• শনিবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৫, ১০:৩৩ অপরাহ্ন
শিরোনাম
ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটির বাস্তবায়ন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ ইডেন শিক্ষার্থীদের কান্দাহারে পাকিস্তানি বিমান হামলায় ২০ হাজার পরিবার বাস্তুচ্যুত: রিপোর্ট প্রধানমন্ত্রী পদ নিয়ে কোনো দ্বিধাদ্বন্দ্ব নেই: মির্জা ফখরুল শাহজালাল বিমানবন্দরে আগুনের সূত্রপাত যেখান থেকে শিক্ষিত জনগোষ্ঠীকে উৎপাদনমুখী করতে হবে : মঈন খান অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় তারেক রহমানের উদ্বেগ, পূর্ণাঙ্গ ও স্বচ্ছ তদন্তের আহ্বান কার্গো ভিলেজের আগুন নির্বাপণে সহযোগিতায় নেমেছে আনসার, আহত ২৫ শিক্ষকদের দাবি আদায়ে যদি যমুনা-সচিবালয় ঘেরাও করতে হয়, আমরাও থাকবো: রাশেদ খান রাজপথে না থাকায় সালাহউদ্দিন জুলাইযোদ্ধাদের চিনতে পারছেন না: নাহিদ ​শ্রীপুরে আল ইত্তেহাদ ইসলামী সংস্থার উদ্যোগে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান

