প্রভাত রিপোর্ট : দেশবাসী তাকিয়ে আছে উচ্চ আদালতের দিকে। কেননা আদালত হচ্ছে ন্যায়বিচার, আস্থার শেষ ভরসাস্থল। আদালতের মাধ্যমে কোটা বিরোধী আন্দোলনের একটি গ্রহনযোগ্য এবং সম্মানজনক সমাধান চায় দেশবাসী। যেহেতু বিষয়টি আদালতে বিচারাধীন ইস্যু তাই নিষ্পত্তি হবে আদালতে। সরকারের নীতি নির্ধারকরাও চান একটি সম্মানজনক সমাধান। যাতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা সন্তুষ্ট হয় একই সাথে দেশপ্রেমিক বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মানও অক্ষুন্ন থাকে। আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরাও তাদের সন্তানদের নিয়ে আছেন উদ্বেগ উৎকন্ঠায়। অভিভাবকরাও চান তাদের সন্তানরা রাজপথের আন্দোলন ছেড়ে ক্লাসে ফিরে যায়। সরকারি চাকরিতে কোটা ইস্যুটি আজ ১০ জুলাই সুপ্রিম কোর্টের চেম্বার জজ এজলাসে শুনানি অনুষ্ঠিত হবে।
গতকাল মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টায় আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলাম শুনানির জন্য এ দিন ধার্য করেন। শুধু এই মামলার শুনানির দিন ধার্যের জন্য বেলা সাড়ে ১১টায় চেম্বার বিচারপতির আদালত বসেছিলেন। চেম্বার জজ আদালতে শুনানি হয় প্রতি শনি, সোম ও বুধবার। কোটা বিষয়ক রীটের শুনানী জরুরী বিষয় হিসেবে বিবেচনায় নিয়ে চেম্বর জজ বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলাম গতকাল মঙ্গলবার শুনানীর আবেদন গ্রহণ করে বুধবার দিন ধার্য করেন। চেম্বার জজ অবশ্য মামলাটি নিষ্পত্তি করতে পারবেন না। তিনি শুনানী শেষ মামলাটি নিষ্পত্তির জন্য সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের ফুল বেঞ্চে পাঠিয়ে দেবেন। প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে আপিল বিভাগের ফুল বেঞ্চ শুনানি শেষে মামলা নিষ্পত্তি করে আদেশ প্রদান করবেন।
প্রসঙ্গত, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় নির্বাহী আদেশে ২০১৮ সালের ৪ অক্টোবর নবম থেকে ১৩তম গ্রেড পর্যন্ত সরাসরি নিয়োগে মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিল করে একটি পরিপত্র জারি করে। সেখানে বলা হয়েছিল, ৯ম গ্রেড (পূর্বতন ১ম শ্রেণি) এবং ১০ম-১৩তম গ্রেড (পূর্বতন ২য় শ্রেণি) পদে সরাসরি নিয়োগের ক্ষেত্রে মেধাতালিকার ভিত্তিতে নিয়োগ দিতে হবে। ওই পদসমূহে সরাসরি নিয়োগের ক্ষেত্রে বিদ্যমান কোটা পদ্ধতি বাতিল করা হয়। নারী কোটা ১০ শতাংশ, মুক্তিযোদ্ধা কোটা ৩০ শতাংশ, জেলা কোটা ১০ শতাংশ, উপজাতি পাঁচ ও প্রতিবন্ধীদের এক শতাংশ কোটা বাতিল করা হয়।
এই পরিপত্রের মুক্তিযোদ্ধা কোটা ৩০ শতাংশ বাতিল চ্যালেঞ্জ করে মুক্তিযোদ্ধার সন্তান ও প্রজন্ম কেন্দ্রীয় কমান্ড কাউন্সিল ২০২১ সালে হাইকোর্টে রিট পিটিশন দায়ের করে। গত ৫ জুন এবিষয়ে রায় দেয় হাইকোর্ট। রায়ে সরকারের পরিপত্র বাতিল করে মুক্তিযোদ্ধা ৩০ শতাংশ কোটা বহাল রাখার আদেশ দেয়া হয়। এই রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ আবেদন করলে ৪ জুলাই আপিল বিভাগ হাইকোর্টের রায় বহাল রেখে নিয়মিত আপিল করতে বলেন। ফলে পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ ও আপিল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত সরকারি চাকরিতে কোটা বহাল থাকছে। এই কোটার বিরুদ্ধেই আন্দোলন করে যাচ্ছেন শিক্ষার্থী ও চাকরিপ্রার্থীরা।
প্রভাত/টুর