প্রভাত রিপোর্ট : স্থবিরতা চলছে বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতিতে (বিজিএমইএ)। সংগঠনটির নির্বাচনকেন্দ্রিক জোট ফোরামের নেতাকর্মীরা গত ৭ আগস্ট উত্তরায় বিজিএমইএর কার্যালয়ে গিয়ে বর্তমান পরিচালনা পর্ষদের ওপর অনাস্থা জানিয়ে স্মারকলিপি দেন। তারা ওই দিনই কমিটি ভেঙে দিতে পর্ষদকে চাপ দেন। এ বিষয়ে উভয় পক্ষের মধ্যে দীর্ঘ আলোচনায় বেশ হট্টগোলও হয়। ফোরামের স্মারকলিপিতে বলা হয়, বর্তমান বিজিএমইএ সভাপতি এস এম মান্নান কচি ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। গত ৪ আগস্ট মিরপুর-১০ নম্বর গোলচত্বরে ছাত্র-জনতার ওপর কচি গুলিবর্ষণ করেন। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে দমন-পীড়ন ও হত্যায় উত্তরা ও মিরপুরে কচির নেতৃত্বে তার ক্যাডার বাহিনী মূল ভূমিকা পালন করে। এটি সব গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে।
শেখ হাসিনার আগে ও পরে দেশত্যাগ করেছেন বিভিন্ন ব্যবসায়ী সংগঠনের আওয়ামী লীগপন্থি নেতারা। কেউ কেউ দেশে থাকলেও প্রকাশ্যে আসছেন না। তাদের অনুপস্থিতিতে স্থবিরতা চলছে ব্যবসায়ী সংগঠনে। কোথাও কোথাও নতুন কমিটি গঠনের দাবিও উঠেছে।
স্মারকলিপিতে বলা হয়, ছাত্র আন্দোলনে কয়েকশ ছাত্র-জনতা নিহত হওয়ার পরও বর্তমান বোর্ড ও সভাপতি কোনো শোকবার্তা দেননি। ঐতিহাসিক ছাত্র আন্দোলন ও গণজোয়ারে বিজিএমইএ সভাপতি ও তার বোর্ড সম্পূর্ণ বিপরীতমুখী ভূমিকা পালন করায় তারা দায়িত্ব পালনের নৈতিক অধিকার হারিয়েছেন।
সংকটে কারখানা খোলা নিয়ে সংগঠনটির কোনো সঠিক নির্দেশনা দেয়া হয়নি উল্লেখ করে বলা হয়, গত কয়েক সপ্তাহে বিজিএমই ব্যবসা পরিচালনায় কার্যকর কোনো নির্দেশনা দিতে সম্পূর্ণ ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে। গত ৪ আগস্ট সকাল থেকে ছাত্র আন্দোলন ঠেকাতে মিরপুর-১০ গোলচত্বর দখলে নেয় যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক ও স্থানীয় সংসদ সদস্য নিখিল এবং বিজিএমইএ সভাপতি কচির নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ। দুপুর ১টার দিকে কচি তার বক্তব্যে বলেন, ‘শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে যে দাঁড়াবে তাকে শেষ করে দিতে হবে।
ফোরামের নেতাকর্মীরা গত সোমবার হোটেল সোনারগাঁওয়ে সংবাদ সম্মেলন করে বিজিএমইএর সভাপতি ও পরিচালকদের পদত্যাগের দাবি জানান। একই সঙ্গে দলীয় প্রভাবমুক্ত অন্তর্র্বতী পরিচালনা পর্ষদ গঠন করে স্বচ্ছ ভোটার তালিকা প্রণয়ন ও দ্রুততম সময়ের মধ্যে সুষ্ঠু নির্বাচনের দাবি জানান।
লিখিত বক্তব্যে বিজিএমইএর সাবেক পরিচালক ও অনন্ত কোম্পানিজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এনামুল হক খান বলেন, গত ৯ মার্চের নির্বাচনে এস এম মান্নান তার ক্যাডার বাহিনী দিয়ে নজিরবিহীন কারচুপি ও ভোট জালিয়াতির মাধ্যমে পর্ষদে আসেন। এসব অবৈধ কাজে বিজিএমইএর সাবেক তিনজন সভাপতি নিজেদের লোকজন নিয়ে সরাসরি অংশ নেন। এসব ঘটনায় সাধারণ সদস্যদের মনে ব্যাপক রক্তক্ষরণ হয়। সংবাদ সম্মেলনে নির্বাচনে কারচুপি নিয়ে একটি ভিডিও দেখানো হয়। বিজিএমইএর সভাপতি এস এম মান্নান কচি বর্তমানে আত্মগোপনে রয়েছেন। তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।