বুড়িগঙ্গা পরিষ্কারে ‘নিনজা টেকনিক’ লাগবে: রিজওয়ানা হাসান

প্রভাত রিপোর্ট / ৫ বার
আপডেট : শনিবার, ১৮ অক্টোবর, ২০২৫

প্রভাত রিপোর্ট: বুড়িগঙ্গা দূষণমুক্ত করতে চীনের সহযোগিতা চেয়ে জাপানি কৌশলে কাজ করার কথা জানিয়েছেন পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। তিনি বলেন, ‘বুড়িগঙ্গা পরিষ্কার করতে হলে নিনজা টেকনিক লাগবে, এছাড়া হবে না।’ শনিবার (১৮ অক্টোবর) সকালে রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে বাংলাদেশে চীনের জ্বালানি বিনিয়োগের টেকসই ব্যবস্থা নিয়ে অংশীজনদের কর্মশালায় তিনি এ কথা জানান।
জানা যায়, ‘সাসটেইনেবল গভর্ন্যান্স অব চায়নাস এনার্জি ইনভেস্টমেন্ট ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক এ কর্মশালা যৌথভাবে আয়োজন করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজ (বিআইআইএসএস) ও যুক্তরাজ্েযর ইউনিভার্সিটি অব বাথ।
রিজওয়ানা হাসান বলেন, ‘চীনসহ বিশ্বের অন্যান্য দেশে বিনিয়োগের আগে পরিবেশগত সুরক্ষারদিক বিবেচনায় নিলেও বাংলাদেশে তা উল্টো। এর জন্য উন্নত দেশ থেকে শিক্ষা নেওয়া উচিত।’
পরিবেশ উপদেষ্টা যে ‘নিনজা টেকনিকে’র কথা বলেন, তা মধ্যযুগে জাপানে গুপ্তচর ও ভাড়াটে সৈন্যদের গোপন অভিযান বোঝাত। এখন কোনো কাজ সুদক্ষভাবে করতে এই শব্দবন্ধটি ব্যবহৃত হয়ে থাকে। ‘নিনজা টেকনিকের’ কথা বললেও বুড়িগঙ্গার ক্ষেত্রে কৌশলটি কী হবে, তার ব্যাখ্যা বক্তব্যে দেননি উপদেষ্টা।
পরিবেশবাদী আইনজীবী হিসেবে বুড়িগঙ্গা দূষণ নিয়ে একসময় নিজেও সোচ্চার ছিলেন রিজওয়ানা হাসান। ২০২০ সালের ২৮ নভেম্বর একটি জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত এক কলামে তিনি লিখেছিলেন, প্রশাসনিক ব্যর্থতার কারণে বুড়িগঙ্গার এমন অবস্থা হয়েছে। উপদেষ্টার দায়িত্ব নেওয়ার পরও যে ঠেকাতে পারেননি, তা উঠে আসে আজকের কর্মশালায় তার বক্তব্যে। তিনি বলেন, বছরের পর বছর ধরে এটি দূষণ করা হয়েছে, এখনো চলছে। পরিবেশ রক্ষায় অবকাঠামোগত উন্নয়ন থেকে সরে আসার পক্ষে মত দিয়ে রিজওয়ানা বলেন, ‘প্রতি নির্বাচনে প্রার্থীরা তাদের ইশতেহারে বলেন, কত রাস্তা বা সেতু করবেন। কিন্তু কেউ বলেন না, কত পার্ক গড়বেন বা কীভাবে কৃষিজমি বাঁচাবেন। সবাই মনে করে, বড় অবকাঠামোই উন্নয়ন। কিন্তু পরিষ্কার বাতাস, নদী, কৃষিজমিও উন্নয়নের অংশ।’ উন্নয়ন মানেই বড় রাস্তা, উঁচু সেতু আর বিশাল অবকাঠামো- এমন মানসিকতা থেকে বেরিয়ে আসার সময় এসেছে বলে মন্তব্য করেন পরিবেশ উপদেষ্টা। তিনি বলেন, কৃষিজমি, নির্মল বাতাস, সবুজ নদী ও মানুষের অংশগ্রহণ ছাড়া কোনো উন্নয়নই টেকসই হতে পারে না।
নিজেকে পদ্মা সেতুর একজন সুবিধাভোগী হিসেবে দেখিয়েই রিজওয়ানা হাসান বলেন, ‘পদ্মা সেতু হয়েছে, কিন্তু এর ফলে জাজিরা এলাকায় ভয়াবহ ভাঙন দেখা দিয়েছে। প্রকল্প বাস্তবায়নের আগে কেউ ভাবেনি, নদী তার নিজস্ব নিয়মে চলে। এখন সেখানে নদীভাঙন রোধে পর্যাপ্ত বিনিয়োগ করতে হবে। না হলে গ্রামের পর গ্রাম ভেসে যেতে পারে।’
বিনিয়োগের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিতে জোর দিয়ে তিনি বলেন, কোনো স্বৈর সরকারের আয়ু বাড়াতে মেকআপ প্রকল্পে বিনিয়োগ করা উচিত নয়। জনগণের অর্থে বিনিয়োগ মানেই জনগণের প্রতি দায়বদ্ধতা।
চীনের কাছ থেকে শুধু আর্থিক সহায়তা নয়, পরিবেশ পুনরুদ্ধারে প্রযুক্তিগত সহায়তাও প্রত্যাশা করেন পরিবেশ উপদেষ্টা। তিনি বলেন, চীন একসময় দূষণের জন্য আলোচিত ছিল। তারা আগে উন্নয়নে নজর দিয়েছে। পরে অবশ্য তারা সরে এসে পরিবেশে বিপুল বিনিয়োগ করেছে। এখন তারা পরিচ্ছন্ন বায়ু ও সবুজ শক্তির উদাহরণ। বেইজিংয়ের বায়ু নিয়ন্ত্রণ মডেল এখন অন্য শহরগুলোর জন্যও অনুকরণীয়। বাংলাদেশে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে তাই আগে পরিবেশ, পরে উন্নয়ন ধারণার চিন্তা করতে হবে।
বাংলাদেশ সরকার ২০৩০ সালের মধ্যে ৩০ শতাংশ বিদ্যুৎ নবায়নযোগ্য উৎস থেকে উৎপাদনের লক্ষ্য নিয়েছে। এতে চীনের অভিজ্ঞতা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে বলে মনে করেন পরিবেশ উপদেষ্টা। তিনি বলেন, সৌর ও বায়ুশক্তিতে যে অগ্রগতি করেছে চীন, তা থেকে অনেক কিছু শেখার আছে।
বাংলাদেশে চীনের বিনিয়োগ নিয়ে কর্মশালায় বলা হয়, বাংলাদেশে ২০১৮ সালে চীন সর্বোচ্চ বিনিয়োগ করে। সবচেয়ে বেশি বিনিয়োগ হয় বিদ্যুৎ খাতে। বাংলাদেশে মোট বিদেশি বিনিয়োগে যুক্তরাষ্ট্র শীর্ষে। কিন্তু বিদ্যুৎ খাতে বিদেশি বিনিয়োগে চীন সবার ওপরে। এই কর্মশালায় সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত মোট চারটি অধিবেশনে জ্বালানি ও বিনিয়োগ বিশেষজ্ঞরা অংশ নিয়েছেন।


আপনার মতামত লিখুন :
এই বিভাগের আরও