প্রভাত সংবাদদাতা, সিলেট : ফিলিস্তিনের ওপর ইসরায়েলি বাহিনীর বর্বর হামলার প্রতিবাদে সোমবার (৭ এপ্রিল) উত্তাল পরিস্থিতি বিরাজ করেছে সিলেটে। এ সময় বিক্ষুব্ধ জনতার মিছিল থেকে কেএফসি, ইউনিমার্ট, বাটা, ডমিনোজ পিৎজাসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের শোরুমে ব্যাপক ভাঙচুর চালানো হয়েছে। একইসঙ্গে বাটার শোরুমে লুটপাট করা হয়। ঘটনার পরপরই পুলিশ সোমবার রাতভর অভিযান চালিয়ে লুটপাটের দায়ে ১৪ জনকে আটক করেছে। এদিকে লুটাপাটকারিরা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে জুতা বিক্রির বিজ্ঞাপন দেওয়ায় পুলিশ তাদের শনাক্ত করে আটক করে।
মঙ্গলবার (৮ এপ্রিল) সকালে সিলেট কোতোয়ালি থানার ওসি জিয়াউল হক এসব তথ্য জানিয়েছেন। তিনি বলেন, আটকদের মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে পাঠানো হবে। তিনি আরও বলেন, জুতা লুটের পর বিভিন্ন ফেসবুক আইডি ও পেজে এসব জুতা বিক্রির বিজ্ঞাপনও দেওয়া হয়। অভিযান চালিয়ে এসব জুতাও উদ্ধার করা হয়েছে। আটকরা হলেন- রাজন, ইমন (১৯), রাকিব (১৯), আব্দুল মোতালেব (৩৫), মিজান আহমদ (৩০), সাব্বির আহমদ (১৯), জুনাইদ আহমদ (১৯), রবিন মিয়া (২০), সৈয়দ আলআমিন তুষার (২৯), মোস্তাকিন আহমদ তুহিন (১৯), দেলোয়ার হোসেন (৩০), রিয়াদ (২৪), তুহিন (২৪) ও আল নাফিউ (১৯)।
ফিলিস্তিনে ইসরায়েলি হত্যাযজ্ঞের প্রতিবাদে সোমবার সারা দেশের ন্যায় সিলেটেও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করা হয়। তবে এ সুযোগকে কাজে লাগিয়ে একদল দুষ্কৃতিকারী সিলেট মহানগরের মিরবক্সটুলায় অবস্থিত কেএফসি রেস্টুরেন্টে হামলা করে ভাঙচুর ও লুটপাট চালায়। এ সময় রেস্টুরেন্টের ভেতরে থাকা বিভিন্ন কোমল পানীয় নষ্ট করা হয়। একই সময়ে নগরীর দরগাহ গেট, পূর্ব জিন্দাবাজার, বন্দরবাজার এলাকায় জুতার কোম্পানি বাটার শোরুমে ভাঙচুর ও লুটপাট চালানো। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করলেও পারেনি। পরে সেনাবাহিনী গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। সোমবার রাতে পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বাহারুল আলম সিলেটসহ দেশের বিভিন্ন শহরে দোকান ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ভাঙচুরের জন্য দায়ী ব্যক্তিদের দ্রুত গ্রেফতার করতে পুলিশ কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেন।
নির্দেশনায় তিনি বলেন, ‘আমাদের কাছে হামলাকারীদের ভিডিও ফুটেজ আছে। তাদের চিহ্নিত করা হচ্ছে, অবিলম্বে তাদের গ্রেফতার করা হবে। বাংলাদেশ পুলিশ বর্তমানে এ নিয়ে কাজ করছে।’
আইজিপি আরও বলেন, ‘সরকার কোনও ন্যায়সঙ্গত বিক্ষোভে বাধা দেয় না। তবে প্রতিবাদ কর্মসূচির আড়ালে কোনও অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড সহ্য করা হবে না।’
ওসি বলেন, গত সোমবার ইসরায়েলবিরোধী বিক্ষোভের সুযোগে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাট করে একদল দুষ্কৃতিকারীরা। এসময় তারা বাটা শোরুমের বেশ কিছু জুতা লুট করে নিয়ে যান। পরে বিভিন্ন ফেসবুক আইডি ও পেইজ থেকে এসব বিক্রির বিজ্ঞাপনও দেয়া হয়। এসব পোস্ট ও তথ্যের সূত্র ধরে রাতভর অভিযান চালিয়ে জুতাসহ তাদের আটক করা হয়েছে। আটককৃতদের বিরুদ্ধে দেশের প্রচলিত আইনে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
প্রসঙ্গত, ফিলিস্তিনে ইসরায়েলি হামলার প্রতিবাদে সোমবার সারাদেশের ন্যায় সিলেটেও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করা হয়। এই বিক্ষোভের সুযোগকে কাজে লাগিয়ে সিলেট মহানগরের দরগাহ গেট, চৌহাট্টা, মিরবক্সটুলা, জিন্দাবাজারসহ বেশ কিছু এলাকায় বাটার শোরুমে ভাঙচুর ও লুটপাট চালানো হয়। এছাড়া কেএফসি, ডোমিনো পিজ্জাসহ আরও কিছু প্রতিষ্ঠানে হামলা করা হয়। এই ঘটনার পর সোমবার রাতে পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বাহারুল আলম সিলেটসহ দেশের বিভিন্ন শহরে দোকান ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ভাঙচুরের জন্য দায়ী ব্যক্তিদের দ্রুত গ্রেপ্তার করতে পুলিশ কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেন।