প্রভাত রিপোর্ট : বাজারে পণ্যমূল্যে আগুন জ্বলছে। আগুনের লেলিহানে নি¤œবিত্ত, নি¤œমধ্যবিত্ত, মধ্যবিত্তসহ , সর্বশ্রেনীর মানুষ আক্রান্ত।শাক-সবজি, মাছ-মাংস,ডিমসহ জীবনধারনের জন্য জরুরি এমন কোন পণ্য নেই যার দাম দশ-পনেরো টাকা থেকে বিশ-পঁচিশ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। গত কয়েকদিন ধরে চলমান নিয়ন্ত্রণহীন এ অবস্থায় অতিষ্ট দেশের মানুষ।
এ অবস্থা কেবল রাজধানী ঢাকা শহরেই নয়,চট্টগ্রাম ও অন্যান্য মহানগরসহ দেশের সকল জেলা-উপজেলায় জিনিসপত্রের এই অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি। যানবাহনের অভাবে পণ্য সরবরাহ বিঘিœত হওয়ায় এমন অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। বুধবার যানবাহন চলাচল ও বাজারে পণ্য সরবরাহ বাড়লেও দাম কমেনি।
শিক্ষার্থীদের কোটাবিরোধী শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে বহিরাগতদের চরম হিংসাত্মক কর্মকান্ডের ফলে জনজীবন পুরোপুরি বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। গোটা দেশ অচল হয়ে পড়লে পণ্যবাহি ট্রাক চলাচলও বন্ধ হয়ে যায়। বাজারে সরবরাহ না থাকায় ও সরবরাহ স্বল্পতায় খোলাবাজারে তার বিরুপ প্রভাব পড়েছে। সেই সাথে একশ্রেনীর অতি মুনাফালোভী ব্যবসায়ি এর সুযোগ নিচ্ছে। গতকাল বুধবার সেনাবাহিনী ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষকারি বাহিনীর সদস্যদের জোরালো ভূমিকা জনজীবনে অনেকটা স্বস্তি ফিরে এসেছে। কারফিউ শিথিলতার পরিধি বেড়েছে । রাজধানীসহ সারাদেশেই যানবাহন চলাচল শুরু করেছে। মফস্বল থেকে কৃষি পণ্যবাহী যান বাজারে আসছে। বাজারে সরবরাহও বেড়েছে। কিন্তু দাম কমছে না।
গতকাল বুধবার রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে চারশ থেকে সাড়ে চারশ টাক কেজি দরে বিক্রি হয়েছে কাঁচা মরিচ। গোলযোগ, হিংসাত্মক কর্মকান্ড শুরু হওয়ার আগে দাম ছিল তিনশ থেকে সাড়ে তিনশ টাকা। বেগুনের কেজি একশ বিশ টাকা,আগে ছিল সত্তর-আশি টাকা, ঢেঁড়স বিক্রি হচ্ছে একশ টাকায়,আগে ছিল সত্তর থেকে আশি টাকা। করলার কেজি ছিল নব্বুই থেকে একশ টাকা। গতকাল বিক্র হয়েছে একশ থেকে একশ বিশ টাকায়। কাকরোলের কেজি ষাট-সত্তর টাকা থেকে আশি টাকায় উঠেছে। ৫০-৬০ টাকার পেঁপের কেজি এখন সত্তুর টাকা। একটি মাঝারি আকারের লাউয়ের দাম ছিল ৮০ থেকে ৯০ টাকা, সেই আকারের লাউ গতকাল বিক্রি হয়েছে ১২০-১৩০ টাকা। আলুর কেজি সত্তর টাকা,ক’দিন আগেও ছিল ৬০-৬৫ টাকা। একটি চাল কুমড়া বিক্রি হচ্ছে ৭০-৮০ টাকায়। আগে ছিল ৫০-৬০ টাকা। ধনে পাতার আঁটির দাম ছিল ১০ টাকা,এখন তা-ই বিক্রি হচ্ছে ২০-২৫ টাকায়। এদিকে ডিমের দামও বেড়েছে। ডিমের ডজন ছিল ১৫৫ টাকা,এখন বিক্রি হচ্ছে ১৬৫ টাকায়। ব্রয়লার মুরগীর কেজি ১৮০ থেকে ১৯০ টাকায় উঠেছে। গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে সাড়ে ৮’শ টাকা ও খাসির মাংস ১২’শ টাকা কেজি।
মাছের বাজারেও আগুন দাউ দাউ করে জ্বলছে। এক কেজি দেশি পুটির দাম হাজার টাকা, সরপুটি সাড়ে ৪’শ থেকে ৫’শ টাকা, মলয়া ৬’শ থেকে ৭’শ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। টেংরার কেজি ৮’শ থেকে ৯’শ টাকা, কই মাছ ১২’শ থেকে ১৪’শ টাকা, শিং মাছ ৮’শ থেকে ৯’শ টাকা। চিংড়ীর কেজি ১৪’শ থেকে ১৫’শ টাকা। এক কেজি ওজনের ইলিশ মাছ ১৮’শ থেকে ২ হাজার টাকা এবং ৭’শ -৮’শ গ্রামের ইলিশের কেজি ১৬’শ থেকে ১৭’শ টাকা। শুধু ইলিশ নয়, ছোট মাছসহ অন্যান্য মাছেও হাত দেয়া দায়।
প্রভাত/টুর