প্রভাত রিপোর্ট: ঢাকা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের লতিফ ছাত্রাবাসে ফাটল দেখা দেওয়ায় টানা চার দফা ভূমিকম্পের পর আতঙ্কে হল ছাড়তে শুরু করেছেন শিক্ষার্থীরা। শনিবার রাতে তারা চাদর–বালিশ নিয়ে তেজগাঁও শিল্প এলাকার সড়কে অবস্থান নেন এবং সেখানে রাত কাটান।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা জরুরি ভিত্তিতে নিরাপদ আবাসনের ব্যবস্থা অথবা নতুন হল নির্মাণের দাবিতে ক্লাস ও পরীক্ষা বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন। তাদের আন্দোলনের পর রাতে ইনস্টিটিউট কর্তৃপক্ষ লতিফ ছাত্রাবাসের পূর্ব–পশ্চিম শাখা, ড. কাজী মোতাহার হোসেন ছাত্রাবাস, জহির রায়হান ছাত্রাবাস ও ছাত্রীনিবাস খালি করার নির্দেশ দেয়। পাশাপাশি পরবর্তী ঘোষণা না দেওয়া পর্যন্ত মিড টার্ম পরীক্ষা ও ক্লাস স্থগিত করা হয়।
গত জুনে শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর লতিফ হলের একাংশ ‘ঝুঁকিপূর্ণ’ ঘোষণা করে সংস্কারের পরামর্শ দিয়েছিল; তবে তা এখনও বাস্তবায়িত হয়নি। শুক্রবারের শক্তিশালী ভূমিকম্প এবং শনিবার আরও তিন দফা কম্পন শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তাহীনতা বাড়িয়ে দেয়, ফলে তারা হলে না থেকে সড়কেই অবস্থান নেন।
লতিফ ছাত্রাবাসের আবাসিক শিক্ষার্থী ও কারিগরি ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য রমজান আলী জানান, ৭০–৮০ বছর বয়সী ভবনটিতে আগে থেকেই ফাটল ছিল। সাম্প্রতিক ভূমিকম্পে এসব ফাটল আরও বড় হয়েছে। ছয় মাস আগে হলের চতুর্থ তলা ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করা হলেও কর্তৃপক্ষ কোনো ব্যবস্থা নেয়নি বলেও তিনি অভিযোগ করেন।
শনিবার দুপুরে শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা হলটি পরিদর্শন করেন। অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী এস এম সাফিন হাসান জানান, ভবনটির বিভিন্ন কলাম, বিম ও ছাদের অংশে ফাটলসহ প্লাস্টার ও কংক্রিট খসে পড়েছে, এমনকি রডও বের হয়ে এসেছে। জুন মাসেও একই তলা ঝুঁকিপূর্ণ বলে চিহ্নিত হয়েছিল।
এর আগে শক্তিশালী ভূমিকম্পের পর শুক্রবার রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হাজী মুহম্মদ মুহসিন হলের কিছু শিক্ষার্থীও নতুন ভবন নির্মাণের দাবিতে কর্মচারীদের একটি ভবন দখল করে রাত কাটান।
ঢাকা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ সাহেলা পারভীন বর্তমানে জাপানে অবস্থান করছেন বলে জানা গেছে। শনিবার রাতে ফোন ও হোয়াটসঅ্যাপে যোগাযোগ করেও তার কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।