বুধবার, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৩ আশ্বিন ১৪৩১
Proval Logo

বন্যার্ত মানুষের কষ্টে স্বতঃস্ফূর্তভাবেই ত্রাণ দিচ্ছেন সবাই

প্রকাশিত - ২৫ আগস্ট, ২০২৪   ০৯:১১ পিএম
webnews24

প্রভাত রিপোর্ট : দেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে চলমান বন্যা পরিস্থিতিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের উদ্যোগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) জিমনেশিয়ামে চলছে গণত্রাণ কর্মসূচি। প্রতিদিন সকাল থেকে অসংখ্য মানুষ ত্রাণসামগ্রী নিয়ে আসছেন। এতে করে ক্রমেই জিমনেশিয়ামে যেন ত্রাণসামগ্রী রাখার তিল ঠাঁই নাই। গতকাল রবিবার  সরেজমিনে ঢাবির জিমনেশিয়ামে গেলে দেখা যায়, প্রতি মুহূর্তেই ত্রাণ সাহায্য নিয়ে আসছেন কেউ না কেউ। কাপড়, খাবার, ওষুধ, স্যানিটারি ন্যাপকিনসহ বিভিন্ন সাহায্য নিয়ে আসা হচ্ছে।
রাজধানীর খিলগাঁও থেকে আসা তাহমিনা চৌধুরী বলেন, আমি বানভাসিদের জন্য কাপড় ও খাবার নিয়ে এসেছি। দুর্যোগের এ সময়ে তাদের জন্য কিছু করতে পারা একটা মানবিক দায়িত্বের মধ্যে পড়ে। ধানমন্ডি থেকে আসা মারিয়া তাবাসসুম বলেন, বন্যাকবলিত মানুষরা নানাবিধ অসুখে পড়ছেন। বিশেষত নারীরা চরমভাবে স্যানিটারি প্যাডের সংকটে আছেন। সে কষ্ট লাঘবে আমরা চেষ্টা করেছি কিছু ওষুধ ও প্যাড পাঠানোর।
এদিকে, জনসাধারণের পাশাপাশি বিভিন্ন কোম্পানি, এনজিও, বেসরকারি সংস্থা থেকেও ত্রাণের সাহায্য আসছে। বানভাসিদের জন্য আসা এসব ত্রাণসামগ্রীতে ইতিমধ্যেই ভরে গেছে জিমনেসিয়ামে জায়গা। পরবর্তী সময়ে ত্রাণসামগ্রী কোথায় রাখা হবে সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত জানানো হয়নি।
কর্তব্যরত এক স্বেচ্ছাসেবক বলেন, যে হারে ত্রাণসামগ্রী আসছে, তাতে জিমনেশিয়াম পরিপূর্ণ। এরপর কোথায় ত্রাণসামগ্রী রাখা হবে, তা সিদ্ধান্ত নিয়ে জানানো হবে। অন্যদিকে, বন্যার্তদের সহায়তায় নগদ অর্থ গ্রহণ করা হচ্ছে টিএসসিতে। সেখানের বন্যা সহায়তা বুথে গিয়ে যে কেউ নগদ অর্থ সহায়তা হিসেবে দিতে পারছেন।
দেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে চলমান বন্যা পরিস্থিতিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের উদ্যোগে গতকালও টিএসসিতে চলেছে গণত্রাণ কর্মসূচি। সকাল থেকে বৃষ্টি হলেও এখন স্বতঃস্ফূর্তভাবেই ত্রাণ দিতে আসছেন অনেকে। তবে ইতিমধ্যে টিএসসিতে ত্রাণ মজুদ রাখার স্থান সংকুলান না হওয়ায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জিমনেসিয়ানে ত্রাণ নেয়া হয়।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিতে গিয়ে দেখা যায়, নগরীর নানা স্থান থেকে অনেকেই সাহায্য করতে আসছেন। সকালে বৃষ্টির ফলে কিছুটা ভোগান্তি হলেও তা উপেক্ষা করে এসেছেন অনেকেই। তবে টিএসসিতে আপাতত আর ত্রাণ নেয়া হচ্ছে না, শুধু নগদ অর্থ গ্রহণ করা হচ্ছে। স্বেচ্ছাসেবকরা কিছু সময় পর পর মাইকে বলছেন, ত্রাণ সাহায্য জিমনেসিয়াম ও ডাকসু ভবনে নেয়া হচ্ছে। ফলে যারা নগদ অর্থ সাহায্য করতে চাইছেন তারা সহজেই টিএসসিতে নির্ধারিত বুথে টাকা দিতে পারছেন। কথা হয় অর্থ সাহায্য দিতে আসা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী তাসনিম ফারিয়ার সাথে। তিনি বলেন, বন্যার্ত মানুষরা আজ দুঃসময় পার করছেন। তাদের পাশে দাঁড়ানোর জন্যই আমার এ ক্ষুদ্র প্রচেষ্টা।
ছোট দুই শিশুকে নিয়ে সাহায্য করতে এসেছেন গৃহিণী আফরোজা। তিনি বলেন, বন্যার্ত মানুষের কষ্ট দেখার পর মনে হলো তাদের পাশে দাঁড়ানো উচিত। তাই এখানে এসেছি। বাচ্চাদেরকে বললাম, তোমরাও নিজ হাতে সাহায্য করবে, ওরা আনন্দের সাথেই তা করেছে।
এদিকে টিএসসির ভেতরে গেলে দেখা যায়, স্বেচ্ছাসেবীরা ত্রাণসামগ্রী গোছানোর পাশাপাশি তা পৌঁছে দেওয়ার জন্য প্রস্তুত করছেন। বৃষ্টির হাত থেকে ত্রাণসামগ্রী রক্ষার জন্য তা ঢেকে দেয়া হয়েছে। এক স্বেচ্ছাসেবক বলেন, প্রতিটি ত্রাণ প্রস্তুত করে আমরা ট্রাকে করে তা পাঠিয়ে দিচ্ছি। এছাড়া জিমনেসিয়ামেও এখন অনেক ত্রাণ আসছে। আমরা ধীরেধীরে সব ত্রাণই পৌঁছে দেবো।
 

ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে সঙ্গে থাকুন
ওয়েব নিউজ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

আরও পড়ুন
সংবাদ সম্মেলনে অসত্য তথ্য পরিবেশনের তীব্র প্রতিবাদ
সামান্য বৃষ্টিতেই জলাবদ্ধতা