প্রভাত সংবাদ দাতা, সিরাজগঞ্জ : কমতে শুরু করেছে সিরাজগঞ্জে যমুনা নদীর পানি। গত ১২ ঘণ্টায় সিরাজগঞ্জের দুটি পয়েন্টের মধ্যে কাজিপুর পয়েন্টে যমুনার পানি ৩ সেন্টিমিটার কমেছে। অন্যদিকে সিরাজগঞ্জ শহর পয়েন্টে রয়েছে স্থির। যদিও দুটি পয়েন্টেই পানি এখনো বিপৎসীমার অনেক ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
আগামী তিন থেকে চারদিন পানি কমবে বলে ঢাকা পোস্টকে জানিয়েছে পাউবো। এরপর আবার বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এভাবেই কিছুদিন চলতে থাকলেও ভারী বন্যার সম্ভাবনা দেখছেন না তারা।
এদিকে ইতোমধ্যেই নিম্নাঞ্চলের অনেক এলাকা তলিয়ে গেছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে জেলার ৮৩ হাজার মানুষ। একই সঙ্গে চর ও নিম্নাঞ্চলের ৬হাজার ৪৯৭ হেক্টর ফসলি জমি প্লাবিত হয়েছে। এছাড়া নদী তীরবর্তী এলাকাগুলোতে দেখা দিয়েছে তীব্র ভাঙন। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে জেলার ১৮ হাজার পরিবার।
রোববার (৭ জুলাই) সকালে সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী রঞ্জিত কুমার সরকার ঢাকা পোস্টকে জানান, আজ সকাল ৬টায় সিরাজগঞ্জ শহর রক্ষা বাঁধ হার্ড পয়েন্টে যমুনা নদীর পানির সমতল রেকর্ড করা হয়েছে ১৩ দশমিক ৫১ মিটার। গত ১২ ঘণ্টায় পানি স্থির থাকলেও বিপৎসীমার ৬১ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে (বিপৎসীমা ১২ দশমিক ৯০ মিটার)। অপরদিকে, কাজিপুরের মেঘাই ঘাট পয়েন্টে পানির সমতল রেকর্ড করা হয়েছে ১৫ দশমিক ৩৬ মিটার। এই পয়েন্টে গত ১২ ঘণ্টায় ৩ সেন্টিমিটার কমে বিপৎসীমার ৫৬ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে (বিপৎসীমা ১৪.৮০ মিটার)।
রঞ্জিত কুমার সরকার বলেন, আজ থেকে পানি কমতে শুরু করেছে। আগামী তিন-চারদিন পর্যন্ত যমুনার পানি কমবে এরপর ফের বাড়তে পারে। আপাতত এভাবেই চলতে থাকলেও ভারী বন্যার সম্ভাবনা নেই। এছাড়াও ভাঙন কবলিত এলাকায় ভাঙন রোধে কাজ করা হচ্ছে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক বাবুল কুমার সূত্রধর ঢাকা পোস্টকে বলেন, আজ সকালের (৭ জুলাই) সর্বশেষ তথ্যানুযায়ী বন্যার পানিতে জেলার ৬হাজার ৪৯৭ হেক্টর জমির পাট, তিল, কলা ও মরিচসহ বিভিন্ন ফসলের ক্ষেত প্লাবিত হয়েছে। তবে এখনই ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণ করা যাবে না, এর জন্য সময় লাগবে। কারণ, যেমন পাট জাতীয় ফসল বন্যার পানিতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়না। কিন্তু অনেক ফসলই আবার ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মো. আক্তারুজ্জামান ঢাকা পোস্টকে বলেন, সর্বশেষ তথ্যানুযায়ী জেলার ৫টি উপজেলার ১৮ হাজার পরিবারের মোট ৮৩ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। আমরা ইতোমধ্যেই তাদের মাঝে ৯৫ টন চাল, ৫ লাখ টাকা ও ৩০০ প্যাকেট শুকনো খাবার বিতরণ করেছি। আমাদের আরও যথেষ্ট মজুদ আছে, সময়মতো সেগুলো বিতরণ করা হবে। দুর্যোগ মোকাবিলায় আমরা যথেষ্ট প্রস্তুত আছি।
প্রভাত/টুর