বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
Proval Logo

তিস্তা চুক্তি অধরাই থাকছে!

প্রকাশিত - ১৬ জুলাই, ২০২৪   ১২:২৩ এএম
webnews24

প্রভাত রিপোর্ট : তিস্তা মহাপরিকল্পনায় ভারতের সম্পৃক্ততা নিয়ে চীন বৈরী অবস্থান নেয় কি না সংশয় ছিল বাংলাদেশের। শঙ্কাও ছিল যে, চীন বিপক্ষে থাকলে গোটা প্রকল্পের ভবিষ্যৎই অনিশ্চিত হয় পড়বে। নানা টানাপড়েন শুরু হবে। কিন্তু তেমন কিছু হবে না, ন্যূনতম শঙ্কাও নেই। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে চীনের সর্বোচ্চ নেতা সাফ জানিয়ে দিয়েছেন যে, বাংলাদেশের পাশে চীন সর্বোতভাবেই থাকবে। জনগণের ভাগ্যোন্নয়নে বাংলাদেশ চীনকে পাশে পাবে। বাংলাদেশ চাইলেই কেবল তিস্তা মহাপরিকল্পনায় চীন প্রয়োজনীয় ভূমিকা রাখবে। এমনকি প্রকল্প বাস্তবায়ন কাজে অংশ না নিয়েও চীন এতে আর্থিক সহযোগিতা করবে। সরকারের উচ্চ পর্যায়ের সূত্রে এ কথা জানা গেছে।
ভারতের বিশেষজ্ঞ দল তিস্তা মহাপরিকল্পনা নিয়ে গবেষণার জন্য বাংলাদেশ আসবেন। বাংলাদেশের কোন কোন অঞ্চল ঘিরে তিস্তা প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হবে, কত শত মাইল খাল খনন করতে হবে, মোট কি পরিমাণ কৃষি জমি প্রকল্পভুক্ত হবে, কতজন ক্ষতিগ্রস্ত হবেন, তাদের পুনর্বাসনÑ প্রভৃতি দিক সম্পর্কে বিস্তারিত জরিপ করা হবে। কোন কোন জেলার কত জমি সেচের আওতায় আসবে, জলাধারের দৈর্ঘ্য কত হবে, তাতে কি পরিমাণ পানি ধারণ করা যাবে, বাংলাদেশের কত প্রয়োজন হবেÑ বিস্তারিত যাচাই করা হবে। তিস্তার দুই পাড়ে শিল্প-কারখানা সামাজিক-সাংস্কৃতিক-অর্থনৈতিক, স্বাস্থ্য, শিক্ষাসহ জনস্বার্থ সংশ্লিষ্ট প্রকল্প স্থাপন নিয়ে গবেষণা করা হবে। 
চীনা বিশেষজ্ঞরা তিস্তা নিয়ে জরিপ কাজ করেছে। তারা তিস্তার দুই পাড়ে শিল্প-কারখানা, বিশেষকরে গার্মেন্ট ফ্যাক্টরি স্থাপন কর্মসংস্থান বিশ^বিদ্যালয়, স্কুল-কলেজ, মেডিকেল কলেজ প্রতিষ্ঠার পরিকল্পনা রয়েছে তাদের। এখন ভারতীয় বিশেষজ্ঞদের মাধ্যমে জরিপ চালানো হবে। ভারতীয়রা চীনা বিশেষজ্ঞদের জরিপভিত্তিক প্রতিবেদন বিবেচনায় নিয়ে সমন্বিত কর্মপরিকল্পনা চূড়ান্ত করবে বলে জানা গেছে।
এদিকে দেশের পানি সম্পদ বিশেষজ্ঞ এবং তিস্তা পাড়ের মানুষদের মধ্যে প্রবলভাবে আলোড়িত হচ্ছে যে, তিস্তা চুক্তির কি হবে। তিস্তা পাড়ের মানুষদের ভগ্যে কি ঘটবে? তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নে সময় লাগবে প্রায় সাত বছর। পাঁচ বছরের মধ্যে বাস্তবায়নের পরিকল্পনা থাকলেও বিভিন্ন বাস্তবতায় তা সম্ভব হবে না বলেই সংশ্লিষ্টরা মনে করেন। এই দীর্ঘ সময়ে বৃহত্তর রংপুর, বগুড়াসহ উত্তরাঞ্চলের মানুষ কি তিস্তার পানি হতে বঞ্চিতই থাকবেন! 
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাম্প্রতিক ভারত সফরকালে তিস্তার পানি বণ্টন চুক্তি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। কিন্তু কোন সিদ্ধান্তের সুস্পষ্ট ঘোষণা আসেনি। ভারতের প্রধানমন্ত্রী তাঁর গত মেয়াদকালেই তিস্তা চুক্তি সম্পাদনের ঘোষণা দিয়েছিলেন। নতুন মেয়াদে ক্ষমতায় এসে তিস্তা চুক্তির কথা এড়িয়ে তিস্তা মহাপরিকল্পনার কথা বলছেন। নরেন্দ্র মোদি তিস্তা সমস্যার সম্মানজনক সমাধানের পক্ষে হলেও সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়ে আছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। মমতাকে ছাড়া তিস্তা ও গঙ্গার পানি বণ্টন চুক্তি সম্পাদনের পক্ষে নয় তৃণমূল। বাংলাদেশের সঙ্গে তিস্তা-গঙ্গা চুক্তি নিয়ে নয়াদিল্লির আলোচনায় মমতা সক্রিয় ভূমিকা রাখতে চান। উজানে সেচ প্রকল্পের মাধ্যমে তিস্তার পানি সরিয়ে নেয়ার বিপক্ষে মমতা। গঙ্গার পানিও একইভাবে উজান থেকেই প্রত্যাহার করে নয়া হচ্ছে। এতেকরে হলদিয়া বন্দর, কলকাতা বন্দর, জলপাইগুড়িসহ পশ্চিমবঙ্গের অনেক এলাকায় পানির সংকটের কথা বলে আসছেন মমতা। মমতা তাঁর সংকটের উপর শতভাগ জোর দিচ্ছেন, ভাটির দেশ হিসেবে বাংলাদেশের প্রাপ্যতাকে তিনি বিবেচনায় নিতেই আগ্রহী নন। নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে মমতার বিরোধ এখানেই।

প্রভাত/টুর

ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে সঙ্গে থাকুন
ওয়েব নিউজ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

আরও পড়ুন