বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৪ আশ্বিন ১৪৩১
Proval Logo

সঞ্চালনেই গ্যাসের সিস্টেম লসের অভিযোগ

প্রকাশিত - ২১ আগস্ট, ২০২৪   ০৭:৩৯ পিএম
webnews24

প্রভাত রিপোর্ট : সঞ্চালনেই আড়াই থেকে সাড়ে ৩ ভাগ গ্যাসের সিস্টেম লসের অভিযোগ উঠেছে। গত জানুয়ারি থেকে এপ্রিল পর্যন্ত তিন মাসের গ্যাস সঞ্চালন বিবেচনা করে পেট্রোবাংলা যে তথ্য দিয়েছে, তাতে এমন চিত্র দেখা যাচ্ছে।
পেট্রোবাংলা সঞ্চালনে এই সিস্টেম লস কমানোর চেষ্টা করলেও গ্যাস ট্রান্সমিশন কোম্পানি (জিটিসিএল) পেট্রোবাংলা চেয়ারম্যানের অপসারণ চেয়ে উল্টো মানববন্ধন করে চাপ প্রয়োগ করছে বলেও অভিযোগ পাওয়া গেছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, গত ১ আগস্ট ২০২২ সালে পেট্রোবাংলা একটি বৈঠক করে সিদ্ধান্ত নেয় খনিগুলো থেকে গ্যাস সঞ্চালন করে যে পয়েন্টে জিটিসিএল বিতরণ কোম্পানিকে গ্যাস বুঝিয়ে দেয়, ওই পয়েন্টে একটি মিটারিং সিস্টেম করা হবে। গত ১ জানুয়ারি থেকে যা কার্যকর করে পেট্রোবাংলা।
এতে দেখা যায়, চলতি বছরের জানুয়ারিতে গ্যাস খনিগুলো থেকে জিটিসিএলকে ১৭৯ কোটি ৪১ লাখ ৭৭ হাজার ২৪৭ ঘনমিটার গ্যাস দেয়া হয়। কিন্তু বিতরণ কোম্পানিকে তারা সরবরাহ করতে পেরেছে ১৭৪ কোটি ১১ লাখ ৭৩ হাজার ৩১ ঘনফুট। অর্থাৎ খনি থেকে জিটিসিএলের পাইপলাইন দিয়ে আসার সময় ২ দশমিক ৯৫ ভাগ গ্যাসের সঞ্চালন ক্ষতি হয়েছে। সঞ্চালন ক্ষতি হওয়া মোট গ্যাসের পরিমাণ ৫ কোটি ৩০ লাখ ৪ হাজার ২১৬ ঘনমিটার।
একইভাবে গত ফেব্রুয়ারিতে ১৬২ কোটি ২৪ লাখ ৩৭ হাজার ৫০৪ ঘনফুট গ্যাস সঞ্চালন করে জিটিসিএল। এর মধ্যে ২ দশমিক ৯৯ ভাগ সঞ্চালন ক্ষতি বাদ দিয়ে ১৫৭ কোটি ৩৮ লাখ ৫৮ হাজার ৪৭২ ঘনমিটার গ্যাস বিতরণ কোম্পানির কাছে পৌঁছে দিয়েছে। ওই মাসেও তারা ৪ কোটি ৮৫ লাখ ৭৯ হাজার ৭৭ ঘনমিটার গ্যাসের সঞ্চালন ক্ষতি করেছে।
একইভাবে গত মার্চে জিটিসিএল গ্যাস নিয়েছে ২০২ কোটি ৪২ লাখ ৭৫ হাজার ৭১০ ঘনমিটার। বিতরণ কোম্পানির কাছে সরবরাহ করেছে ১৯৬ কোটি ১৪ লাখ ৬৮ হাজার ৮২৩ ঘনিমটার। অর্থাৎ ৩ দশমিক ১০ ভাগ হারে সিস্টেম লসের পরিমাণ ছিল ৬ কোটি ২৮ লাখ ৬ হাজার ৮৭৮ ঘনমিটার।
এপ্রিলে ১৮৩ কোটি ২ লাখ ২১ হাজার ১৮৮ ঘনমিটার গ্যাস নিয়ে তারা সরবরাহ করেছে ১৭৮ কোটি ৬১ লাখ ৫৫ হাচার ৬৮৮ ঘনমিটার। অর্থাৎ ২ দশমিক ৪১ ভাগ হারে সঞ্চালন ক্ষতির পরিমাণ ৪ কোটি ৪০ লাখ ৬৫ হাজার ৫০০ ঘনমিটার।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পেট্রোবাংলার এক কর্মকর্তা বলেন, আগে বিতরণ কোম্পানিগুলো যে গ্যাস নিচ্ছে এবং যে বিল আদায় করছে, তা যোগ-বিয়োগ করে সিস্টেম লস নির্ধারণ করা হতো। কিন্তু বিতরণ কোম্পানির তরফ থেকে দিনের পর দিন অভিযোগ করা হয়, তারা জিটিসিএলের কাছ থেকেই গ্যাস কম পাচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে ২০০৮ সাল থেকেই আলোচনা চলছিল। এ নিয়ে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনও একাধিকবার নির্দেশনা দেয়। তিনি আরও বলেন, এবার জিটিসিএল যে পয়েন্ট থেকে বিতরণ কোম্পানিকে গ্যাস বুঝিয়ে দিচ্ছে, সেই পয়েন্টে মিটারিং করা হয়। দেখা গেছে সত্যি সত্যি তারা গ্যাস কম পাচ্ছে। জিটিসিএল যেহেতু গ্যাস বিক্রি করে না, তাই এই গ্যাস কোথায় কীভাবে হারিয়ে যাচ্ছে, তা দেখার দায়িত্বও তাদের। নিয়ম অনুযায়ী যেহেতু পাইপলাইনের মাধ্যমে গ্যাস যাচ্ছে, তাই অপচয়ের কোনও সুযোগ নেই। কিন্তু জিটিসিএল এখন এটি মানতে রাজি না। উল্টো তারা বিষয়টি অস্বীকার করছে বলেও অভিযোগ করেন এই কর্মকর্তা।
জানতে চাইলে জিটিসিএলের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা  বলেন, জিটিসিএল থেকে সিস্টেম লস হওয়ার সুযোগ নেই। আমরা শুধু গ্যাস পরিবহন করে বিতরণ লাইনে সরবরাহ করি। এই সঞ্চালন লাইনটি এত চাপে থাকে যে সেটি ফুটো করে বা অন্য কোনও উপায়ে গ্যাস চুরি সম্ভব নয়। যদি সিস্টেম লসের কথাই ওঠে, তাহলে তা বিতরণ লাইনে যাওয়ার পর থেকে পারে বলে তিনি মনে করেন।

ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে সঙ্গে থাকুন
ওয়েব নিউজ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

আরও পড়ুন