প্রভাত রিপোর্ট : কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে সারা দেশে নিহতের ঘটনা নিরপেক্ষ, স্বচ্ছ ও আন্তর্জাতিক মানে তদন্তের জন্য জাতিসংঘকে চিঠি দিয়েছে বিএনপি। দলের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী গতকাল মঙ্গলবার বাংলাদেশে নিযুক্ত জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারীর হাতে এ সংক্রান্ত আবেদনটি তুলে দেওয়া হয়েছে। মঙ্গলবার বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ এই চিঠি পৌঁছে দেন। এর আগে গত শনিবার (১০ আগস্ট) সন্ধ্যায় গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে দলের পক্ষ থেকে জাতিসংঘের কাছে চিঠি দেওয়ার কথা জানিয়েছিলেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
চিঠি দিয়ে বের হওয়ার পর আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, দলের সিদ্ধান্ত মোতাবেক জাতিসংঘের কাছে একটি আবেদনৃ একটি অবৈধ সরকারের অধীনে দেশে যে হত্যাযজ্ঞ হয়েছে তার নিরপেক্ষ, আন্তর্জাতিক মানের ও স্বচ্ছ তদন্তের মাধ্যমে যে ঘটনা ঘটেছে, তা উদঘাটনের জন্য জাতিসংঘকে অনুরোধ করেছি।
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে যেসব হত্যাযজ্ঞ হয়েছে, নাগরিকদের যে হত্যা করা হয়েছে, তা উন্মোচনের প্রয়োজন আছে। জাতিকে কলঙ্কমুক্ত করতে হলে দেশের মধ্যে ও দেশের বাইরে যে ঘটনার মধ্য দিয়ে হত্যাযজ্ঞ করেছে সরকারের পৃষ্ঠপোষকতায়, তা জাতির সামনে, বিশ্বের সামনে তুলে ধরতে হবে। আমরা জাতিকে কলঙ্কমুক্ত করার জন্য এ ধরনের একটা পরিচ্ছন্ন, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য তদন্তের কথা বলেছি। জাতিসংঘকে অনুরোধ করেছি। আমরাও বর্তমান সরকারকেও বলেছি তারা যেন জাতিসংঘকে এ ব্যাপারে বলে। জাতির এই ক্রান্তিলগ্নে এরকম একটি তদন্ত সবার আকাঙ্ক্ষা, জাতির আকাঙ্ক্ষা বলে আমরা মনে করি। সেটাই আমরা জাতিসংঘকে অনুরোধ করেছি।
এই তদন্তের বিষয়বস্তু নিয়ে প্রশ্ন করা হলে আমির খসরু বলেন, এখানে গণহত্যার ওপরেই তদন্ত হবে। এই যে গণহত্যা হয়েছে একটি সরকারের সরাসরি পৃষ্ঠপোষকতায়, এজন্য এটার তদন্ত আন্তর্জাতিক মানের, নিরপেক্ষ ও স্বচ্ছ একটি তদন্তের প্রয়োজন আছে। তার মানে এই নয় যে দেশের মধ্যে যে আইনি ব্যবস্থা, সেটার সঙ্গে এটা (তদন্ত) সাংঘর্ষিক কিছু। কারণ আমাদের আগে আইন বলে তো কিছু ছিল না দেশে। এখন সেটা আমরা ক্রমান্বয়ে ফিরে পাচ্ছি। দেশের অভ্যন্তরে যেটা হবে সেটা তো অন্য বিষয়। যে গণহত্যার ঘটনা ঘটেছে, তা সারা বিশ্বের কাছে ঘৃণীত হয়েছে এবং সারা বিশ্ব এটার প্রতিবাদ করেছে। আমরা মনে করি, আন্তর্জাতিক মানের একটি স্বচ্ছ-নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে জাতিকে কলঙ্কমুক্ত করতে হবে। তিনি বলেন, আমরা যদি এসব তুলে ধরতে না পারি, ভবিষ্যতেও স্বৈরাচার এবং এরকম ফ্যাসিস্ট সরকার আসবেৃ বাংলাদেশের মানুষকে গুম-খুন হত্যা করে ক্ষমতায় থাকার চেষ্টা করবে। আমরা চিরতরে এটার অবসান চাই। সাবেক এই মন্ত্রীর ভাষ্য, যাতে আগামীতে নিজের দেশের নাগরিকদের হত্যা করে জোর করে ক্ষমতায় গিয়ে থাকার যে আকাঙ্ক্ষা, তা কারও মধ্যে না জাগে। আমরা তাই এ ধরনের ঘটনার পরিচ্ছন্ন, নিরপেক্ষ, গ্রহণযোগ্য তদন্তের জন্য জাতিসংঘকে অনুরোধ করেছি। তিনি জানান, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকেও তারা অনুরোধ করেছেন যেন জাতিসংঘকে এ বিষয়টি বলে।