প্রভাত সংবাদদাতা, মৌলভীবাজার : মৌলভীবাজারের সাম্প্রতিক বন্যায় হাওর এলাকায় মানুষের বাড়িঘরের পানি নামলেও গত দুই-তিন দিন ভারী বৃষ্টিপাত হওয়ায় আবারও বাড়ছে নদ-নদীর পানি। কুশিয়ারা ও জুড়ী নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এভাবে টানা বৃষ্টি হলে আবারও জেলার তিন লাখ বাড়িঘর প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দেবে। জেলার জুড়ী, বড়লেখা ও কুলাউড়া ও রাজনগর, সদর উপজেলার নি¤œাঞ্চল হাওর-তীরবর্তী বন্যাকবলিত মানুষকে রাতদিন চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। জুড়ী উপজেলার জায়ফরনগর ইউনিয়নের হাকালুকি হাওর-তীরবর্তী ভাটি শাহপুর গ্রামে বিভিন্ন এলাকার লোকজনের দুর্ভোগ বেড়েই চলেছে।
হাকালুকি হাওরের শাহগঞ্জ গ্রামের বাসিন্দা নিত্য বিশ্বাস ও হেলাল মিয়া বলেন, থাকার ঘর এবং গোয়ালঘর থেকে এখনও পানি নামছে না। গরুগুলো ব্রিজের ওপর শামিয়ানা টাঙিয়ে রাখছি আবার অন্যদের বাড়িতে রাখতেছি।
তারা আরও বলেন, বাড়িঘরের ক্ষয়ক্ষতি বেশি হয়েছে। আফাল ঢেউ ঠেকাতে কেউ কেউ বসতঘরের পাশে বাঁশের খুঁটি পুঁতে আলাদা বেড়া স্থাপন করেছেন। আবার কেউ কেউ কচুরিপানা স্তূপ করে রেখেছেন। হাওরের পাশ ঘেঁষেই শাহগঞ্জ বাজার। বাজারে যাওয়ার মূল সড়ক এখনও চার থেকে পাঁচ ফুট পানিতে তলিয়ে আছে।
জুড়ী উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) মিজানুর রহমান বলেন, বন্যায় হাওর এলাকায় চার হাজার কাঁচা বাড়িঘরের ক্ষতি হয়েছে। বাড়িঘর থেকে পানি পুরোপুরি নামেনি। পানি নেমে যাওয়ার পর আরও ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ বাড়বে।
রাজনগর কাউয়াদিঘী হাওর এলাকার বাসিন্দা আব্দুর রব বলেন, কুশিয়ারা নদীর পানি না কমা পর্যন্ত হাকালুকি হাওরের পানি কমবে না এবং বন্যা পরিস্থিতির পুরোপুরি উন্নতি হবে না।
মৌলভীবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী জাবেদ ইকবাল জানান, আবারও গত দুই-তিনদিন ধরে ভারী বৃষ্টি হওয়াতে নদ-নদীর পানি বাড়ছে। কুশিয়ারা ও জুড়ি নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তিনি আরও জানান, মনু নদী (রেলওয়ে ব্রিজ) এলাকায় বিপৎসীমার ৭ সেন্টিমিটার এবং মনু নদী (চাঁদনীঘাট) পয়েন্টে বিপৎসীমার ১৪ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ধলাই নদীর পানি বিপদসীমার ৭৫ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। কুশিয়ারা নদী (শেরপুর) পয়েন্টে বিপৎসীমার ১৪ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। একই অবস্থা জুড়ী নদী পানি বিপদসীমার ১৭৯ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
প্রভাত/টুর