• বৃহস্পতিবার, ০৮ মে ২০২৫, ১০:৫৭ অপরাহ্ন
শিরোনাম
নকশা না মানা ভবনের বিদ্যুৎ-পানির সংযোগ বিচ্ছিন্ন করবে রাজউক নতুন রাজনৈতিক দলের আবেদন যাচাই-বাছাইয়ে কমিটি গঠন ইসির ভারতের ১৫ শহরে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা পাকিস্তানের ‘সাবেক রাষ্ট্রপতির দেশত্যাগে জড়িতদের শাস্তি দিতে না পারলে আমি চলে যাবো’ পারফরম্যান্স সিরিজ ১৪ ৫জি উন্মোচন করতে যাচ্ছে রিয়েলমি স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে পদত্যাগ না করলে আন্দোলন : রাশেদ খাঁন চলতি মাসে ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা বাংলাদেশে ২৩টি মিটিং করেছে: হাসনাত পাকিস্তানে ভারতের হামলা, সংঘাত ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা ভীতির কোনও কারণ নাই, আমাদের সীমান্ত সম্পূর্ণ নিরাপদ: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা নিজেদের ‘বিশ্বব্যবস্থার রক্ষক’ হিসেবে উপস্থাপন করলেন পুতিন-শি

পাকিস্তানে ভারতের হামলা, সংঘাত ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা

