘোষণার সময় শহীদ রফিক-জব্বার হলে ডাইনিং ও ক্যান্টিন সম্পাদক পদে প্রথমে আশরাফুল ইসলামকে বিজয়ী ঘোষণা করা হলেও পরে ভুল গণনার অজুহাতে তা পরিবর্তন করা হয়।
আশরাফুলকে ফোন করে হলে প্রভোস্ট অধ্যাপক আব্দুস সাত্তার জয় জানান, তিনি আসলে ৯২ ভোট পেয়েছেন, ফলে নির্বাচিত হননি। অথচ ঘোষিত ফলে দেখা গেছে, আশরাফুল পেয়েছিলেন ১৩২ ভোট, আর তার প্রতিদ্বন্দ্বী লুৎফর রহমান রিফাত ১২৯, ইউসুফ ১২৫ ও আবু সায়েম ১২৩ ভোট পান। চার প্রার্থীর মোট ভোট দাঁড়ায় ৫০৯, যেখানে হলে বৈধ ভোট পড়েছে মাত্র ৪৬৯টি।
এ বিষয়ে প্রার্থী আশরাফুল বলেন, নির্বাচন কমিশনের ঘোষণায় আমি জয়ী হয়েছিলাম। পরে বলা হলো গণনায় ভুল হয়েছে। এত সময় নিয়েও ফলাফলে এ ধরনের ভুল হওয়া অত্যন্ত দুঃখজনক।
হল প্রভোস্ট অধ্যাপক সাত্তার বলেন, দুই টালিতে ভোট গণনার সময় ইংরেজি সংখ্যা ভুল পড়া হয়েছিল। এর ফলেই এই বিভ্রান্তি।
অন্যদিকে, মওলানা ভাসানী হলে কার্যকরী সদস্য পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা সম্প্রীতির ঐক্য প্যানেলের নীহ্লা অং মারমা শূন্য ভোট পান। এতে বিস্ময় প্রকাশ করে ভোটার রেলং খুমি প্রশ্ন তোলেন, আমি নিজেই তাকে ভোট দিয়েছি, অথচ ফলাফলে সে একটি ভোটও পেলো না।
এমন অনিয়ম দেখা গেছে জাহানারা ইমাম হলেও। হলে মোট ভোট পড়েছে ২৪২টি, কিন্তু কমিশনের ঘোষণায় তা উল্লেখ করা হয়েছে ২৪৭টি। এজিএস পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা দুই প্রার্থী লামিয়া জান্নাত ও সাদিয়া জান্নাত সমান ১১৩ ভোট পান। তবে লামিয়ার একটি ভোট ‘টিক চিহ্ন’ সামান্য বাইরে যাওয়ায় বাতিল করা হয়।
লামিয়া অভিযোগ করে বলেন, শুধু সামান্য বাইরে যাওয়ায় আমার ভোটটা বাতিল হলো, অথচ অন্য হলে তা হয়নি। হাতে গণনার কারণে এই ভোট বাতিল হওয়ার কথা না। আমার সঙ্গে অন্যায় করা হয়েছে।
হলের রিটার্নিং অফিসার নাসরিন খাতুন অবশ্য দাবি করেছেন, কমিশনের নির্দেশনা অনুযায়ী নির্দিষ্ট বক্সের বাইরে গেলে ভোট বাতিল করতে হয়েছে।
এসব বিতর্ক নিয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক মনিরুজ্জামান বলেন, ভোট গণনায় ভুল হলে সেটি দেখবেন সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং কর্মকর্তা। আমাদের কাছে যে ফল এসেছে, সেটিই ঘোষণা করেছি। কেউ আপত্তি জানাতে চাইলে লিখিতভাবে জাকসু সভাপতি, অর্থাৎ উপাচার্যের কাছে অভিযোগ দিতে হবে।