বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
Proval Logo
আরও ৮ হত্যা মামলা অপরাধ ট্রাইব্যুনালে

এবার শেখ হাসিনার সাথে বিচারপতি খায়রুল হকও আসামি

প্রকাশিত - ২১ আগস্ট, ২০২৪   ০৯:২৬ পিএম
webnews24

প্রভাত রিপোর্ট : সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কাররে দাবিকে ঘিরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সহিংসতায় হতাহতের ঘটনায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আরও ৮টি হত্যা মামলা এবং আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরেকটি অভিযোগ করা হয়েছে। এর মধ্যে ৫টি ঢাকায়, ১টি চট্টগ্রামে এবং আরেকটি সিলেটে। এই নিয়ে গত ১৩ অগাস্ট থেকে গতকাল বুধবার শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মোট ৩০টি মামলা হয়েছে, যার মধ্যে একটি বাদে সবই হত্যা মামলা। আর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থায় ৪টি হত্যা-গণহত্যার অভিযোগ দায়ের করা হয়। জানা যায়, রাজধানীর মিরপুরের র‌্যাবের হেলিকপ্টার থেকে গুলি চালিয়ে একটি বেসরকারি কোম্পানির অফিস সহায়ক ফিরোজ তালুকদারকে হত্যার অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক প্রধান বিচারপতি খায়রুল হকসহ ৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে আদালতে। নিহতে স্ত্রী রেশমা সুলতানা বুধবার ঢাকার মহানগর হাকিম মো. মেহেদী হাসানের আদালতে এই মামলার আবেদন করেন। বিচারক বাদীর জবানবন্দি শুনে মিরপুর মডেল থানার ওসিকে অভিযোগটি এজাহার হিসেবে গ্রহণ করার নির্দেশ দেন। মামলার অপর আসামিরা হলেন সাবেক সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান কামাল ও সাবেক আইজিপি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন। এদিকে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় রাজধানীর তেজগাঁও এলাকায় গুলিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থী মো. তৌহিদুল হক হত্যার অভিযোগে শেখ হাসিনা, নিঝুম মজুমদার ও মুনতাসীর মামুনসহ ৪৯ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করা হয়েছে। গতকাল বুধবার ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট নুরুল হুদা চৌধুরীর আদালতে ৪৯ জনের নামসহ অজ্ঞাত ২০০-৩০০ জনের বিরুদ্ধে মামলার আবেদন করেন নিহতের বড় ভাই তারিকুল ইসলাম। এছাড়া রাজধানীর রামপুরায় গুলিতে রাসেল মিয়া নামের এক ব্যক্তির মৃত্যুর ঘটনায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং ওবায়দুল কাদেরসহ ২৮ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা হয়েছে। গতকাল বুধবার রাসেলের স্ত্রী শারমিন আক্তার ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে মামলার আবেদন করেন। পরে বাদীর জবানবন্দি নিয়ে বিচারক আফনান সুমি আবেদনটি মামলা হিসেবে গ্রহণ করতে রামপুরা থানাকে নির্দেশ দেন। অন্যদিকে চট্টগ্রামের মুরাদপুরে কোটা সংস্কার আন্দোলনে নিহত ফয়সাল আহমেদ শান্তর বাবা মো. জাকির হোসেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক মন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, সাবেক মেয়র আ জ ম নাছির, রেজাউল করিম, ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকসহ ৭৭ জনের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থায় গণহত্যা এবং মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ দায়ের করেছেন।
এছাড়া পুরান ঢাকার লক্ষ্মীবাজারে এলেম আল ফায়দি নামে এক যুবককে গুলি করে হত্যার অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরসহ ৩৪ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। আজ বুধবার ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট তরিকুল ইসলামের আদালতে সামসুল আরেফিন নামে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের এক শিক্ষার্থী এ মামলা দায়ের করেন। আদালত বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করে অভিযোগটি সূত্রাপুর থানাকে এজাহার হিসেবে গ্রহণ করার নির্দেশ দেন। মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে মামলার বাদী সামসুল আরেফিন। 
