শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
Proval Logo

স্বাভাবিক হচ্ছে জনজীবন

প্রকাশিত - ২৫ জুলাই, ২০২৪   ০৯:০৪ এএম
webnews24

আরাফাত দাড়িয়া : প্রাণাঞ্চলতা ফিরতে শুরু করেছে সারাদেশে। সীমিত আকারে অফিস-আদালত, ব্যাংকসহ আর্থিক প্রতিষ্ঠান খুলেছে। আর্থিক প্রতিষ্ঠান খোলায় লেনদেন করতে পেরেছেন ব্যবসায়ীরা। কর্ম ব্যস্ততার মাঝে নিজেদের ফিরে পাওয়ায় স্বস্তি পাচ্ছেন দেশবাসী। পোশাক শিল্প কারখানা খুলেছে, বন্দরে ওঠা-নামা করেছে মালামাল। বলতে গেলে গতকাল সারাদেশে প্রাণাঞ্চলতা ফিরে এসেছে। কিন্তু এতকিছুর পরও জনমনে এখনো বিরাজ করছে চাপা আতংক।বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকে পুঁজি করে একটি বিশেষ মহল জ্বালাও পোড়াও নাশকতার মাধ্যমে সরকারি স্থাপন ধ্বংস করে ছয়দিন অচল করে রাখা হয়েছিল ঢাকাসহ সারাদেশ। কারফিউ জারি এবং দেশব্যাপী সেনাবাহিনী মোতায়েন করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হলেও অনেক কিছুই অনিশ্চিত। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো কবে খুলে দেয়া হবে তা এখনও সুস্পষ্টভাবে জানা যায়নি। বিদ্যাপাঠ খুলে দেয়ার আগে ছাত্রদের সাথে সরকারের শান্তিপূর্ণ আলোচনা না হলে পুনরায় অশান্তি সৃষ্টি হতে পারে বলে অনেকে আশঙ্কা করছেন। 
গত মঙ্গলবার বিকেলে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়করা যে বিবৃতি দিয়েছেন তাতে কিছুটা আশংকা থেকেই যাচ্ছে। আজকের মধ্যে তাদের চার দফা দাবি আদায় না হলে পরিস্থিতি কোনদিকে যায় সেটাও ভাবাচ্ছে অনেককে। 
নাশকতার কারণে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে মিরপুর১০ নম্বরের ষ্টেশন ফলে বন্ধ রয়েছে মেট্টোরেল। সীমিত সময়ের জন্য অফিস আদালত খুলে দেয়ার পর রাস্তায় যানজটের সৃষ্টি হয়। নগরবাসী বুঝতে পেরেছে মেট্্েরা রেলের সুবিধা এবং অসুবিধা। কারফিউ থাকাকালিন বন্ধ ছিলা সমস্ত লেনদেন। এরমধ্যে তিনদিন ছিলো সাধারণ ছুটি। বিদ্যুৎ ও গ্যাসের গ্রাহকদের ভোগান্তি।কারফিউ শিথিল থাকলেও রাজপথে সেনাবাহিনীর পদচারণায় নাগরকিদের মধ্যে নেমে এসেছে স্বস্তি। জনগণ আশা করছে খুব শীঘ্রই জনজীবনে স্বাভাবিক অবস্থা ফিরে আসবে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক সারজিস আলম মঙ্গলবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি মিলনায়তনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘আমরা কোন সংঘাত চাইনা। শুরু থেকে আমরা আমাদের দাবি নিয়ে মাঠে আছি। কিন্তু সরকার আমাদের কথা শোনেনি। আমাদের দাবি এখন চারটি। আগামী বৃহস্পতিবার (আজ) মধ্যে এই চার দফা দাবি পূরণ করলে আমাদের এই আন্দোলন যেখান থেকে শুরু হয়েছিলো সেই রাজু ভাস্কর্যে গিয়ে আন্দোলনের সমাপ্তি ঘটাবো। আর এই দাবি মানলে সরকারের সাথে আট দফা নিয়েও আমরা আলোচনায় বসবো।’ 
চার দফা দাবির মধ্যে অন্যতম কারফিউ তুলে নেয়া। কিন্তু রাজধানীর বেশ কয়েকটি স্পর্শকাতর জায়গা রয়েছে যেখানে দুর্বত্তরা বিশৃংখলা সৃষ্টি করে জানমালের ক্ষতি করেছে সেগুলো নিরাপত্তা নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত সরকার কারফিউ তুলবেনা এটা মোটামুটি নিশ্চিত। তাছাড়া, ডিএমপি থেকে জানা গেছে, যারা রাষ্ট্রের সম্পদ নষ্ট করেছে এবং সন্ত্রাসী কর্মকান্ডে লিপ্ত ছিল তাদের আইনের আওতায় না আনা পর্যন্ত আইন শৃংখলাবাহিনী মাঠে থাকবে। কিন্তু বৈষম্যবিরোধী ছাত্ররা রাজপথে আইন শৃংখলাবাহিনী থাকুক সেটা চাননা বলে স্পষ্ট করে দিয়েছেন। এসব কারণেই জনগনের মনে প্রশ্ন উঠেছে পরিস্থিতি আসলে কোনদিকে যাচ্ছে। 
এদিকে স্কুল-কলেজের অভিভাবকরা অভিযোগ করেছেন, বিদ্যাপাঠ না খুললে পড়াশুনায় ব্যঘাত ঘটছে, বাড়ছে সেশনজট, এইচএসসি সমমানা পরীক্ষাও পিছিয়ে দেয়া হচ্ছে। শিক্ষার্থীরা জানেন না, কবে তারা আবার ক্লাস রুমে ফিরতে পারবেন। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক হাসনাত বলেন, ‘আমাদের দাবি বিশ্ববিদ্যালয় খুলে দিতে হবে। হলগুলো খুলতে হবে। সরকার বলছে আমাদের ক্লাসে ফিরতে, কিন্তু ক্লাসে ফেরার পরিবেশ তো দিতে হবে। অনতিলম্বে আমাদের ক্লাসরুম খুলে দিতে হবে।’ 
পরিস্থিতি যেদিকেই যাক না কেন, আপাতত জনজীবনে স্বস্তি ফিরতে শুরু করেছে। গতকাল সচিবালয়সহ গুরুত্বপূর্ণ সরকারি অফিসে যোগ দিতে সবাই অফিস করেছেন। বেসরকারী চাকরিজীবিদেরও উপস্থিতি ছিলো লক্ষ্যনীয়। 
 

ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে সঙ্গে থাকুন
ওয়েব নিউজ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

আরও পড়ুন