প্রভাত ডেস্ক : ইরানের ইয়াজদ প্রদেশে ভয়াবহ এক বাস দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন ৩৫ জন পাকিস্তানি যাত্রী। তাদের মধ্যে ৩০ জন ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারিয়েছেন, বাকি ৫ জনের মৃত্যু হয়েছে হাসপাতালে নেওয়ার পর। বাসটিতে যাত্রী ছিলেন মোট ৫৩ জন। জীবিতদের সবাই কম-বেশি আহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে ১৪ জনের অবস্থা গুরুতর বলে জানা গেছে। গত মঙ্গলবার রাতে ইরানের তাফ্ত শহরে ঘটেছে এই দুর্ঘটনা। তাফ্ত শহরটি রাজধানী তেহরান থেকে পায় ৫০০ কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিমে অবস্থিত। ইরানের দুর্যোগ মোকাবিলা বাহিনীর তাফ্ত শাখার এক কর্মকর্তা দেশটির রাষ্ট্রয়ত্ব সংবাদ সংস্থা ইরনাকে জানিয়েছেন, বাসটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে উল্টে পার্শবর্তী খাদে পড়ে গিয়েছিল। দেশটির রাষ্ট্রায়ত্ব টেলিভিশন এক প্রতিবেদনে দুর্ঘটনার কারণ হিসেবে চালকের অমনযোগিতা এবং বাসের ফিটনেসের অভাবকে দায়ী করেছে। নিহত এবং আহত যাত্রীদের সবাই শিয়া ধর্মাবলম্বী মুসলিম। চলতি বছরের আরবাইনে যোগ দেয়ার জন্য ইরানের ভেতর দিয়ে ইরাকের কারবালা যাচ্ছিলেন তারা।
শিয়া মুসলিমদের একটি বিশেষ ধর্মীয় অনুষ্ঠানের নাম আরবাইন। ইসলাম ধর্মের প্রবর্তক হযরত মুহম্মদ (স.)-এর দৌহিত্র হযরত ইমাম হোসেন (র.) ৬৮০ খ্রিস্টাব্দে আরবি মোহররম মাসের ১০ তারিখ ইরাকের কারবালায় শাহাদাৎ বরণ করেন। তার মৃত্যুর ৪০ দিন পর আরবাইন পালন করেন শিয়া মুসলিমরা। এই আরবাইনের অনুষ্ঠান হয় কারবালায়। প্রতি বছরই পাকিস্তানের শিয়া মুসলিমরা আরবাইনে যোগ দিতে কারবালায় যান এবং তাদের মধ্যে অনেকেই সড়ক পথে ইরানের ভেতর দিয়ে যেতে পছন্দ করেন। গত মঙ্গলবারের দুর্ঘটনায় যেসব যাত্রী হতাহত হয়েছেন, তারা সবাই পাকিস্তানের সিন্ধ প্রদেশের লারকানা জেলার বাসিন্দা বলে জানিয়েছেন পাকিস্তানের শিয়া মুসলিমদের স্থানীয় নেতা কামার আব্বাস।
প্রসঙ্গত, নিরাপত্তাগত বিবেচনায় ইরানের সড়ক যোগাযোগ ও ট্রাফিক পরিষেবা ব্যবস্থা বিশ্বের সবচেয়ে পরিষেবা ব্যাবস্থাগুলোর মধ্যে অন্যতম। সড়ক দুর্ঘটনার কারণে প্রতি বছর গড়ে প্রায় ১৭ হাজার মানুষের মৃত্যু হয় ইরানে। এসব দুর্ঘটনার প্রধান দুটি কারণ হলো ট্রাফিক আইন মেনে চলার প্রতি চালকদের উদাসীনতা এবং অনিরাপদ যানবাহন।