অন্যদিকে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে প্রধান আসামি করে চট্টগ্রামে আরও একটি মামলা হয়েছে। নগরীর চান্দগাঁও থানায় মঙ্গলবার গভীর রাতে মামলাটি করেছেন মো. ফজলে রাব্বী নামে নিহত এক যুবকের বাবা। চান্দগাঁও থানার ওসি জাহিদুল কবীর বলেন, মো. সেলিম নামে এক ব্যক্তি গত ৪ অগাস্ট আন্দোলনে তার ছেলে নিহত হয়েছে দাবি করে মামলাটি করেছেন। তবে ৪ অগাস্ট চান্দগাঁও এলাকায় কারো মৃত্যু হয়েছে বলে আমরা আগে জানতাম না। এজাহার দেয়ার পর আমরা মৃত্যুর বিষয়টি জেনেছি। বিষয়টি তদন্ত করে দেখব। এর আগে গত ১৭ ও ১৯ অগাস্ট চান্দগাঁও ও পাঁচলাইশ থানায় আরও ২টি হত্যা মামলায় প্রধান আসামি করা হয় শেখ হাসিনাকে।
একইভাবে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তার বোন শেখ রেহানা ও আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরসহ ৮৭ জনের নামে সিলেটে মামলা দায়ের করা হয়েছে। বুধবার দুপুরে সিলেট মেট্রোপলিট ম্যাজিস্ট্রেট ১ম ও দ্রুত বিচারিক আদালতের বিচারক সুমন ভুইয়ার মামলাটি করেন জেলা ছাত্রদলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মো. জুবের আহমদ (৩৫)। গত ৪ আগস্ট সিলেট নগরের বন্দরবাজার এলাকায় ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় পুলিশ এবং আওয়ামী লীগ ও তার অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের গুলি ও হামলার অভিযোগে এ মামলাটি করা হয়। মামলায় আজ্ঞতনাম আরও ৫০০/৬০০ জনকে আসামি করা হয়েছে। কোটা সংস্কার আন্দোলনে হামলায় হতাহতের ঘটনায় এ পর্যন্ত সিলেটে ৪টি মামলা হলো।
শিক্ষার্থী মো. তৌহিদুল হক হত্যার ঘটনায় আদালত বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করে তেজগাঁও থানাকে অভিযোগটি এজাহার হিসেবে গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন। মামলার অপর আসামিদের মধ্যে রয়েছেন, ওবায়দুল কাদের, আছাদুজ্জামান খান কামাল, আনিসুল হক, সালমান এফ রহমান, আনোয়ার হোসেন মঞ্জু, হাসানুল হত ইনু, রাশেদ খান মেনন, মোহাম্মদ হাছান মাহমুদ, মোহাম্মদ আলী আরাফাত, চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন, হারুন-অর-রশীদ, বিপ্লব কুমার, হাবিবুর রহমান, সাদেক খান, শাহজাহান খান। বাদীপক্ষের আইনজীবী মুজাহিদুল ইসলাম মামলার তথ্য নিশ্চিত করেছেন। গত ৪ আগস্ট তেজগাঁও থানাধীন ফার্মগেট ফুটওভার ব্রিজের নিচে সড়কে গুলিতে নিহত হন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তিইচ্ছুক শিক্ষার্থী মো. তৌহিদুল হক।
ফিরোজ তালুকদার হত্যা মামলার আর্জিতে বলা হয়, এ বি এম খায়রুল হক প্রধান বিচারপতি থাকাকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে অন্য সব আইনজীবী তথা এমিকাস কিউরিদের মতামত উপেক্ষা করে একতরফাভাবে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল করেন। তার সেই রায় দেশে অঘোষিত স্বৈরতন্ত্র কায়েম করে শেখ হাসিনা ও তার দোসরদের যথেচ্ছভাবে রাষ্ট্রক্ষমতা প্রয়োগের সুযোগ করে দেয়। ২০১৪ ও ২০১৮ সালে শেখ হাসিনা ও অন্য আসামিরা কথিত নির্বাচনের মাধ্যমে একাধিকবার রাষ্ট্রক্ষমতায় এসে মানুষের ওপর জুলুম, নির্যাতন ও বাক স্বাধীনতা খর্ব করাসহ খুন, গুম ও ক্রসফায়ারের মাধ্যমে মানুষ হত্যা ও নিষ্পেষণ অব্যাহত রাখে।
কোটা সংস্কারের দাবিতে শিক্ষার্থীরা আন্দোলনে নামলে সরকার হত্যা, গুম ও গ্রেপ্তারের মাধ্যমে দমনপীড়ন চালায়। শেখ হাসিনা সরকারের সুবিধাভোগী প্রশাসনের শীর্ষ কর্মকর্তাসহ অজ্ঞাতনামা আসামিদের নির্দেশে পুলিশ, র‌্যাব, বিজিবিসহ কিছু বিপথগামী সদস্য, আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গ সংগঠনের অজ্ঞাতনামা সন্ত্রাসীরা দেশব্যাপী আন্দোলন দমনের জন্য ছাত্র-জনতার উদ্দেশ্যে গুলি করতে থাকে। ১৯ জুলাই সন্ধ্যা ৬টার দিকে ফিরোজ তালুকদার মিরপুর-১০ গোলচত্বর পার হওয়ার সময় র‌্যাবের হেলিকপ্টার থেকে ছোড়া গুলিতে আহত হন। তাকে হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। ছাত্রজনতার প্রবল আন্দোলনে গত ৫ অগাস্ট শেষ হাসিনা সরকারের পতনের পর থেকে তার বিরুদ্ধে মোট ২৫টি মামলা হয়েছে এর আগে, যার বেশিরভাগই হয়েছে ঢাকায়।
