প্রভাত রিপোর্ট: মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার নিয়ে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেছিল জনশক্তি রফতানিকারকদের সংগঠন বায়রার একাংশ। সেখানে আরেকটি গ্রুপের পক্ষ থেকে হামলা এবং দুই পক্ষের মধ্যে হাতাহাতির অভিযোগ পাওয়া গেছে। সোমবার (১৯ মে) সকাল ১১টার কিছু আগে এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। এতে বেশ কিছু বায়রা সদস্য আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর রুনি মিলনায়তনে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুলের মালয়েশিয়া সফরকালীন দ্বিপাক্ষিক আলোচনায় উত্থাপিত পূর্বের ন্যায় সিন্ডিকেটের পরিবর্তে সব রিক্রুটিং এজেন্সির জন্য মালয়েশিয়া শ্রমবাজার উম্মুক্তের প্রস্তাবকে স্বাগত জানিয়ে এবং আসন্ন জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপের মিটিংয়ে সেটি বাস্তবায়নের দাবিতে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে বায়রার একাংশ। এই একাংশের নেতৃত্বে আছেন বায়রার সাবেক সহ-সভাপতি রিয়াজ উল ইসলাম এবং সাবেক যুগ্ম মহাসচিব ফখরুল ইসলাম। সকালে পূর্ব নির্ধারিত সংবাদ সম্মেলনে বায়রার কিছু সদস্য এসে হট্টগোলের চেষ্টা করেন। সেখানে এক পর্যায়ে উত্তেজনা তৈরি হলে ফখরুল ইসলামের সঙ্গে বাকবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন তারা। এ সময় তাকে কিল ঘুষি দেওয়া হয়। এতে তিনি সেখান থেকে পালিয়ে আশ্রয় নেন ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্র্যাব) অফিসে। সেখানে তাকে অবরুদ্ধ করে রাখা হয়।
রিয়াজ উল ইসলাম বলেন, আমাদের একটা সুন্দর আয়োজনে এমন অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটে গেলো। আমরা এখানে সংবাদ সম্মেলন করতে আসছিলাম। কিন্তু আমাদের এখানে তা করতে দেওয়া হয়নি। ফখরুলকে আমাদের কাছ থেকে ছিনিয়ে নিয়ে গেছে। ডিআরইউর এডমিন অফিস ভাঙচুর করা হয়েছে। আমরা কোনোভাবে বেঁচে গেছি। আমাদের চার-পাঁচ জন সদস্য রক্তাক্ত হয়েছেন। থানা থেকে পুলিশ আসছে, তারা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছে। ফখরুল এখনও অবরুদ্ধ। পুলিশ তাকে উদ্ধার করতে গেছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা আরও জানান, পুলিশের উপস্থিতিতে আবারও দুই পক্ষ হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়ে। এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত সেখানে উত্তেজনা বিরাজ করছিল। এদিকে তাদের সংঘর্ষের ঘটনায় রিপোর্টার্স ইউনিটির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে বলে জানা গেছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ উভয়পক্ষের সঙ্গে আলোচনা করছে বলেও জানা যায়। তবে অভিযুক্ত পক্ষে বায়রার সদস্য আতিকুর রহমান ও সাজ্জাদ হোসেন জানান, আমরা এখানে স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশ নিতে এসেছি। হল রুমে প্রবেশের আমাদের বাঁধা দেওয়া হয়। যিনি সংবাদ সম্মেলন আহ্বান করেছেন, তিনি ছাড়া অন্য কেউ ঢুকতে পারবেন না। আমাদের বলা হলো যিনি আহ্বান করেছেন ফখরুল সাহেব এলে আমরা একসঙ্গে প্রবেশ করবো। কিন্তু তিনি আসার পর তিন-চার জনকে প্রবেশ করার জন্য বলেন, বাকিদের না করে দেন। কারণ সেখানে জায়গা কম, বেশি লোক জায়গা দেওয়া যাবে না। এটা নিয়ে সাধারণ সদস্যরা জানতে চায়, তিন-চার জনকে জায়গা দিলে সবাইকে দাওয়াত দিয়েছেন কেন। এটা নিয়ে কথা কাটাকাটি শুরু হয়। এরপর উত্তেজনা, ধাক্কাধাক্কি শুরু হয়। তাদের দাবি, ফখরুল ইসলাম যখন বলেন, আজ সংবাদ সম্মেলন করবেন না তখন সাধারণ সদস্যরা উত্তেজিত হয়ে পড়েন।
ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হাসান সোহেল জানান, জনশক্তি রফতানিকারকদের দুই পক্ষের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনায় ডিআরইউর বেশ কিছু ক্ষতি হয়েছে। চারতলা এবং নিচে ভাঙচুর করা হয়েছে। আমাদের কাছে সিসিটিভি ফুটেজ আছে। পুলিশ এসেছে, আমরা হামলাকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবো।
শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. খালিদ মনসুর বলেন, খুবই তুচ্ছ বিষয় নিয়ে দুই এজেন্সির মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটেছে। ডিআরইউ সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ দুই এজেন্সির লোকজনদের বিষয়টি সমাধানের আলোচনা চলছে।