প্রভাত রিপোর্ট :মোবাইল ইন্টারনেটে ফের ফেসবুক বন্ধ। এবার সাথে আছে টেলিগ্রামও। মোবাইলে ফেইসবুক ও টেলিগ্রাম অ্যাপ ব্যবহার করতে না পারার কথা বলছেন ব্যবহারকারীরা। তবে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটে এ মাধ্যম দুটি ব্যবহার করা যাচ্ছে। কোটা সংস্কার আন্দোলনের মধ্যে ফেসবুক-মেসেঞ্জার বন্ধ ছিল ২ সপ্তাহ। বুধবার সেগুলো চালু হলেও দুদিনের মাথায় শুক্রবার ফের ফেসবুক বন্ধের অভিযোগ করছেন ব্যবহারকারীরা। যদিও বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন বলছে, তারা ফেসবুক বন্ধ করেনি। সেরকম নির্দেশনাও পায়নি। সাইফুল ইসলাম নামে এক ফ্রিল্যান্সার বলেন, দুপুরের পর থেকে মোবাইল নেটওয়ার্কে ফেসবুক এবং টেলিগ্রাম ব্যবহার করা যাচ্ছে না। আমাদের কাজই অনলাইন কেন্দ্রিক। এ রকম চলতে থাকলে রাস্তায় নামা ছাড়া আর কোনো উপায় থাকবে না। মো. আবদুল্লাহ আল মামুন নামের একজন বলেন, আবারও বন্ধ ফেসবুক, সঙ্গে টেলিগ্রামও। চলছে না মোবাইল নেটওয়ার্কে। কোটা সংস্কার আন্দোলনের মধ্যে সহিংসতা শুরু হলে গেল ১৭ জুলাই রাত থেকে ২ সপ্তাহ ফেইসবুক, মেসেঞ্জার, হোয়াটসঅ্যাপ, ইনস্টাগ্রাম ও টিকটক বন্ধ ছিল। পরে ৩১ জুলাই বেলা ২টার পর থেকে এসব সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ফের চালু হয়। এছাড়া ১৭ জুলাই রাত থেকে মোবাইল ইন্টারনেট এবং ১৮ জুলাই রাতে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট বন্ধ হয়ে যায়। ৫ দিন পর ২৩ জুলাই ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সংযোগ সীমিত পরিসরে ফেরে। আর ১০ দিন পর ২৮ জুলাই চালু হয় মোবাইল ইন্টারনেট। ধরিগতির ইন্টারনেট ফিরলেও বন্ধ ছিল সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলো।
ফেসবুক ব্যবহারকারীরা বলছেন, শুক্রবার দুপুর সাড়ে ১২টার পর থেকে মোবাইল নেটওয়ার্কে ফেসবুক ব্যবহার করতে পারছেন না। ব্যবহার করা যাচ্ছে না টেলিগ্রামও। এ বিষয়ে জানতে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকের মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন করলেও তিনি ধরেননি। তবে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের ভাইস চেয়ারম্যান মো. আমিনুল হক বলেন, ফেসবুক বন্ধের কোনো নির্দেশনা পাইনি বা আমরা এরকম নির্দেশনা দিইনি। আমরা তো ফেসবুক উন্মুক্ত করে দিলাম বরং।
তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী এর আগে কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ায় ফেসবুকের ভূমিকার কথা বলেছিলেন। ঘটনার ব্যাখ্যা চেয়ে এসব প্ল্যাটফর্মের কাছে চিঠি দেয়ার কথা জানিয়েছিলেন। এরপর ৩১ জুলাই ফেসবুক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে অনলাইনে বৈঠক করেন। ইউটিউব থেকে ই-মেইলে ব্যাখ্যা এবং টিকটকের প্রতিনিধি সেদিন হাজির হয়ে ব্যাখ্যা দেন। এরপর এসব প্ল্যাটফর্ম খোলে। সচিবালয়ে গত বৃহস্পতিবার ব্রিফিংয়ে প্রতিমন্ত্রী পলক বলেন, ১৬ থেকে ১৮ জুলাই পর্যন্ত ফেইসবুক সরকারের অনুরোধের বিপরীতে ১৩ শতাংশ এবং ২৫ থেকে ২৭ জুলাই পর্যন্ত ৭ শতাংশের বেশি আধেয় সরিয়েছে। ইউটিউব ১৭ থেকে ২৬ জুলাই পর্যন্ত সরিয়েছে প্রায় ২১ শতাংশ। টিকটক সরিয়েছে প্রায় ৬৮ শতাংশ। কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সহিংসতায় টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি খাতে প্রায় ১৮ হাজার কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে বলেও জানান তিনি।
প্রভাত/টুর