জানা যায়, গত ১৬ জুলাই চট্টগ্রামের মুরাদপুরে কোটা সংস্কার আন্দোলনে নিহত ফয়সাল আহমেদ শান্তর বাবা মো. জাকির হোসেনের পক্ষে বুধবার আবেদনটি করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মুহাম্মদ হুজ্জাতুল ইসলাম খান। অপরাধের ধরনে বলা হয়েছে, এক থেকে ১৬ নম্বর আসামির নির্দেশে ও পরিকল্পনায় অন্যান্য আসামিরা দেশীয় এবং আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে নির্বিচারে গুলিবর্ষণ করে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনকারী সাধারণ নিরস্ত্র ছাত্র-জনতাকে হত্যা করে তাদের সমূলে বা আংশিক নির্মূল করার উদ্দেশে গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটনের অপরাধ। সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক সেতুমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সাবেক শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ, ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি সাদ্দাম হোসেন, সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান, চট্টগ্রাম নগর আওয়ামী লীগের সভাপতি মাহতাব উদ্দিন আহমেদ, সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীন, সাবেক মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী, সাবেক সংসদ সদস্য আবু রেজা মুহাম্মদ নেজাম উদ্দিন নদভী, মহিউদ্দিন বাচ্চু, আওয়ামী লীগ নেতা মোতাহেরুল ইসলাম, মফিজুর রহমান, এটিএম পেয়ারুল ইসলাম, পুলিশের সাবেক আইজিপি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুনসহ ৭০ জনকে আসামি করা হয়েছে। আরও অজ্ঞাতপরিচয় এক হাজার থেকে এক হাজার ২০০ জনের কথা বলা হয়েছে।
রামপুরায় রাসেল মিয়া মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন চলাকালে গত ১৯ জুলাই দুপুর আড়াইটায় আসামিদের নির্দেশে অজ্ঞাত আসামির গুলিতে রাসেল মিয়া মারা যান। এই মামলার অন্য আসামিরা হলেন সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সাবেক পাট ও বস্ত্র মন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবির নানক, সাবেক তথ্য প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত, সাবেক তথ্য ও প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলক, সাবেক দুর্যোগ ও ব্যবস্থাপনা প্রতিমন্ত্রী মহিবুর রহমান, সাবেক সংসদ সদস্য ওয়াকিল উদ্দিন, মাঈনুল হোসেন খান নিখিল, যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশ, সাবেক আইজিপি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল-মামুন, সাবেক ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান, ডিআইজি রিপন সরদার, সাবেক ডিবি প্রধান হারুন অর রশীদ, সাবেক সিটিটিসি প্রধান আসাদুজ্জামান, সাবেক র‌্যাব ডিজি হারুন অর রশীদ, ওয়ারী বিভাগের ডিসি ইকবাল হোসেন, মতিঝিল বিভাগের ডিসি হায়াতুল ইসলাম, এডিসি সাব্বির রহমান, র‌্যাব-১০ এর অধিনায়ক ফরিদ উদ্দিন, রামপুরা থানার ওসি মসিউর রহমান, ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন, সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান, ঢাকা মহানগর উত্তর ছাত্রলীগের সভাপতি রিয়াজ মাহমুদ এবং সাধারণ সম্পাদক সাগর আহম্মেদ শামীমসহ আরও ৪ জন।
সিলেটের মামলার উল্লেখযোগ্য আসামিরা হলেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ প্রধান শেখ হাসিনা, তার বোন শেখ রেহানা, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ, সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুর রহমান, সাবেক প্রধানন্ত্রী শেখ হাসিনার উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, সাবেক প্রতিমন্ত্রী শফিকুর রহমান চৌধুরী, সাবেক এমপি কামরুল ইসলাম, সাবেক এমপি ও জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু, সাবেক এমপি ও ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন, সাবেক আইজিপি আব্দুল্লাহ আল মামুন, সাবেক ডিবি প্রধান হারুন-অর-রশিদ, সিলেটের সাবেক মেয়র আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী, সিলেট-৩ আসনের সাবেক এমপি হাবিবুর রহমান হাবিব, সাবেক এমপি শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল, সিলেট জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যা ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. নাসির উদ্দিন খান, সিলেট সিটি কাউন্সিলর আজাদুর রহমান আজাদ, সিলেট মহানগর ছাত্রলীগের সভাপতি ও সেক্রেটারি এবং সিসিক মেয়র আনোয়ারুজ্জামানের পিএস সাজলু লস্কর। 
