প্রভাত রিপোর্ট : অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে সম্মান জানিয়ে সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই) সেদেশে সাজাপ্রাপ্ত ৫৭ বাংলাদেশির সকলকে সাধারণ ক্ষমা মঞ্জুর করেছে। গতকাল মঙ্গলবার প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম জানান, গত ২৮ আগস্ট আরব-আমিরাতের রাষ্ট্রপতি (আমীর) মোহাম্মদ বিন জাহেদ আল নাহিয়ানের সঙ্গে ফোনালাপে প্রধান উপদেষ্টা এই ৫৭ জনকে ক্ষমা করে দেয়ার অনুরোধ করেছিলেন। এর প্রেক্ষিতে সেদেশের প্রেসিডেন্ট তাদের ক্ষমা করে দিলেন। গতকাল রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় দেশের শীর্ষ ২০ সম্পাদকদের সঙ্গে মত বিনিময় করছিলেন প্রধান উপদেষ্টা। এ সময় আমিরাতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মো. আবু জাফর ফোন করে সাজাপ্রাপ্ত বাংলাদেশিদের আমিরাত সরকার কর্তৃক সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার বিষয়টি প্রধান উপদেষ্টাকে অবহিত করেন। ড. ইউনূস তাৎক্ষণিকভাবে বিষয়টি সম্পাদকদের জানান। গতকাল মঙ্গলবার সকালে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় গণমাধ্যম সম্পাদক ও ব্যবসায়ীদের সঙ্গে এক বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস এ তথ্য জানান। প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে পাঠানো এক বার্তায় বিষয়টি জানানো হয়েছে।
প্রেস সচিব জানান, নোবেল বিজয়ী ও বিশ্ববরণ্য ব্যক্তিত্ব হিসেবে ড. ইউনূসের প্রতি সম্মান দেখিয়ে আমিরাত সরকার এই পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে বলে তিনি উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, সাজাপ্রাপ্ত আসমিদের সাজা মওকুফ করার এমন ঘটনা সংযুক্ত আরব-আমিরাতের ইতিহাসে বিরল। তবে সাজা মওকুফ করা হলেও তাদের সেদেশে না রেখে শিগগিরই বাংলাদেশে পাঠানোর কথা জানিয়েছে দেশটি। প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব সাংবাদিকদের খবরটি নিশ্চিত করে বলেছেন, ক্ষমাপ্রাপ্ত এসব লোককে শিগগিরই বাংলাদেশে ফেরত পাঠানো হতে পারে।
উল্লেখ্য, গত জুলাই মাসে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে তখন পুরো বাংলাদেশ উত্তাল। একের পর এক বাড়ছে নিহতের সংখ্যা। এ অবস্থায় আন্দোলনে সমর্থন ও সংহতি জানায় প্রবাসী বাংলাদেশিরাও। বিভিন্ন দেশে হয়েছে মিছিল-বিক্ষোভ। তেমনই এক বিক্ষোভ মিছিল করতে গিয়ে আরব আমিরাতে আটক হন ৫৭ বাংলাদেশি। আরব আমিরাতের আইনানুযায়ী দেশটিতে মিছিল, সমাবেশ বা আন্দোলন করার সুযোগ নেই। যে জন্য মিছিলে জড়ো হওয়া ৫৭ জন প্রবাসী বাংলাদেশিকে আটক করে দেশটির পুলিশ। পরে দেশটির ফেডারেল আদালতে দ্রুত বিচারে দোষী সাব্যস্ত করে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেয়া হয় ৫৭ জন বাংলাদেশিকে। এর মধ্যে তিনজনকে যাবজ্জীবন, ৫৩ জনকে ১০ বছর এবং বাকি একজনকে ১১ বছরের কারাদ- দেওয়া হয়েছে।