প্রভাত রিপোর্ট : বাংলাদেশ মেডিক্যাল এবং ডেন্টাল কাউন্সিল (বিএমডিসি) সংস্কারসহ নানা দাবিতে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে বিক্ষোভ করছেন চিকিৎসকরা। গতকাল বুধবার চিকিৎসকদের পূর্বঘোষিত কর্মসূচি মার্চ টু বিএমডিসি পালনে সংস্থাটির সামনে অবস্থান নেয়ার কথা থাকলেও কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অবস্থান নেন তারা। চিকিৎসকরা জানান, বিএমডিসিতে ডিপ্লোমাধারীরা কর্মসূচি পালন করায় অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে তারা শহীদ মিনারে সমবেত হয়েছেন। পরে সেখান থেকে একটি প্রতিনিধিদল বিএমডিসিতে যাওয়ার কথা আছে। গতকাল বুধবার বেলা সাড়ে ১০টা থেকে সাধারণ চিকিৎসক ও চিকিৎসা শিক্ষার্থী সমাজের ব্যানারে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে জড়ো হতে শুরু করেন চিকিৎসকরা। তারা জানান, বিএমডিসি কর্তৃক ম্যাটস, ডিএমএফ, এলএমএফ পাস করা মেডিক্যাল অ্যাসিস্ট্যান্টদের ডিপ্লোমা মেডিক্যাল প্র্যাকটিশনার হিসেবে বিবেচিত করার প্রতিবাদসহ তিন দফা দাবিতে মার্চ টু বিএমডিসি কর্মসূচি চলছে। বিএমডিসি কর্মকর্তাদের অপসারণও দাবি করেন তারা।
চিকিৎসকদের দাবিগুলোর মধ্যে আছে– ন্যূনতম এমবিবিএস অথবা বিডিএস ডিগ্রি প্রাপ্তরা ছাড়া অন্য কেউ যেন ডাক্তার পদবি ব্যবহার করতে না পারেন তা নিশ্চিত করা; মেডিক্যাল চিকিৎসা ডিপ্লোমাধারীদের পরিচিতি বিএমডিসি আইন অনুযায়ী মেডিক্যাল সহকারী হিসেবে নিশ্চিত করা; মেডিক্যাল সহকারীদের জন্য নির্ধারিত ৭৩টি ওষুধের বাইরে প্রেসক্রিপশনকারীদের বিরুদ্ধে বিএমডিসি আইন অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিশ্চিত করা।
এছাড়া চিকিৎসকদের আরও দাবির মধ্যে আছে,স্বাস্থ্যসেবা উন্নত করার লক্ষ্যে ডাক্তার ছাড়া স্বাস্থ্যসেবা বন্ধ করতে হবে; ইউনিয়ন পর্যায়ে ডাক্তার দ্বারা স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে হবে; প্রেসক্রিপশন ছাড়া ফার্মেসিতে ওষুধ বিক্রি বন্ধ করতে হবে; বেসরকারি চিকিৎসকদের বেতন কাঠামো নিশ্চিত করতে হবে (মেডিকেল অফিসার, সিনিয়র মেডিক্যাল অফিসার, সহকারী রেজিস্ট্রার, রেজিস্ট্রার); অভিজ্ঞতার আলোকে পদোন্নতি নিশ্চিত করতে হবে; বিএমডিসি ছাড়া ভুল চিকিৎসা বলার অধিকার কারও নেই; বেসরকারি হাসপাতাল/ক্লিনিকে ডাক্তার দ্বারা চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করতে হবে এবং স্বাস্থ্য সুরক্ষা আইন/নীতিমালা প্রণয়ন করতে হবে। চিকিৎসকরা বলছেন, বিএমডিসি ম্যাটস, ডিএমএফ, এলএমএফ পাস করা মেডিক্যাল অ্যাসিস্ট্যান্টদের ‘ডিপ্লোমা মেডিক্যাল প্র্যাকটিশনার’ হিসেবে বিবেচিত করেছে। আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি এবং নিজেদের অস্তিত্ব ও অধিকারের লড়াই হিসেবে আজকের এই কর্মসূচিতে এসেছি। এখান থেকে আমাদের প্রতিনিধি দল বিএমডিসিতে যাবে এবং আমাদের দাবিগুলো তাদের কাছে পৌঁছে দেবে।
কর্মসূচি প্রসঙ্গে বাংলাদেশ ডক্টরস ফাউন্ডেশনের আহ্বায়ক ডা. মো. শাহেদ রফি পাভেল বলেন, আমরা শুরুতে বিএমডিসিতে জড়ো হওয়ার কর্মসূচি দিয়েছিলাম। কিন্তু সেখানে ডিপ্লোমাধারীরাও পাল্টা কর্মসূচি দেয়। আমরা দেখতে পাচ্ছি এই কর্মসূচিকে ঘিরে অনেকেই ঘোলা পানিতে মাছ ধরার চেষ্টা করছেন। দেশের সাধারণ চিকিৎসক ও ছাত্র-ছাত্রীদের এই মুভমেন্টকে আওয়ামী লীগের ষড়যন্ত্র বানাতে চান কেউ কেউ। আমরা চাই, চিকিৎসক ও ছাত্রসমাজ তাদের অধিকার আদায়ের আন্দোলনে এমন কোনও কালিমা না পাক যা ভবিষ্যতের পথগুলো বন্ধ করে দেয়। তিনি বলেন, আশা করবো, এই সরকার ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারাসহ সবাই দেশের সাধারণ চিকিৎসক ও ছাত্রদের দাবির সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করবেন। আমরা সবার সহযোগিতা চাই।