শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
Proval Logo

ট্রাম্প বললেন, যুক্তরাষ্ট্রের শিক্ষা  বিভাগ বিলুপ্ত করা উচিত

প্রকাশিত - ১৩ আগস্ট, ২০২৪   ০৮:৫২ পিএম
webnews24

প্রভাত ডেস্ক : যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় শিক্ষা বিভাগকে বিলুপ্ত করার ইচ্ছার কথা জানিয়েছেন দেশটির সাবেক প্রেসিডেন্ট ও আগামী প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রিপাবলিকান পার্টির প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প। গতকাল মঙ্গলবার ধনকুবের ইলন মাস্ককে দেওয়া বহুপ্রতীক্ষিত এক সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প ওই আগ্রহের কথা জানান। নির্ধারিত সময়ের আধা ঘণ্টার বেশি সময় পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সাক্ষাৎকারটির সরাসরি প্রচার শুরু হয়। বলা হচ্ছে, সাইবার হামলার জেরে এ বিলম্ব ঘটে। যুক্তরাষ্ট্রের শিক্ষার্থীরা বিশ্বজুড়ে তাদের সমবয়সী শিক্ষার্থীদের তুলনায় পিছিয়ে পড়ছে। শিক্ষা বিভাগকে বিলুপ্ত করা হলে অনেক সুবিধা পাওয়া যাবে। এতে শিক্ষা খাতে খরচ অর্ধেক কমবে।
সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প তাঁর ডেমোক্র্যাট প্রতিদ্বন্দ্বী ও বর্তমান ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিসকেও আক্রমণ করে বক্তব্য দিয়েছেন। বক্তব্য দেন আরও কিছু বিষয়ে। মার্কিন ফেডারেল শিক্ষা বিভাগ বিলুপ্ত করা উচিত মন্তব্য করে ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, ‘আমি শিক্ষা বিভাগকে বিলুপ্ত করতে চাই। চাই, শিক্ষাকে অঙ্গরাজ্যগুলোতে ফিরিয়ে দিতে।’
ট্রাম্প বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের শিক্ষার্থীরা বিশ্বজুড়ে তাদের সমবয়সী শিক্ষার্থীদের তুলনায় পিছিয়ে পড়ছে।’ শিক্ষা বিভাগকে বিলুপ্ত করা হলে ‘অনেক সুবিধা পাওয়া যাবে’ উল্লেখ করে তিনি দাবি করেন, এতে শিক্ষা খাতে খরচ অর্ধেক কমবে।
কমলা হ্যারিসকে আক্রমণ: ট্রাম্প দাবি করেন, তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী কমলা হ্যারিসের রানিং মেট মিনেসোটার গভর্নর টিম ওয়ালজ এমন একটি আইনে স্বাক্ষর করেছেন, যেখানে পাবলিক বিদ্যালয়গুলোতে ছেলেদের শৌচাগারে স্যানিটারি ন্যাপকিন রাখার বিষয়ে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। মিনেসোটা অঙ্গরাজ্যের ওই আইন গত বছর থেকে কার্যকর হয়েছে। তবে এ আইনে ছেলেদের, না মেয়েদের শৌচাগারে স্যানিটারি ন্যাপকিন রাখতে হবে, সেটির উল্লেখ নেই। শুধু বলা হয়েছে, বিদ্যালয়ে যেসব শিক্ষার্থীর প্রয়োজন হবে, তাদের জন্য এটি সহজলভ্য করতে হবে। রিপাবলিকান পার্টি এ আইনের কড়া সমালোচনা করেছে এবং ওয়ালজকে ‘ট্যাম্পন টিম’ আখ্যা দিয়েছে।
ইতিমধ্যে ওয়ালজ এ ডাকনামকে ইতিবাচকভাবেই নিয়েছেন। বলেছেন, মেয়েদের মাসিকের পণ্য সহজলভ্য করার কাজ করতে পেরে তিনি গর্বিত।
বেশি সাক্ষাৎকার না দেয়ায় সমালোচনা: কমলা হ্যারিস আরও বেশি ও দীর্ঘ সাক্ষাৎকার না দেওয়ায় তাঁর সমালোচনা করেছেন ট্রাম্প। তিনি বলেছেন, ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রার্থী হিসেবে নিশ্চিত হওয়ার পর থেকে কমলা কোনো দীর্ঘ সাক্ষাৎকার দিচ্ছেন না; যেমনটা এখন তিনি (ট্রাম্প) করছেন।
ট্রাম্প বলেন, ‘এমন অনুষ্ঠানে অংশ নেয়াটা মজার বিষয়।’ প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের দিকে ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, একজন প্রেসিডেন্ট প্রার্থী প্রশ্নের জবাব দিতে পারছেন না বা কোনো সাক্ষাৎকারে অংশ নিতে ভয় পাচ্ছেন, এটা চিন্তা করা কষ্টের।’
সাক্ষাৎকারে বিশ্ববাসীর জন্য একটি ইতিবাচক ভবিষ্যতের আগ্রহ প্রকাশ করেন মাস্ক। এ প্রসঙ্গে বৈশ্বিক উষ্ণায়ন ও সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বেড়ে যাওয়া মোকাবিলা করার কথা বলেন তিনি। কয়েক বছর ধরে ডেমোক্র্যাটরা নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে উত্তরণে যে চাপ দিচ্ছিলেন, মাস্ক দৃশ্যত সেটিও সমর্থন করেন। কিন্তু এর প্রতিক্রিয়ায় ট্রাম্প বলেন, ‘বৈশ্বিক উষ্ণায়ন সবচেয়ে বড় হুমকি নয়। সবচেয়ে বড় পারমাণবিক হুমকি।’
বাইডেনকে নিয়ে ট্রাম্প এমন বক্তব্য দিলেও প্রকৃতপক্ষে মাত্র কয়েক দিন আগেই সম্প্রচারমাধ্যম সিবিএসকে একটি সাক্ষাৎকার দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। ইতিমধ্যে মাস্ক দাবি করেছেন, কমলা হ্যারিস তাঁকে সাক্ষাৎকার দেবেন না। বর্তমানে নিয়মিতভাবে নির্বাচনী সমাবেশ করছেন কমলা। তবে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রচার শুরু করার পর তিনি গণমাধ্যমে বড় কোনো সাক্ষাৎকার দেননি।
ইউক্রেনে হামলার জন্য বাইডেনের প্রতি অভিযোগ: বাইডেন ক্ষমতায় না থাকলে রাশিয়া ইউক্রেনে আগ্রাসন চালাত না বলে দাবি করেন সাবেক প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। সাক্ষাৎকারকালে এ দাবিকে নাকচ করেননি মাস্ক। বরং বলেন, ট্রাম্প অসাধারণ একটি পয়েন্ট তুলে ধরেছেন।

