শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
Proval Logo

কোটা সংস্কার আন্দোলন অবরোধে স্থবির ঢাকা, জনদুর্ভোগ চরমে

প্রকাশিত - ১০ জুলাই, ২০২৪   ১০:৪০ পিএম
webnews24

প্রভাত রিপোর্ট : প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির সরকারি চাকরিতে কোটা পুনর্বহালের প্রতিবাদ ও কোটা সংস্কারের দাবিতে রাজধানীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়ক অবরোধ করেন শিক্ষার্থীরা। এতে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে ঢাকাবাসীকে। গতকাল বুধবার সকাল ১০টা থেকে রাস্তায় নামেন শিক্ষার্থীরা। এদিকে কোটা পদ্ধতি বাতিলের সিদ্ধান্ত অবৈধ ঘোষণা করে হাইকোর্টের দেয়া রায়ে চার সপ্তাহের স্থিতাবস্থা জারি করেছেন আপিল বিভাগ। পৃথক দুটি আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের আপিল বেঞ্চ গতকাল বুধবার এ স্থিতাবস্থা জারি করেন। তবে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা বলছেন, কোটা সংস্কারের বিষয়ে কোর্ট নয়, নির্বাহী বিভাগের কাছে সিদ্ধান্ত চান তারা। 
কারওয়ানবাজারে রেললাইনের ওপর বসে পড়েন শিক্ষার্থীরা। প্রায় এক ঘণ্টা ধরে তাদের অবরোধের কারণে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সঙ্গে রেল চলাচল বন্ধ ছিল। একই সঙ্গে রিকশা, ভ্যান, মোটরসাইকেলসহ সব ধরনের যান চলাচল বন্ধ করে  দেন আন্দোলনকারীরা। দুপুর ১টার দিকে কয়েকশ আন্দোলনকারী অবস্থান নেন কারওয়ান বাজার সংলগ্ন রেললাইনের ওপর। এসময় তারা রেললাইনের দুই পাশে কাঠের স্লিপার দিয়ে বসে পড়েন। এতে বেলা ১১টার পর কমলাপুরের সঙ্গে পশ্চিম ও পূর্বাঞ্চলের রেল যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়।
গুলিস্তান জিরোপয়েন্ট মোড় ও পল্টন মোড় অবরোধ করেন শিক্ষার্থীরা। গুলিস্তানের নুর হোসেন চত্বর দিয়ে সব ধরনের যানবাহন চলাচল বন্ধ ছিল। শিক্ষার্থীরা সকাল ১০টার পর থেকে অবরুদ্ধ করে রাখেন এই মোড়। গুলিস্তান মোড়ে শিক্ষার্থীরা চারপাশে বৃত্তাকার হয়ে বসে পড়েন। শিক্ষার্থীরা দখলে নেন পল্টন মোড়ও। রাজধানীর যাত্রাবাড়ী, সায়েদাবাদ, শ্যামপুর, জুরাইন, পুরান ঢাকার লোকজন ঢাকার অন্য অংশের সঙ্গে যোগাযোগের জন্য এই জিরোপয়েন্ট মোড় ব্যবহার করেন। কিন্তু চলাচল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বিভিন্ন দিক থেকে আসা গাড়িগুলোকে জিরোপয়েন্টের আশপাশের সড়কে থেমে থাকতে দেখা যায়।
আগারগাঁও মোড়ের চারটি রাস্তা বন্ধ করে দেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। এতে মিরপুর থেকে গাড়ি আসা-যাওয়া বন্ধ হয়ে যায়। শ্যামলী বা বিজয় সরণির দিকেও যাচ্ছে না কোনো গাড়ি। যে গাড়ি যেদিক থেকে এসেছে, সেদিকে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে। এ সময় মিরপুর ও গাবতলীর পথে চলাচলের সড়কটি দিয়েও যান চলাচল ব্যাহত হয়। জরুরি প্রয়োজনে হেঁটে ও গলিপথ ধরে রিকশায় যাতায়াত করছেন পথচারীরা।
আন্দোলনে মহাখালী থেকে বনানী পর্যন্ত রাস্তা বন্ধ ছিল। যানবাহন না চলার কারণে অনেকে হেঁটে গন্তব্যে যান। অনেকে যানজটে দীর্ঘ সময় গাড়িতে বসে রয়েছেন আশেপাশের রাস্তায়। ক্ষোভ প্রকাশ করছেন তারা। এনামুল হক নামের একজন বলেন, কাজের সময় এভাবে একটানা এক জায়গায় বসে আছি। বড় ক্ষতি হয়ে যাচ্ছে। সকাল ১০টা থেকে এখনো যানজটে আটকে আছি। এখনো জানি না কখন রাস্তা ছাড়বে। এ রকম আর কত দিন চলবে?
এদিকে একই সময় রামপুরা থেকে শান্তিনগর, কাকরাইল পর্যন্ত রাস্তায় যানজট ছিল না। রাস্তার পরিস্থিতি স্বাভাবিক দেখা গেছে। প্রতিদিনের মতো আবুল হোটেলের মোড় ও মেরুল বাড্ডা এলাকায় যানবাহনের চাপ বেশি ছিল। এ রাস্তায় শিক্ষার্থীদের আন্দোলন চোখে পড়েনি।
জরুরি কাজ ছাড়া গতকাল সকাল থেকে রাজধানীতে সড়কে বের হননি অনেকেই। এ কারণে বেশিরভাগ সড়ক রয়েছে অনেকটা ফাঁকা। কোথাও কোনো সিগন্যাল ছাড়া পার হতে পারছে যানবাহন। সড়কে বাসসহ অন্যান্য যানবাহনের সংখ্যাও কম চলাচল করতে দেখা গেছে।
বাংলা ব্লকেড কর্মসূচিতে সতর্ক ছিল আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। পূর্বনির্ধারিত স্থানে, এমনকি মোড়ে মোড়ে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়। সড়কে ব্যারিকেড প্রস্তুত রাখে পুলিশ। অপ্রীতিকর পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রস্তুত পুলিশ সদস্যরা।
প্রভাত/টুর

ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে সঙ্গে থাকুন
ওয়েব নিউজ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

আরও পড়ুন