প্রভাত রিপোর্ট : পুরান ঢাকার মিরনজিল্লা সুইপার কলোনীতে উচ্ছেদ অভিযান নিয়ে মুখোমুখি হরিজন সম্প্রদায় ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন (ডিএসসিসি)। কলোনীর একাংশের বসতি তুলে দিয়ে সেখানে কাঁচাবাজার করতে চায় নগর প্রশাসন। তারা বলছে, বহিরাগত ভূমিদস্যুরা জায়গাটি দখল করে সন্ত্রাস ও মাদকের অভয়ারণ্য বানিয়েছে। অন্যদিকে নিজেদের অস্তিত্বের উপর আঘাত হিসেবে দেখছেন পরিচ্ছন্নতা কর্মীরা। প্রায় চারশো বছর আগে এদেশে হরিজন সম্প্রদায়ের গোড়াপত্তন। মূলত অবাঙালি দলিত শ্রেণির মানুষদেরই হরিজন বলা হয়। ব্রিটিশ আমলে পরিচ্ছন্নতা কাজের জন্য দক্ষিণ ভারত থেকে এই দলিতদের দেশে আনা হয়। তাদের থাকতে দেয়া হয় ময়লা-আবর্জনা ফেলার ডাম্পিং জোনের পাশে বিভিন্ন কলোনীতে।
পূর্বসূরীদের রেখে যাওয়া ঠিকানায় আজও কোনমতে টিকে আছেন হরিজন সম্প্রদায়ের মানুষ। তাদের বড় একটা অংশ থাকেন বংশালের মিরনজিল্লা কলোনীতে। ৮ ফুট ফুট বাই ৮ ফুট ছোট্ট একেকটা ঘরে কোনমতে বাস করেন হরিজনরা। সমাজের চোখে তারা এখনও অস্পৃশ্য। তাই কলোনীর বাইরে মেলে না বাড়ি ভাড়া।
মিরনজিল্লা কলোনী জুড়ে এখনও উচ্ছেদ আতংক। ৩.২৭ একর জমির ২৭ শতাংশ জায়গায় একটি স্থায়ী কাঁচাবাজার করতে চায় ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন। গেলো জুন মাসের শুরুতে সেখানে উচ্ছেদ চালায় নগর প্রশাসন। ভেঙে দেয়া হয় কয়েকটি ঘর। বিষয়টি গড়ায় আদালতে। কয়েকজন আইনজীবীর আবেদনে সিটি কর্পোরেশনের উচ্ছেদে স্থগিতাদেশ দেয় আদালত।
বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রানা দাশ গুপ্ত বলেন, অসহায় দলিতদের বাস্তুচ্যুত করা সংবিধান পরিপন্থী। কারণ তারাও এখন এ দেশেরই নাগরিক।
ঢাকা দক্ষিণের মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস বলছেন, সিটি কর্পোরেশনের মালিকানাধীন এই কলোনীতে কেবল সিটি কর্পোরেশনের পরিচ্ছন্নতাকর্মীদেরই থাকার কথা। কিন্তু এই কলোনী বহিরাগত ভূমিদস্যুরা দখল করে রেখেছে। এদিকে, তাদের পুনর্বাসনের প্রসঙ্গটিও সামনে এসেছে। তবে হরিজনদের দাবি অন্য কোথাও নয়। বহুতল ভবন করে এখানেই তাদের থাকার ব্যবস্থা করা হোক।
প্রভাত/টুর