লক্ষ্মীবাজারে মামলার অন্য আসামিদের মধ্যে উল্লেখযোগ্যরা হলেন সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সাবেক পুলিশ মহাপরিদর্শক আবদুল্লাহ আল–মামুন, সাবেক কমিশনার ডিএমপি হাবিবুর রহমান, সাবেক ডিবির প্রধান হারুন অর রশীদ, অতিরিক্ত যুগ্ম কমিশনার বিপ্লব কুমার, ওয়ারীর ডিসি ইকবাল হোসেন, ঢাকা-৬ আসনের সাবেক এমপি আবু সাইদ খোকন, ঢাকা-৭–এর সাবেক এমপি সোলাইমান সেলিম, ৩৭ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর আব্দুর রহমান মিয়াজী, ৩৬ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর রঞ্জন বিশ্বাস, ৪৩ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর আরিফ হোসেন ছোটন, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) ছাত্রলীগের সভাপতি ইব্রাহীম ফরাজী, সাধারণ সম্পাদক এস এম আকতার হোসাইন, কবি নজরুল কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি বেলায়েত হোসেন সাগর, সাধারণ সম্পাদক ফারুক হাওলাদার, সোহরাওয়ার্দী কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি রাহাত মোড়ল, সাধারণ সম্পাদক আশিকুল ইসলাম আশিক আরও আছেন, জবি ছাত্রলীগের নেতা, নৃবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী মিরাজ হোসেন রাজ, গণিত বিভাগের ১৩ ব্যাচের জাহিদুল ইসলাম হাসান, অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন বিভাগের ১৫ ব্যাচের মাকসুদুল হাসান আরাফাত, বাংলা বিভাগের ১৬ ব্যাচের ফারহান লাবিব অপূর্ব, ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের ১৫ ব্যাচের সাজবুল হাসান, জবি ছাত্রলীগের সহসভাপতি ইব্রাহীম সানিম, অর্থনীতি বিভাগ ছাত্রলীগের নেতা মীর মুকিত, বাংলা বিভাগ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক অর্জুন বিশ্বাস, গণিত বিভাগের ১৩ ব্যাচের মাহিমুর রহমান বিজয়, ছাত্রলীগ নেতা পরিসংখ্যান বিভাগের ১১ ব্যাচের শিক্ষার্থী মিনুন মাহফুজ, পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের ১১ ব্যাচের শাহরুখ আলম শোভন, তারিকুল ইসলাম নয়ন, আনোয়ারা বেগম রেশমা, কোতোয়ালি থানার যুবলীগ নেতা মোয়াজ্জেম ও মো. জুয়েল। 
মামলায় শেখ হাসিনা ছাড়াও আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, সবেক পররাষ্ট্র মন্ত্রী হাছান মাহমুদ, সাবেক শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দিন, সাবেক সিটি মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী ছাড়াও চার সাবেক সংসদ সদস্য, ২৮ জন ওয়ার্ড কাউন্সিলর, যুবলীগ, ছাত্রলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতাকর্মীসহ ২৭০ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও ১০০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
এজাহারে বাদী মো. সেলিম বরেছেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় গত ৪ অগাস্ট বিকালে চান্দগাঁও এলাকায় সমাবেশ চলছিল। সেখানে অংশ নেয়ার জন্য তার ছেলে ফজলে রাব্বী বহদ্দারহাট কাঁচা বাজার মোড়ে অবস্থান করছিলেন।

এসময় মামলায় উল্লেখিত ১ থেকে ১১ নম্বর আসামির প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ইন্ধনে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ ও ছাত্রলীগের ক্যাডাররা অস্ত্রশস্ত্র, লাঠিসোঁটা নিয়ে ও বোমা বিষ্ফোরণ ঘটিয়ে ধ্বংসযজ্ঞ করে এবং সমাবেশে হামলা চালায়। এতে অনেক লোক হতাহত হয়।

‘তাদের ছোড়া গুলিতে’ ফজলে রাব্বীর পেটে ও বাম কানে লাগলে তিনি লুটিয়ে পড়ে।

পরে সমাবেশে থাকা শিক্ষার্থীরা রাব্বীকে ওআর নিজাম রোডের বেসরকারি একটি হাসপাতালে নেওয়ার পর চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

চট্টগ্রামের এই মামলা নিয়ে গত ১৩ অগাস্ট থেকে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মোট ২৭টি মামলা হয়েছে, যার মধ্যে একটি বাদে সবই হত্যা মামলা। অধিকাংশ মামলাই হয়েছে ঢাকায়।
 

ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে সঙ্গে থাকুন
ওয়েব নিউজ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

আরও পড়ুন