প্রভাত রিপোর্ট / ৬ বার
আপডেট : বৃহস্পতিবার, ৮ মে, ২০২৫

প্রভাত ডেস্ক : ভারতের হামলার জবাব দিতে সশস্ত্র বাহিনীকে পাকিস্তান সরকারের অনুমোদনের পর বড় ধরনের সংঘাত ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। জিও নিউজকে দেয়া সাক্ষাৎকারে পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, ভারত অব্যাহতভাবে উত্তেজনা বাড়াতে থাকলে এ সংঘাত পারমাণবিক সংঘাতে রূপ নিতে পারে। এমন পরিস্থিতি তৈরি হলে পুরো দায়ভার ভারতের ওপর বর্তাবে বলে জানান তিনি।
পাকিস্তানের বেসামরিক লোকজন ও বেসামরিক স্থাপনার ওপর হামলার নিন্দা জানিয়েছে তুরস্ক। এক বিবৃতিতে দেশটি বলেছে, উসকানিমূলক পদক্ষেপ ‘সর্বাত্মক যুদ্ধের’ দ্বার খুলে দেবে। সব পক্ষকে বিচক্ষণতার সঙ্গে পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে আঙ্কারা বলেছে, তারা আশা করে, যত দ্রুত সম্ভব উত্তেজনা কমাতে পদক্ষেপ নেওয়া হবে। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে উভয় দেশকে সংযম প্রদর্শনের আহ্বান জানিয়েছেন বিশ্বনেতারা। লড়াই বন্ধ করতে ভারত ও পাকিস্তানের প্রতি আহ্বান জানিয়ে গতকাল যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, ‘দুই দেশের সঙ্গেই আমাদের খুব ভালো সম্পর্ক। আমি চাই, এটা শেষ হোক। আর আমি যদি কোনোভাবে সাহায্য করতে পারি, তাহলে আমি সেটা করব।’ এ হামলার ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস বলেছেন, ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সামরিক সংঘাতের ভার বিশ্ব বহন করতে পারবে না। এ ছাড়া ইউরোপীয় ইউনিয়ন, চীন, রাশিয়া, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, জার্মানি, স্পেন, ইতালি, সৌদি আরব, ইরান, সংযুক্ত আরব আমিরাত, কাতার, আজারবাইজানসহ বিভিন্ন দেশ ভারত ও পাকিস্তানের প্রতি সংযম প্রদর্শন এবং কূটনৈতিক উপায়ে সমস্যার সমাধান করার আহ্বান জানিয়েছে। তারা বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।
দ্য হিন্দুর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পাকিস্তানের সঙ্গে এ উত্তেজনার মধ্যে ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে বিমান হামলা থেকে সুরক্ষার মহড়া অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার (৮ মে) সর্বদলীয় বৈঠক করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। এ বৈঠকে কংগ্রসে নেতা রাহুল গান্ধী ও মল্লিকার্জুন খাড়গে অংশ নেন বলে দলের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
পাকিস্তানের ছয়টি শহরে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে ভারত। বুধবার দিনের প্রথম প্রহরে এ হামলা চালানো হয়। তাৎক্ষণিক প্রতিরোধ গড়ে তোলে পাকিস্তানও। কাশ্মীর সীমান্তে দুই দেশের সেনাবাহিনীর মধ্যে চলে দফায় দফায় পাল্টাপাল্টি গোলাবর্ষণ। ভারতের হামলার জবাব দিতে সশস্ত্র বাহিনীকে অনুমতি দিয়েছে পাকিস্তান। প্রতি ফোঁটা রক্তের বদলা নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ। এতে পারমাণবিক শক্তিধর দুই প্রতিবেশীর মধ্যে যুদ্ধ ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে আলোচনার মাধ্যমে উত্তেজনা প্রশমনের আহ্বান জানিয়েছে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়।
হামলার পরপরই এক বিবৃতিতে ভারতের সেনাবাহিনী বলেছে, ‘ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। নয়টি সন্ত্রাসী শিবির ধ্বংস করা হয়েছে।’ বিবৃতিতে আরও বলা হয়, সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যবস্তুতে পরিমিত হামলা চালানো হয়েছে। হামলার ধরন উসকানিমূলক নয় বলেও বিবৃতিতে দাবি করা হয়। তবে হামলার কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে পাকিস্তান। ভারতের হামলার পর গতকাল জাতীয় নিরাপত্তা কমিটির বৈঠক ডাকেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ। বৈঠকের পর এক বিবৃতিতে বলা হয়, ভারতের বিরুদ্ধে পাল্টা পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য সশস্ত্র বাহিনীকে পূর্ণ অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। রাতে জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে শাহবাজ শরিফ বলেন, আগের রাতে ভারতের বিমান হামলায় নিহত ব্যক্তিদের প্রতি ফোঁটা রক্তের বদলা নেওয়া হবে। তিনি বলেন, ‘ভারতকে বিমান হামলার পরিণতি ভোগ করতে হবে। তারা ভেবেছিল, আমরা পিছু হটব, কিন্তু তারা ভুলে গেছে এটি বীরদের জাতি।’
২৫ মিনিটে ৯ স্থাপনায় হামলা : পেহেলগাম হামলার পর ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সামরিক সংঘাতের আশঙ্কা করা হচ্ছিল। পারমাণবিক শক্তিধর দুই প্রতিবেশীর মধ্যে উত্তেজনা প্রশমনে আন্তর্জাতিক প্রচেষ্টাও ছিল। এরই মধ্যে গত বুধবার দিবসের প্রথম প্রহরে ‘অপারেশন সিঁদুর’ নামে পাকিস্তান ও পাকিস্তাননিয়ন্ত্রিত ছয়টি শহরে হামলা শুরু করে ভারত। যুদ্ধবিমান থেকে ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ার পাশাপাশি হামলায় ড্রোনও ব্যবহার করা হয়। মধ্যরাতে বিস্ফোরণের বিকট শব্দে ঘুম ভাঙে এসব শহরের বাসিন্দাদের।
হামলার বিষয়ে এক ব্রিফিংয়ে ভারতের পররাষ্ট্রসচিব বিক্রম মিশ্রি বলেন, পেহেলগামের হত্যাকাণ্ডের পর সীমান্ত পার থেকে আরও সম্ভাব্য হামলা ঠেকানোর পাশাপাশি সন্ত্রাসবাদী কাঠামো ধ্বংস করাই ছিল এ হামলার উদ্দেশ্য। এ ব্রিফিংয়ে উপস্থিত ছিলেন ভারতীয় সেনা ও বিমানবাহিনীর দুই নারী কর্মকর্তা কর্নেল সোফিয়া কুরেশি ও উইং কমান্ডার ব্যোমিকা সিং। তাঁরা দাবি করেন, স্থানীয় সময় মঙ্গলবার দিবাগত রাত ১টা ৫ মিনিট থেকে শুরু করে রাত দেড়টা পর্যন্ত নিয়ন্ত্রণরেখা ও আন্তর্জাতিক সীমান্তের ওপাশে ভারতীয় বাহিনী হামলা চালিয়ে মোট নয়টি সন্ত্রাসী শিবির ধ্বংস করেছে।
ব্রিফিংয়ে পাকিস্তান অংশে ধ্বংস করা স্থাপনার ছবিও দেখান কর্মকর্তারা। সোফিয়া ও ব্যোমিকা দাবি করেন, প্রথম লক্ষ্য ছিল ভাওয়ালপুরের মারকাজ সুবহানাল্লাহ। সেখানে জইশ ই মুহাম্মদের জঙ্গিদের প্রশিক্ষণশিবির ছিল। বিলাল মসজিদে ছিল লস্কর–ই–তাইয়েবার প্রশিক্ষণকেন্দ্র। কোটলিতে যেখানে হামলা হয়েছে, তা লস্করের ঘাঁটি। ভারতীয় বাহিনী পাকিস্তানের অভ্যন্তরেও হামলা চালিয়েছে জানিয়ে তাঁরা আরও দাবি করেন, আন্তর্জাতিক সীমান্ত থেকে ছয় কিলোমিটার ভেতরে শিয়ালকোটেও হামলা চালানো হয়েছে। এ ছাড়া মেহমুনা জোয়ায় হিজবুলের শিবিরে হামলা করা হয়। লাহোরের কাছে মুরিদকের মারকাজ তৈয়্যেবায়ও ভারতীয় বাহিনী হামলা চালায় বলে কর্মকর্তারা জানান।


আপনার মতামত লিখুন :
এই বিভাগের আরও