ট্রাম্প বলেন, আমি পুতিনকে খুব ভালোভাবে চিনি এবং তিনি আমাকে সম্মান করেন। তিনি মাঝেমধ্যেই পুতিনের সঙ্গে কথা বলেন বলেও জানান। ট্রাম্প দাবি করেন, আমরা ইউক্রেন নিয়ে কথা বলেছি। ইউক্রেন তাঁর কাছে খুব গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু আমি তাঁকে সেটি (ইউক্রেনে আক্রমণ) না করতে বলেছি।
বৈদ্যুতিক গাড়ি নিয়ে সুরবদল: সাবেক প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প গত সপ্তাহান্তে এক সমাবেশে বলেন, প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ইলন মাস্ক তাঁকে সমর্থন করায় বৈদ্যুতিক গাড়ি নিয়ে তিনি (ট্রাম্প) তাঁর সুর না পাল্টে পারছেন না। সমাবেশে উপস্থিত সমর্থকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আমার বৈদ্যুতিক গাড়ি রয়েছে। মাস্ক খুব জোরালোভাবে আমাকে সমর্থন দিয়েছেন। তাই আমাকে এমন গাড়ি ব্যবহার করতে হচ্ছে।’
অথচ সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প মাস্কের টেসলা (বৈদ্যুতিক গাড়ি নির্মাণ প্রতিষ্ঠান) নিয়ে কথা বলেন ও প্রতিষ্ঠানটির প্রযুক্তির প্রশংসা করেন। ইতিপূর্বে বৈদ্যুতিক গাড়ির ব্যবহার উৎসাহিত করতে বাইডেনের নেওয়া নীতি আটকে দেওয়ার অঙ্গীকার করেছিলেন ট্রাম্প। রিপাবলিকান পার্টির জাতীয় সম্মেলনে তিনি ওই অঙ্গীকার করেন। ট্রাম্পের প্রতি মাস্কের সমর্থন টেসলার কোনো কোনো অনুরাগী ও গ্রাহক ভালোভাবে নেয়নি। গত সপ্তাহে জার্মানির একটি প্রতিষ্ঠান বলেছে, টেসলার কাছ থেকে গাড়ি কেনা বন্ধ করবে তারা।
এদিকে সাক্ষাৎকারে বিশ্ববাসীর জন্য একটি ইতিবাচক ভবিষ্যতের আগ্রহ প্রকাশ করেন মাস্ক। এ প্রসঙ্গে বৈশ্বিক উষ্ণায়ন ও সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বেড়ে যাওয়া মোকাবিলা করার কথা বলেন তিনি। কয়েক বছর ধরে ডেমোক্র্যাটরা নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে উত্তরণে যে চাপ দিচ্ছিলেন মাস্ক দৃশ্যত সেটিও সমর্থন করেন। কিন্তু এর প্রতিক্রিয়ায় ট্রাম্প বলেন, ‘বৈশ্বিক উষ্ণায়ন সবচেয়ে বড় হুমকি নয়। সবচেয়ে বড় পারমাণবিক হুমকি। এ সময় মাস্ক হেসে দেন। তখন ট্রাম্প বলেন, ‘না, সত্যি।’

ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে সঙ্গে থাকুন
ওয়েব নিউজ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

আরও পড়ুন