• শুক্রবার, ০৭ নভেম্বর ২০২৫, ০৪:৩১ অপরাহ্ন
শিরোনাম
অনশনরত তারেকের পাশে রিজভী, বিএনপির সংহতি ঘোষণা রাণীনগরে রেলগেটের যানজট নিরসনের দাবীতে আমজনতার মানববন্ধন বাগেরহাটের কচুয়ায় তারেক রহমানের ৩১ দফা লিফলেট বিতরণ শীতে অগ্নিদুর্ঘটনা রোধে জনসচেতনতা কার্যক্রম করছে ফায়ার সার্ভিস সংবিধান সংস্কার জনগণের মতামতের ভিত্তিতে পরিচালিত হওয়া উচিত : ড. কামাল হোসেন বিশ্বের প্রথম ট্রিলিয়ন ডলারের মালিক হচ্ছেন ইলন মাস্ক? রাজনৈতিক কর্মসূচিতে তীব্র যানজট, ভোগান্তিতে নগরবাসী বিটরুটের ১০ উপকারিতা, যেভাবে বিটরুট খাওয়া কিডনির জন্য নিরাপদ সাফারি পার্ক থেকে লেমুর চুরি, আন্তর্জাতিক পাচারচক্রের সদস্য গ্রেফতার ভোটে ধর্মের ব্যবহার না করাসহ সাত দাবি হিন্দু মহাজোটের

প্রবাসী আয়ের ইতিবাচক প্রভাব, স্থিতিশীল হচ্ছে বৈদেশিক মুদ্রাবাজার

প্রভাত রিপোর্ট / ১১৮ বার
আপডেট : শনিবার, ২৯ মার্চ, ২০২৫

প্রভাত রিপোর্ট

ঈদুল ফিতরকে সামনে রেখে প্রবাসী আয় ও রফতানি প্রবৃদ্ধির ফলে দেশের বৈদেশিক মুদ্রাবাজারে স্থিতিশীলতা ফিরে এসেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, গত ২০ মার্চ পর্যন্ত ব্যাংকগুলোর নেট ওপেন পজিশন (এনওপি) বেড়ে ৫৫০ মিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে, যা মাসের শুরুতে ছিল মাত্র ১৫০ মিলিয়ন ডলার। বিশ্লেষকরা বলছেন, রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কঠোর মনিটরিংয়ের ফলে হুন্ডির প্রবাহ কমেছে, বৈধ পথে রেমিট্যান্স পাঠানোর প্রবণতা বেড়েছে। এতে ব্যাংকগুলোর বৈদেশিক মুদ্রার তারল্যও বেড়েছে, যা বাজারকে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে সাহায্য করেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুসারে, চলতি মার্চ মাসের প্রথম ২৬ দিনে প্রবাসীরা ব্যাংকিং চ্যানেলে দেশে পাঠিয়েছেন ২৯৪ কোটি মার্কিন ডলার, যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৮২ দশমিক ৪ শতাংশ বেশি। ফেব্রুয়ারিতে রেমিট্যান্স এসেছিল ২৫২ কোটি ডলার। সংশ্লিষ্টরা আশা করছেন, মাসের শেষ নাগাদ এই অঙ্ক ৩০০ কোটি ডলার ছাড়িয়ে যাবে, যা হবে দেশের ইতিহাসে এক মাসে সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স প্রবাহ।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ পরিসংখ্যান বলছে, চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জুলাই থেকে ২৬ মার্চ পর্যন্ত মোট রেমিট্যান্স এসেছে ২,১৩৪ কোটি ডলার, যা আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ২৮ দশমিক ৪ শতাংশ বেশি।
এ প্রসঙ্গে যমুনা ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী মির্জা ইলিয়াছ উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘ডলার সরবরাহ বেশি থাকায় মুদ্রাবাজারে স্থিতিশীলতা এসেছে। প্রবাসীরা বৈধ চ্যানেলে টাকা পাঠানোর প্রতি বেশি আগ্রহ দেখাচ্ছেন, যা অর্থনীতির জন্য ইতিবাচক।’ বিশ্লেষকরা বলছেন, প্রবাসী আয় দেশের অর্থনীতির অন্যতম প্রধান চালিকাশক্তি। এটি বৈদেশিক মুদ্রার সরবরাহ বৃদ্ধির পাশাপাশি মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ, ব্যাংকিং খাতের স্থিতিশীলতা এবং সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতা বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা আশা করছেন, আগামী মাসগুলোতেও রেমিট্যান্সের এই ইতিবাচক ধারা অব্যাহত থাকবে, যা সামগ্রিক অর্থনীতিতে সুদূরপ্রসারী প্রভাব ফেলবে। রফতানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সর্বশেষ প্রতিবেদনে দেখা গেছে, চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে রফতানি আয় ২ দশমিক ৭৭ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩ দশমিক ৯৭ বিলিয়ন ডলারে। ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম আট মাসে (জুলাই-ফেব্রুয়ারি) রফতানি আয় ১০ দশমিক ৫৩ শতাংশ বেড়ে ৩,২৯৪ কোটি ডলারে পৌঁছেছে।
ইপিবির তথ্য অনুযায়ী, ফেব্রুয়ারিতে তৈরি পোশাক, কৃষি প্রক্রিয়াজাত পণ্য, প্লাস্টিক পণ্য, হিমায়িত খাদ্য এবং চামড়া ও চামড়াজাত পণ্যের রফতানি বেড়েছে। তবে হোম টেক্সটাইল, প্রকৌশল পণ্য এবং পাট ও পাটজাত পণ্যের রফতানি কিছুটা কমেছে।
প্রবাসী আয় ও রফতানি প্রবাহ বাড়ায় দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভও ঊর্ধ্বমুখী। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২৭ মার্চ পর্যন্ত মোট বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ দাঁড়িয়েছে ২৫ দশমিক ৪৪ বিলিয়ন ডলার। তবে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) হিসাব অনুসারে প্রকৃত রিজার্ভ ২০ দশমিক ২৯ বিলিয়ন ডলার।
অর্থনীতিবিদদের মতে, রেমিট্যান্স ও রফতানি আয়ের ইতিবাচক প্রবাহ বজায় থাকলে রিজার্ভ আরও শক্তিশালী হবে, যা আমদানি ব্যয় নির্বাহ এবং বিনিয়োগ বৃদ্ধিতে সহায়ক ভূমিকা রাখবে।
ব্যাংকারদের মতে, রেমিট্যান্স প্রবাহ বাড়ার ফলে ব্যাংকগুলোর ডলার সংকট অনেকটাই কমেছে। আগের মতো রেমিট্যান্স ডলার কেনার প্রতিযোগিতা না থাকায় বাজার স্থিতিশীল অবস্থায় ফিরেছে। বর্তমানে আন্তঃব্যাংক বাজারে প্রতি ডলারের বিনিময় হার নির্ধারিত হয়েছে ১২২ টাকা, যা আমদানিকারকদের জন্যও স্বস্তির বার্তা দিচ্ছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা জানান, ঈদ সামনে রেখে নগদ টাকার চাহিদা থাকলেও ব্যাংকগুলোতে তারল্যের ঘাটতি নেই। ২৫ মার্চ স্বল্পমেয়াদি আন্তঃব্যাংক ঋণের সুদহার ১০ শতাংশ থেকে কমে ৯ দশমিক ৯৫ শতাংশ হয়েছে, যা বাজারে পর্যাপ্ত তারল্যের ইঙ্গিত দেয়।


আপনার মতামত লিখুন :
এই বিভাগের আরও