প্রভাত ডেস্ক : পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে সামরিক আইনের আওতায় বিচারের মুখোমুখি করার ইঙ্গিত দিয়েছে দেশটির সেনাবাহিনী। ব্যক্তিগত ও রাজনৈতিক স্বার্থসিদ্ধির জন্য সামরিক বাহিনীর সদস্যদের ব্যবহারকারীদের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নেয়ার বিষয়ে সতর্ক করেছে তারা। গত বৃহস্পতিবার পাকিস্তান সেনাবাহিনীর মুখপাত্র লেফটেন্যান্ট জেনারেল আহমেদ শরিফ চৌধুরী এক গণমাধ্যম ব্রিফিংয়ে এসব কথা বলেন। পাকিস্তানের সেনা সদর দপ্তরে আন্তবাহিনী জনসংযোগ (আইএসপিআর) কার্যালয়ে এই ব্রিফিং করা হয়। সাংবাদিকদের তিনি বলেন, সামরিক আইনে বলা আছে, কেউ যদি এই আইনের সঙ্গে সম্পর্কিত ব্যক্তিদের ব্যক্তিগত বা রাজনৈতিক স্বার্থ হাসিলের জন্য ব্যবহার করেন কিংবা এ ধরনের কর্মকা-ের প্রমাণ পাওয়া যায়, তবে তাঁর বিরুদ্ধে এই আইনে ব্যবস্থা নেয়া যাবে।
ব্রিফিংয়ে আহমেদ শরিফ চৌধুরীর কাছে ইমরান খানকে সামরিক আইনে বিচারের মুখোমুখি করার সম্ভাবনা আছে কি না, জানতে চাওয়া হয়। তবে প্রশ্নটি পাশ কাটিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন এই সেনা কর্মকর্তা। তিনি বলেন, এটি আদালতের বিবেচনার বিষয়। সাংবাদিকের এ ধরনের প্রশ্নকে তিনি পূর্বানুমান বলে উল্লেখ করেন। তবে কোন পরিস্থিতিতে সামরিক আইনের আওতায় বেসামরিক ব্যক্তির বিচার করা যেতে পারে, তা উল্লেখ করেন এই সেনা কর্মকর্তা। সামরিক আইনের আওতায় ইমরান খানকে বিচারের মুখোমুখি করা হতে পারে বলে দীর্ঘদিন ধরে গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে। সম্ভাব্য কোর্ট মার্শাল ঠেকাতে তিনি ইসলামাবাদ হাইকোর্টের হস্তক্ষেপ চাওয়ার পর এ গুঞ্জন আরও জোরালো হয়ে ওঠে।
গত বছরের ৯ মের সহিংসতার ঘটনায় সামরিক আইনে বিচারের মুখোমুখি করার আশঙ্কায় ইমরান খান ওই আবেদন করেন। এই ঘটনায় তাঁর বিরুদ্ধে ইতিমধ্যে এফআইআর হয়েছে। গত মাসে পাকিস্তানের ইন্টার–সার্ভিসেস ইন্টেলিজেন্সের (আইএসআই) সাবেক প্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল ফয়েজ হামিদকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁকে ইমরান খানের ঘনিষ্ঠ বলে বিবেচনা করা হয়। ইমরান খানই তাঁকে আইএসআইয়ের প্রধান করেছিলেন। ফয়েজ হামিদ গ্রেপ্তার হওয়ার পর ইমরান খানের উদ্বেগ আর বেড়ে যায়। এমন গুঞ্জন আছে যে তাঁর বিরুদ্ধে রাজসাক্ষী হতে পারেন ফয়েজ হামিদ।
পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় সরকারের আইনবিষয়ক মুখপাত্র আকিল মালিকও বলেছেন, পাকিস্তান আর্মি অ্যাক্ট, ১৯৫২-এর আওতায় ইমরানের বিচার হতে পারে। পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) প্রতিষ্ঠাতা ইমরান খানকে গ্রেপ্তারের জেরে গত বছরের ৯ মে পাকিস্তানজুড়ে ব্যাপক সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে। ওই দিন সরকারি বিভিন্ন ভবনের পাশাপাশি বেশ কিছু সামরিক স্থাপনায় হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে।