প্রভাত রিপোর্ট: সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সংগীত ও শারীরিক শিক্ষা বিষয়ক শিক্ষক পদ পুনর্বহালের দাবিতে উদীচীর গানের মিছিল পুলিশি বাধার মুখে পড়েছে। পরে প্রাথমিক শিক্ষায় সংগীত ও শারীরিক শিক্ষা বিষয়ক শিক্ষক নিয়োগ বাতিলের সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসতে সরকারকে সাত দিনের আল্টিমেটাম দেন তারা। সোমবার (১০ নভেম্বর) উদীচীর এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, রবিবার (৯ নভেম্বর) রাজধানীর তোপখানা রোডের উদীচীর কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে ‘উদীচী থেকে যমুনা’ শীর্ষক গানের মিছিলটি শুরু হয়। মিছিলটি সেগুনবাগিচার দুদক কার্যালয়ের সামনে প্রথম বাধার মুখে পড়ে। এরপর পুলিশের বাধা ডিঙিয়ে যমুনার দিকে যাওয়া শুরু করলে ব্যাটারিগলির মুখে দ্বিতীয় দফা বাধার সম্মুখীন হয়। এরপর সেখানেই শিল্পী-কর্মীরা অবস্থান নেয়, প্রতিবাদী সংগীত পরিবেশন করেন।
সেখান থেকে উদীচী নেতারা সরকারকে সাত দিনের আল্টিমেটাম দিয়ে বলেন, প্রাথমিক শিক্ষায় সংগীত ও শারীরিক শিক্ষা বিষয়ক শিক্ষক নিয়োগ বাতিলের সিদ্ধান্ত থেকে সরকার যদি সরে না আসে, সারা দেশের সংস্কৃতিকর্মীরা বৃহত্তর আন্দোলনে নামবে।
সরকারকে সময় বেঁধে দিতে গিয়ে উদীচীর সাধারণ সম্পাদক জামসেদ আনোয়ার তপন বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার সাম্প্রদায়িক, উগ্রবাদী ও নব্য ফ্যাসিস্ট শক্তির কাছে আত্মসমর্পণ করেছে। তাই তারা যা বলে তা শুনছে। অন্যদের কোনও কথা সরকার আমলে নিচ্ছে না। সরকার বইমেলা বন্ধ করার পাঁয়তারা করছে। নিরাপত্তার অজুহাতে ফেব্রুয়ারি মাসে বইমেলা অনুষ্ঠান বন্ধ করবে বলে ঘোষণা দিয়েছে। এখন প্রাথমিক শিক্ষায় সংগীত ও শারীরিক শিক্ষা বিষয়ক শিক্ষক পদে নিয়োগ বাতিল করেছে। এসব তৎপরতা স্পষ্ট বার্তা দিচ্ছে, সরকার কাদের কথায় চালিত হচ্ছে।
জামসেদ আনোয়ার তপন বলেন, সরকার জুলাই অভ্যুত্থানের সঙ্গে প্রতারণা করছে। জুলাইয়ের আকাঙ্ক্ষা থেকে সরে গিয়ে প্রতিক্রিয়াশীল শক্তির হাতে জুলাইয়ের সমস্ত অর্জনকে তুলে দেওয়া হচ্ছে। অবিলম্বে সরকারকে তাদের অবস্থান থেকে সরে আসার আহ্বান জানান জামসেদ আনোয়ার তপন।
সভাপতির বক্তব্যে উদীচীর ভারপ্রাপ্ত সভাপতি হাবিবুল আলম বলেন, গণবিরোধী নীতির কারণে জুলাইয়ে স্বৈরাচারী হাসিনাকে ক্ষমতা থেকে উৎখাত করেছে জনতা। সেই জনতার সঙ্গে বেইমানি করলে ইউনূস সরকারও ক্ষমা পাবেন না। অবিলম্বে সরকার তাদের অবস্থান থেকে না সরলে উদীচী সারা দেশের সংস্কৃতিপ্রেমী জনতাকে নিয়ে বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে তুলবে।
গানের মিছিল শুরুর আগে তোপখানা রোডের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সত্যেন সেন চত্বরে এক সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করেন প্রতিবাদী শিল্পীকর্মীরা। সেখানে বক্তব্য রাখেন চারণ সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের সাধারণ সম্পাদক জাকির হাসেন, সমাজ অনুশীলন কেন্দ্রের আহ্বায়ক কামাল হোসেন বাদল, উদীচীর সহসাধারণ সম্পাদক ইকবালুল হক খান, রহমান মুফিজ, সংগঠন বিষয়ক সম্পাদক আরিফ নূর প্রমুখ।
একই দাবিতে বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী, ঠাকুরগাঁও জেলা সংসদসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে উদীচী শিল্পী-কর্মীরা কর্মসূচি পালন করেন।