প্রভাত সংবাদদাতা, কুষ্টিয়া: কুষ্টিয়ার মিরপুর বাজারের ওপর দিয়ে প্রবাহিত গঙ্গা কপোতাক্ষ (জিকে) সেচ প্রকল্পের প্রধান খালের ওপর দিয়ে অপ্রশস্ত ব্রিজ ভেঙে সেখানে নির্মিত হচ্ছে দৃষ্টিনন্দন সেতু। নির্মাণাধীন সেতুটির বিকল্প চলাচলের জন্য দক্ষিণ পাশেই অস্থায়ীভাবে নির্মাণ করা হয়েছে সাঁকো। বাঁশ ও কাঠের তৈরি এই সাঁকোটি প্রায়ই ডুবে যায় জিকে খালের পানি বেড়ে। সাঁকোর ওপর পানি উঠে পড়ায় চলাচলে রীতিমতো ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে ওঠে। বিকল্প বেইলি ব্রিজ নির্মাণের দাবি উঠলেও তা বাস্তবায়ন হয়নি।
অপরদিকে পানি বেড়ে স্রোত বৃদ্ধি পেলে বন্ধ থাকে নির্মাণকাজ। কাজের ধীরগতিতে জনমনে প্রশ্ন জেগেছে, কবে শেষ হবে এই সেতুর নির্মাণ কাজ। আর ঝুঁকিপূর্ণ এই সাঁকোই টিকবে কতদিন।
জানা গেছে, চলতি বছরের ১৩ জুন কুষ্টিয়ার মিরপুর বাজারের মধ্যে দিয়ে প্রবাহিত গঙ্গা-কপোতাক্ষ প্রধান সেচ খালের ওপর নতুন সেতু নির্মাণকাজের উদ্বোধন করা হয়। কিন্তু বিকল্প পারাপারের ব্যবস্থা না রেখেই খালের ওপর থাকা পুরাতন সেতু ভেঙে ফেলা হয়। ফলে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন এই সেতু দিয়ে নিয়মিত পারাপার হওয়া অসংখ্য যানবাহনসহ কয়েক হাজার মানুষ।
স্থানীয়রা জানান, ব্রিজের পূর্ব পাশে মিরপুর পৌরসভা এবং পশ্চিম পাশে মিরপুর থানা ও মিরপুর উপজেলা প্রশাসনের সব অফিস, ব্যাংক রয়েছে। এ ছাড়াও মিরপুরের এলাকাটিতে অনেক স্কুল ও কলেজ অবস্থিত। মিরপুর উপজেলা ছাড়াও পার্শ্ববর্তী ভেড়ামারা ও দৌলতপুরের কয়েক হাজার মানুষ প্রতিদিন এই ব্রিজ পার হয়ে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ কাজে যেতেন। এ ছাড়াও প্রতিদিন শত শত শিক্ষার্থী ব্রিজটি ব্যবহার করে মিরপুর পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়, মাহমুদা চৌধুরী কলেজ ও মিরপুর সরকারি বালিকা বিদ্যালয়সহ উপজেলার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আসা-যাওয়া করে।
মিরপুর উপজেলা ছাড়াও পার্শ্ববর্তী ভেড়ামারা ও দৌলতপুরের রোগী বহনকারী অনেক অ্যাম্বুলেন্স সেতুটি দিয়ে পারাপার হতো। কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ এই সেতু ভাঙার আগে কাছাকাছি কোনও বিকল্প ব্যবস্থা না রেখে তড়িঘড়ি করে সেতুটি ভেঙে ফেলা হয়। বাঁশ দিয়ে পায়ে হেঁটে পারাপারের বিকল্প ব্যবস্থা হিসেবে বাঁশের সাকো নির্মাণ করা হলেও অনেক সময় সেটি পানিতে তলিয়ে থাকে। সাঁকোটি নড়বড়ে হওয়ার কারণে মানুষ জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পারাপার হয়। যানবাহন পারাপারের বিকল্প কোনও রাস্তা নির্মাণ না করায় মানুষ চরম বিপাকে পড়েছেন।
স্থানীয় মিরপুর পৌরসভার সুলতানপুর গ্রামের আমিনুল ইসলাম বলেন, আমার ছেলে স্থানীয় বর্ডার গার্ড স্কুলের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী। পুরাতন ব্রিজটি ভেঙে ফেলায় প্রতিদিন তাকে অনেক রাস্তা ঘুরে স্কুলে যেতে হয়। তাছাড়াও মুমূর্ষু রোগীদের নেওয়ার ক্ষেত্রে অনেক রাস্তা ঘুরে হাসপাতালে যেতে হয়। এতে অনেককে দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে। অতিদ্রুত ব্রিজটির নির্মাণকাজ শেষ করার দাবি জানাই।