প্রভাত সংবাদদাতা, খাগড়াছড়ি : খাগড়াছড়িতে টানা বৃষ্টিপাতে বিভিন্ন স্থানে পাহাড়ধসের ঘটনা ঘটেছে। সোমবার দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে মাটিরাঙ্গা উপজেলার সাপমারায় পাহাড় ধসে পড়ে সড়কের ওপর। এতে ভোর থেকে খাগড়াছড়ি-চট্টগ্রাম-ঢাকা সড়কের যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের কর্মী এবং সড়ক ও জনপথ বিভাগের শ্রমিকেরা মাটি সরালে তিন ঘণ্টা পর যান চলাচল স্বাভাবিক হয়। সকাল ৯টা থেকে খাগড়াছড়ি জেলা শহর থেকে চট্টগ্রাম-ঢাকা রুটে যানবাহন ছেড়ে যায়।
এ ছাড়া জেলা সদরের শালবাগান, সবুজবাগ এলাকায় পাহাড়ধসে বাসাবাড়িতে পড়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বসতবাড়িসহ ঘরের প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র। শালবাগান এলাকার হরিনাথপাড়া, রসুলপুর, পূর্ব শালবাগানে গভীর রাতে পাহাড় ধসে পড়ে। এতে কোনও ধরনের হতাহতের ঘটনা না ঘটলেও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে কয়েকটি বসতবাড়ি ও এর আসবাবপত্র।
হরিনাথপাড়া এলাকায় পাহাড়ধসের পাশাপাশি নিরাপত্তাপ্রাচীর হেলে পড়ে একটি টিনের ঘরের ওপর। এসব এলাকায় পাহাড়ের পাদদেশে থাকা ঝুঁকিপূর্ণ ও ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে নিরাপদ আশ্রয়কেন্দ্রে সরিয়ে নিতে কাজ করছে প্রশাসন।
সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নাঈমা ইসলাম তূর্য জানান, বেলা ১২টার দিকে জেলা প্রশাসকসহ প্রশাসনের কর্মকর্তারা ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শনে গেছেন। ক্ষতিগ্রস্তদের নামের তালিকা করা হচ্ছে। এ ছাড়া আশ্রয়কেন্দ্রে যেতে বারাবার তাগাদা দেওয়া হচ্ছে।
এদিকে, টানা বৃষ্টিপাতের কারণে জেলার নদ-নদীর পানি বেড়েছে। চেঙ্গী ও মাইনী নদীর পানি বেড়ে তীরবর্তী ও কয়েকটি নি¤œাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে কয়েকশ মানুষ। সড়ক তলিয়ে যাওয়ায় দীঘিনালা থেকে রাঙামাটির লংগদু ও বাঘাইছড়ি উপজেলা সড়ক যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে। সাজেকে আটকে আছে পর্যটকেরা। খাগড়াছড়ি-রাঙামাটি সড়কের মহালছড়িসহ কয়েকটি স্থানে সড়কের ওপর পানি উঠে যান চলাচল ব্যাহত হচ্ছে।
খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসক মো. সহিদুজ্জামান বলেন, ‘চেঙ্গী নদীর তলদেশ ভরাট হয়ে পড়ায় অল্প বৃষ্টিতেই শহরের কয়েকটি এলাকা প্লাবিত হয়ে পড়ছে। পাহাড়ধসের শঙ্কা আছে এমন এলাকার লোকজনদের নিরাপদ স্থানে সরে যেতে একাধিকবার মাইকিং করা হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য জেলায় ১০০টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। এ ছাড়া প্রশাসনের বিভিন্ন দফতরের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের ছুটি বাতিল করে দুর্যোগ মোকাবিলা করতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। পাহাড়ের পাদদেশে অবৈধভাবে বসবাসকারীদের বিদুৎসংযোগ বন্ধ করে দিতে বলা হয়েছে।’ দুর্যোগ মোকাবিলায় সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক।