প্রভাত রিপোর্ট : সরকার ‘দেশকে রসাতলে নিয়ে যাচ্ছে’ বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। বলেন, ‘দেশ রসাতল যাচ্ছে। এই আওয়ামী লীগ সরকার যতদিন ক্ষমতায় থাকবে বাংলাদেশ ততই আরও দ্রুত রসাতলে যাবে। এই সরকার যতদিন ক্ষমতায় থাকবে আমাদের স্বাধীনতা থাকবে না, আমাদের সার্বভৌমত্ব থাকবে না, আমাদের অর্থনীতি ধ্বংস হয়ে যাবে, শিক্ষা ব্যবস্থা ধ্বংস হয়ে যাবে। এমন একটা বিষয় নাই যে, আজকে ধ্বংস হয়ে যায়নি।’
মঙ্গলবার বিকালে রাজধানীর নয়াপল্টনে মহানগর বিএনপি কার্যালয়ে এক দোয়া মাহফিলে দেশের পরিস্থিতি তুলে ধরে বিএনপি মহাসচিব এসব বলেন।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, আমরা জানি, আওয়ামী লীগ যখন ইতিপূর্বে ক্ষমতায় ছিল ১৯৭১ সাল থেকে ১৯৭৫ সাল পরবর্তী তখনও তারা একদলীয় বাকশাল প্রতিষ্ঠা করেছে। আর আজকে ভিন্ন চেহারাতে একটু ছদ্মবেশ ধারণ করে গণতন্ত্রের কথা বলে তারা গণতন্ত্রকে ধ্বংস করে দিয়েছে। লক্ষ্য করে দেখুন এই গণতন্ত্রকে ধ্বংস করতে গিয়ে তারা নির্বাচনকে ধ্বংস করেছে, দেশের অর্থনীতিকে ধ্বংস করেছে, প্রশাসনকে পুরো দলীয়করণ করেছে। এমন কোনো প্রতিষ্ঠান বাকি নেই গণতান্ত্রিক যে প্রতিষ্ঠানগুলো তারা ধ্বংস করেনি।
মির্জা ফখরুল বলেন, আমাদের এখন যেটা দরকার সকলের মধ্যে ঐক্য গড়ে তোলা। সেই ঐক্যের মধ্য দিয়ে আন্দোলনকে বেগবান করা, আরও শক্তিশালী করা এবং রাজপথে আন্দোলনের মধ্য দিয়ে এদেরকে পরাজিত করা।
‘দেশনেত্রীর মুক্তি এটাকে আলাদা করে দেখার কোনো কারণ নাই। দেশনেত্রীর মুক্তি, এই দেশের মুক্তি, গণতন্ত্রের মুক্তি সব কিছুর মূলে একটা আছে সেটা আওয়ামী লীগ। এই আওয়ামী লীগকে যদি আমরা সরাতে পারি তাহলে সব বিষয় আমরা ফিরিয়ে আনতে পারবো। আসুন সেই লক্ষ্যে আমরা কাজ করি। ইনশাল্লাহ আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করি। কেউ আমাদেরকে পরাজিত করতে পারবে না।‘ বলেন বিএনপি মহাসচিব।
নবগঠিত মহানগর বিএনপি উত্তর, দক্ষিণ এবং যুব দলের নেতৃবৃন্দকে অভিনন্দন জানান বিএনপি মহাসচিব। তিনি বলেন, ‘আমরা আশা করব, ঢাকা মহানগরের নতুন কমিটির নেতৃত্বে সংগঠন আরও শক্তিশালী হবে এবং এই সরকারকে পরাজিত করতে ভূমিকা রাখবে।’
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন, দেশনেত্রীর মুক্তি ছাড়া এদেশের মানুষের গণতান্ত্রিক মুক্তি হবে না। দেশের যে অবস্থা এই অবস্থায় মানুষের কোনো কথাই এই সরকার কর্ণপাত করছে না। তারা তাদের মতো করে চলছে, তাদের মতো করে কথা বলছে। জনগণের কথা তারা বুঝে না। আমরা তাদের ভাষা বুঝতে পারি না।
মির্জা আব্বাস বলেন, ‘আমরা বাংলায় কথা বলি, আমরা বাংলার মানুষ, সব সময় আমরা প্রতিবাদে বিশ্বাসী, পরাধীনতায় বিশ্বাসী নই— এই কথাটা সবাইকে মনে রাখতে হবে। এই কথা মনে রেখে নিজেকে সব সময়ের জন্য স্বাধীন-মুক্ত রাখার জন্য, দেশকে স্বাধীন সার্বভৌম রাখার জন্য আমি আজকে সবার প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।’
নয়াপল্টনে মহানগর বিএনপি কার্যালয়ের মাওলানা ভাসানী মিলনায়তনে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ও উত্তরের উদ্যোগে দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার আরোগ্য কামনায় এই দোয়া মাহফিল হয়। পরে দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার আশু আরোগ্য কামনায় বিশেষ মোনাজাত হয়। মোনাজাত পরিচালনা করেন ওলামা দলের আহ্বায়ক মাওলানা কাজী সেলিম রেজা।
মিলাদ মাহফিলে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আবদুস সালাম, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, শহিদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, আবদুস সালাম আজাদ, সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, কেন্দ্রীয় নেতা মীর সরাফত আলী সপু, সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, মহানগর দক্ষিণের আহ্বায়ক রফিকুল আলম মজনু, সদস্য সচিব তানভীর আহমেদ রবিন, উত্তরের আহ্বায়ক সাইফুল আলম নিরব, সদস্য সচিব আমিনুল হক, যুবদলের নবনির্বাচিত সভাপতি আব্দুল মোনায়েম মুন্না, সিনিয়র সহসভাপতি রেজাউল করীম পল, সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম নয়ন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
প্রভাত/টুর