প্রভাত রিপোর্ট: গণভোটসহ নানা দাবিতে জামায়াতে ইসলামীসহ আট দলের যমুনা অভিমুখে স্মারকলিপি প্রদান এবং প্রেসক্লাবের সামনে বিভিন্ন সংগঠনের কর্মসূচির কারণে রাজধানীর পল্টন, প্রেসক্লাব, হাইকোর্ট, মৎস্য ভবন, কাকরাইলসহ আশপাশের এলাকায় তীব্র যানজট সৃষ্টি হয়েছে। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন সাধারণ মানুষ। বৃহস্পতিবার (৬ নভেম্বর) দুপুরে সরেজমিনে দেখা যায়, এসব এলাকায় দীর্ঘ যানজটের সারি ও স্থবির যানচলাচল। আজ সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস হওয়ায় কর্মব্যস্ততার চাপের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে সড়ক অবরোধের ভোগান্তি। ফলে রাজধানীর ব্যস্ত এলাকাগুলোতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা যানবাহন একই জায়গায় দাঁড়িয়ে আছে।
পল্টন থেকে শাহবাগ অভিমুখের রাস্তাজুড়ে গাড়ির ইঞ্জিন বন্ধ করে বসে থাকতে দেখা যায় চালকদের। অ্যাম্বুলেন্সের সাইরেন বাজলেও কেউ জায়গা দিতে পারছেন না। আশপাশের অলিগলিতেও আটকে পড়েছে অটোরিকশা ও সিএনজি। এতে অনেকে বাধ্য হয়ে পায়ে হেঁটে রওনা হয়েছেন নিজ নিজ গন্তব্যে।
‘শিকড়’ গণপরিবহনের যাত্রী আশরাফুল ইসলাম বলেন, ৫ আগস্টের পর ভেবেছিলাম দেশটা নিয়মশৃঙ্খলায় ফিরবে। কিন্তু এখন দেখছি প্রতিদিনই কোনো না কোনো দাবি নিয়ে রাস্তায় মিছিল, অবরোধ, মানববন্ধন। এতে আমাদের মতো সাধারণ মানুষের জীবন অতিষ্ঠ হয়ে গেছে।
পথচারী সিদ্দিকুর রহমান ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, সদরঘাট থেকে পল্টন আসতে সময় লেগেছে দুই ঘণ্টা। উপায় না পেয়ে হেঁটে কারওয়ান বাজারের দিকে রওনা হয়েছি। দাবি মানাতে হলে রাস্তায় নামতেই হবে-এটা কেমন নিয়ম!
ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী লুৎফর আজগর জানান, প্রতিদিন আন্দোলনের কারণে রাজধানীতে যানজট অসহনীয় হয়ে উঠছে। মানুষের সংখ্যা এমনিতেই বেশি, তার ওপর রাস্তায় জ্যাম। এখন তো মনে হয় ১৪৪ ধারা জারি করা উচিত, যাতে কেউ রাস্তায় কর্মসূচি দিতে না পারে।
ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থী সিনথিয়া বলেন, মৎস্য ভবন এলাকায় সড়ক বন্ধ থাকায় স্কুল থেকে প্রেসক্লাব আসতে এক ঘণ্টা লেগেছে। আজিমপুর বাসায় যেতে কতক্ষণ লাগবে জানি না। প্রতিদিনই রাস্তা বন্ধ করা এখন যেন ফ্যাশনে পরিণত হয়েছে। এর থেকে মুক্তি চাই।
হাইকোর্ট এলাকার দায়িত্বপ্রাপ্ত ট্রাফিক ইন্সপেক্টর (টিআই) সংগ্রাম দেবনাথ বলেন, রাজনৈতিক কর্মসূচির কারণে মৎস্য ভবন এলাকা বন্ধ রাখা হয়েছে। ডাইভারশন দিয়ে গাড়ি চালানো হচ্ছে, যাতে দ্রুত যান চলাচল স্বাভাবিক করা যায়। সপ্তাহের শেষ দিন হওয়ায় এমনিতেই চাপ বেশি থাকে, তার ওপর নানা কর্মসূচি থাকায় পুরো এলাকা প্রায় অচল।
ট্রাফিক বিভাগের কর্মকর্তারা জানান, দুপুর থেকে বিকেল পর্যন্ত প্রেসক্লাব ও পল্টন এলাকায় অন্তত পাঁচটি সংগঠনের কর্মসূচি থাকায় পুরো এলাকায় যানচলাচল নিয়ন্ত্রণে রাখতে হিমশিম খেতে হয়েছে। তারা আশা করছেন, বিকেল নাগাদ পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হতে পারে।