বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
Proval Logo

ফের উত্তপ্ত করার চেষ্টা

প্রকাশিত - ০২ আগস্ট, ২০২৪   ০৯:১২ পিএম
webnews24

প্রভাত রিপোর্ট :সরকারি চাকুরিতে কোটা সংস্কারের ইস্যুকে কেন্দ্র করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গত ১৬ থেকে ২১ জুলাই সংঘাত-সংঘর্ষে হতাহতদের পরিবার ও স্বজনের আবেগকে কাজে লাগিয়ে ফের পরিস্থিতিকে উত্তপ্ত করার চেষ্টা চালানো হচ্ছে বিভিন্ন মহল থেকে। আর এই জন্য বিএনপি এখন সরাসরি নিজেরা রাজপথে আন্দোলনের কোনও কর্মসূচি দিচ্ছে না। জামায়াতের ক্যাডাররাও এখন কর্মসূচি থেকে নিজেদের বিরত রেখেছে। তবে বিএনপি এবং জামায়াতের যারা পেশাদার সুশীল, বুদ্ধিজীবী, শিক্ষক রয়েছে, তারা এখন মাঠে নেমেছে। তারা শিক্ষার্থীদের পক্ষে বিভিন্ন ধরনের কথাবার্তা দিয়ে এটিকে একটি বুদ্ধিবৃত্তিক আন্দোলন হিসেবে উপস্থাপন করার চেষ্টা করছে। তাদের মূল লক্ষ্য হল শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদেরকে তাতিয়ে দেয়া যেন তারা আন্দোলনের মাঠ গরম রাখে। এরকম একটি উত্তপ্ত পরিস্থিতি সৃষ্টি হওয়ার পরপরই বিএনপি এবং জামায়াত মাঠে নামবে এবং তারা সরকার পতনের চূড়ান্ত আন্দোলনের যাবে। অর্থাৎ শুরু থেকেই যে অভিযোগটি উঠেছিল যে, বিএনপি এবং জামায়াত শিক্ষার্থীদের ওপর ভর করে আন্দোলন পতনের আন্দোলন করতে চায়, এখন সেটি দৃশ্যমান হচ্ছে।
গত কয়েকদিন ধরে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনকে উস্কে দেয়ার জন্য যারা মাঠে নেমেছেন, তাদের মধ্যে একেবারে বিবেকের তাড়নায় এমন মানুষের সংখ্যা আসলে খুবই কম। প্রত্যেকে আসছেন নানা রকম উদ্দেশ্য এবং স্বার্থসিদ্ধির জন্য। দেখা গেছে, ১/১১-এর সময় যারা ষড়যন্ত্রকারী ছিলেন, যারা গণতন্ত্রকে বিদায় দিতে চেয়েছিলেন তারা সবাই মাঠে নেমেছেন। ড. বদিউল আলম মজুমদারের নেতৃত্বে সুশাসনের জন্য নাগরিক হঠাৎ করে এতদিন পর সংবাদ সম্মেলন করেছেন এবং সরকারের পদত্যাগ দাবি করে নতুন নির্বাচন চেয়েছেন। অন্যদিকে, রাজধানীর মিন্টু রোডের সামনে এক এগারোর কুশীলবদের অন্যতম দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য, টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখার আহমেদ, রাজাকারের কন্যা পরিবেশবিদ সৈয়দা রিজওয়ানা হাসানসহ বেশ কয়েকজন সুশীলরা উপস্থিত ছিলেন। এই সুশীলদের একটাই পরিচয় তারা অনির্বাচিত সরকারকে ক্ষমতায় আনতে চান। তারা বিরাজনীতিকরণের প্রক্রিয়া বাস্তবায়ন করতে চান।
এবার বিএনপির দলীয় শিক্ষকদেরকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে, তারা যেন যার যার অবস্থান থেকে সরকারের বিরুদ্ধে উত্তেজক বক্তব্য, বিবৃতি এবং তৎপরতা চালায়। যাতে শিক্ষার্থীরা আরও ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে। লক্ষণীয় ব্যাপার হল, সুশীল সমাজ বুদ্ধিজীবীদের মধ্যে জামায়াতপন্থি এবং বিএনপিপন্থিরা একাকার হয়ে গেছে এবং তারা যৌথভাবে এখন কাজ করছে। সাম্প্রতিক জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের প্রধান যিনি বিএনপিপন্থি শিক্ষক ফোরামের নেতা, তিনি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি পোস্ট দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে। এটিকে আবার তারা বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দিচ্ছে। রাজাকারের কন্যা পরিবেশবিদ সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান মাঠে নেমেছেন জামায়াতের পক্ষ থেকে। জামায়াতের পক্ষ থেকে ব্যারিস্টার মতিনকেও মাঠে দেখা যাচ্ছে, যিনি পারিবারিক সূত্রে জামায়াতের ঐতিহ্য লালন করে। যার রক্তে স্বাধীনতা বিরোধিতা আছে। এ রকম সবর্ত্রই বিএনপি-জামায়াত, স্বাধীনতাবিরোধী এবং এক এগারো সরকার আনার জন্য সবাই একত্রিত হয়েছে।
বিএনপির এখন লক্ষ্য একটাই। আর তা হলো সরকার পতন। বিএনপির নেতারা এখন প্রকাশ্যে বলছেন যে, আওয়ামী লীগ হটানোর পর যারাই আসুক না কেন তাদের কোনও আপত্তি নাই। তাদের নিজেদের ক্ষমতায় আসার সক্ষমতা নাই। তাই অনির্বাচিত সরকার হোক বা যারাই হোক, যারাই ক্ষমতা গ্রহণ করে তাতে বিএনপি খুশি। আর এ কারণেই বিএনপির বুদ্ধিজীবী সুশীলরা এখন এক এগারোর কুশীলবদের সাথে হাত মিলিয়েছে। অর্থাৎ বিএনপি এখন নিজেরা মাঠে না নেমে তাদের শেপাজীবীদেরকে মাঠে নামিয়েছে সরকারের ওপর মনস্তাত্ত্বিক চাপ বাড়ানোর জন্য।

প্রভাত/টুর
 

ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে সঙ্গে থাকুন
ওয়েব নিউজ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

আরও পড়ুন