প্রভাত সংবাদদাতা, খাগড়াছড়ি
সরকার পরিবর্তন, প্রাকৃতিক ও মানবসৃষ্ট দুর্যোগ-দুর্ঘটনাসহ নানা কারণে স্থবির হয়ে পড়ছে খাগড়াছড়ির পর্যটন। লোকসানের মুখে পড়েছে পর্যটনসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা। ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে প্রত্যাশিত পদক্ষেপ নেয়ার দাবি সংশ্লিষ্টদের।
খাগড়াছড়ি গাইরিং হোটেলের স্বত্বাধিকারী এস অনন্ত বিকাশ ত্রিপুরা বলেন, গত বছর এই সময় প্রচুর পর্যটক পেলেও চলতি বছরে পর্যটক নেই বললেই চলে। সরকার পরিবর্তন, আঞ্চলিক সংগঠনগুলোর মাঝে সংঘাত-সংঘর্ষ, সাজেকের অগ্নিকাণ্ড, অপহরণ, গাড়ি আটকে চালককে মারধরসহ নানা প্রভাব পড়েছে পর্যটন সেক্টরে। পর্যটক নেই বললেই চলে উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, এর ফলে পর্যটকসংশ্লিষ্টরা ক্ষতির মুখে পড়েছেন। সরকার মনোযোগী হলে এই সেক্টরের প্রত্যেকে লাভবান হবে।
খাগড়াছড়ি পরিবহন মালিক সমিতির সভাপতি আসলাম কালু বলেন, পর্যটক আগমন কমে যাওয়ায় গাড়ির সংখ্যা কমাতে হয়েছে। অনেক গাড়ি, ড্রাইভার ও শ্রমিকদের বসে থাকতে গিয়ে অলস সময় কাটাতে হচ্ছে এবং পরিবহনসংশ্লিষ্টরা লোকসানে পড়েছেন।
খাগড়াছড়ি সিস্টেম হোটেলের মালিক মং মারমা বলেন, আগের তুলনায় অনেক কম ব্যবসা হচ্ছে। আগে প্রতিদিন গড়ে দেড় থেকে দুই হাজার পর্যটককে গ্রাহক হিসেবে পেলেও বর্তমানে তা তিন-চার শতের মধ্যে ঠেকেছে। এখনকার গ্রাহকদের বেশিরভাগ স্থানীয় বলে উল্লেখ করেন মং মারমা।
খাগড়াছড়ির পিকআপ গাড়ির ড্রাইভার সুমন চাকমা বলেন, গত এক সপ্তাহে গাড়ি ভাড়া হচ্ছে না বললেই চলে। কারণ ট্যুরিস্ট নাই। আগে প্রত্যেক সপ্তাহে দু-তিন দিন ভাড়া পেতাম। এখন সপ্তাহে একদিন গাড়ি চালানোও কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে।
পরিবার-পরিজন নিয়ে কষ্টে আছে উল্লেখ করে, সরকার পতনের পর হামলা-মামলা, আঞ্চলিক সংগঠনগুলোর আন্তকোন্দলের কারণে নিরাপত্তা বিঘ্নিত হচ্ছে।
খাগড়াছড়ির জেলা প্রশাসক এ বি এম ইফতেখারুল ইসলাম খন্দকার বলেন, দু-একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনায় কিছুটা স্থবির পর্যটন সেক্টর। প্রশাসন ও নিরাপত্তা বাহিনী এই বিষয়ে সজাগ আছে। সকল গুরুত্বপূর্ণ পর্যটন স্পটে নিরাপত্তাসহ পর্যটকদের সকল সুবিধা নিশ্চিত করা হচ্ছে। পর্যটকদের ভয়ের কিছু নেই। তিনি নির্ভয়ে পর্যটকদের খাগড়াছড়ি ভ্রমণ করার অনুরোধ জানান।
খাগড়াছড়ির পুলিশ সুপার (এসপি) মো. জুয়েল আরেফিন বলেন, বর্তমানে পর্যটক কম আসলেও নিরাপত্তাব্যবস্থা ভালো। নানা কারণের পাশাপাশি গরম ও বর্ষাকালে এমনিতেই পর্যটক কম থাকে। তারপরেও কোনও পর্যটকের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হলে বা আশঙ্কা থাকলে আইনশৃঙ্খলাসংক্রান্ত যেকোনও তথ্য পুলিশকে জানানোর অনুরোধ জানান তিনি।