ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের গোমতী নদীর ওপর ডুম্বুর জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের বাঁধ কোনো ধরনের সতর্কবার্তা ছাড়াই খুলে দেওয়া হয়েছে। এতে ভারত ও বাংলাদেশের পূর্বাঞ্চলীয় সীমান্ত এলাকার ৬ জেলায় ভয়াবহ বন্যা দেখা দিয়েছে। তবে এই বন্যা পরিস্থিতির জন্য ত্রিপুরার গোমতী নদীর বাঁধ খুলে দেওয়া নিয়ে যে আলোচনা চলছে, তা সঠিক নয় বলে মন্তব্য করেছে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। একইসঙ্গে দাবি করা হয়েছে, বাঁধ খুলে দেওয়া হয়নি, অতিরিক্ত পানির প্রবাহের কারলে ডুম্বুর বাঁধের গেট খুলে গেছে। বৃহস্পতিবার ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানিয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ‘ত্রিপুরার গোমতী নদীর উজানে ডুম্বুর বাঁধ খুলে দেওয়ায় বাংলাদেশের পূর্ব সীমান্তের জেলাগুলোতে বন্যার বর্তমান পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে বলে উদ্বেগ প্রকাশ করতে দেখা যাচ্ছে। তবে এটি বাস্তবে সঠিক নয়।’
এতে বলা হয়, ‘আমরা উল্লেখ করতে চাই, গত কয়েকদিন ধরে ভারত এবং বাংলাদেশের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত গোমতী নদী সংলগ্ন অঞ্চলে এ বছরের সবচেয়ে বেশি বৃষ্টিপাত হচ্ছে। বাংলাদেশে বন্যার প্রাথমিক কারণ, বাঁধের ভাটি অংশের অববাহিকায় এই বিপুল পানিপ্রবাহ।’
ভারতীয় পররাষ্ট্র্র মন্ত্রণালয় বলেছে, ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের ডুম্বুর বাঁধটির অবস্থান সীমান্ত থেকে প্রায় ১২০ কিলোমিটার দূরে। এই বাঁধের উচ্চতা প্রায় ৩০ মিটার। ডুম্বুর জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের এই বাঁধ থেকে যে শক্তি উৎপাদন হয়, তার সুবিধাভোগী বাংলাদেশও। এখান থেকে বাংলাদেশ ৪০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ নেয়।
ভারতের দাবি, প্রায় ১২০ কিলোমিটার নদীপথে আমাদের অমরপুর, সোনামুড়া এবং সোনামুরা ২-এ তিনটি জলস্তর পর্যবেক্ষণ সাইট রয়েছে। গত ২১ আগস্ট থেকে সমগ্র ত্রিপুরা এবং পার্শ্ববর্তী বাংলাদেশের জেলাগুলোতে ভারী বর্ষণ অব্যাহত রয়েছে। এর ফলে অতিরিক্ত পানি প্রবাহের জেরে স্বয়ংক্রিয় ‘রিলিজ’ (বাঁধের গেটগুলো খুলে গেছে) পরিলক্ষিত হয়েছে।
মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ‘অমরপুর সাইট থেকে পানি প্রবাহ নিয়ে বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষ তথ্য প্রেরণ করেছে। তবে পরবর্তীতে বিদ্যুৎ বিভ্রাটের ফলে যোগাযোগের সমস্যা হয়েছে, তাই অবহিত করা সম্ভব হয়নি। তবুও আমরা যোগাযোগ বজায় রাখার চেষ্টা করেছি।’
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে ৫৪টি অভিন্ন নদী থাকায় দুই দেশের জন্যই বন্যা এমন একটি সমস্যা, যা জনগণের জীবনে দুর্ভোগ সৃষ্টি করে। এ সমস্যা সমাধানে দ্বিপাক্ষিক পরামর্শ প্রয়োজন। আমরা দ্বিপাক্ষিক পরামর্শ ও প্রযুক্তিগত আলোচনার মাধ্যমে পানি সম্পদ এবং নদীর পানি ব্যবস্থাপনার সমস্যা ও পারস্পরিক উদ্বেগ সমাধানে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।