• শনিবার, ০৭ জুন ২০২৫, ০৪:৫০ পূর্বাহ্ন
ঈদুল আজহার বাকি আর মাত্র এক দিন

বিক্রি নেই বড় গরুর, হতাশ খামারিরা

প্রভাত রিপোর্ট / ৪ বার
আপডেট : শুক্রবার, ৬ জুন, ২০২৫

প্রভাত রিপোর্ট: ঈদুল আজহার বাকি আর মাত্র এক দিন। শেষ মুহূর্তে রাজধানীর গাবতলীর পশুর হাটে কোরবানির পশু বেচাকেনা চলছে। হাটে ছোট ও মাঝারি আকারের গরু বেশি বিক্রি হতে দেখা গেছে। তবে বড় গরু নিয়ে হতাশা ব্যাপারী ও খামারিদের। কাঙ্ক্ষিত ক্রেতা না পাওয়ায় খরচ আর পরিশ্রমের লোকসানে গরু নিয়ে বাড়িতে ফিরতে হবে তাদের।
কুষ্টিয়ার খাজানগর থেকে ৭টি বড় গরু নিয়ে হাটে এসেছেন ব্যবসায়ী নওয়াব আলী। তিনদিনে গরু বিক্রি করেছেন দুটি। বাকি গরু নিয়ে কী করবেন তা নিয়ে হতাশ তিনি। নওয়াব আলী বলেন, যে দুইটা বিক্রি করছি তা দিয়ে খরচ ওঠাতো দূরের কথা লস দিয়ে বাড়ি যেতে হবে। একটা গরুর দাম ১৫ লাখ টাকা। এক কাস্টমার ৮ লাখ বলছে। কোনো রকম গায়ে গায়ে আসলে ছেড়ে দিতাম। লসেতো বিক্রি করা যায় না। না বিক্রি করাও লস। আসা-যাওয়ার খরচ নিয়ে বাড়ি যেতে পারব না।
মেহেরপুরের গরুর ব্যাপারী খলিলু রহমান হতাশার সঙ্গে বলেন, বড় গরু হাটে এনে মনে হয় অপরাধ করে ফেলেছি। কোনো ক্রেতা নেই। সবাই ছোট গরু কেনে। এই দেশে কি ১০ লাখ টাকার গরু কেনার লোক নাই!
আজ (শুক্রবার) সকালে গাবতলী পশুর হাটে গিয়ে দেখা যায়, দলে দলে ক্রেতারা হাটে আসছেন। শেষ সময়ে কোরবারির পশু কিনতে কারও কারও সঙ্গে পরিবারের নারী ও শিশু সদস্যরাও রয়েছেন। হাটের সামনের রাস্তায় ক্রেতাদের ভিড়ে যানজটও দেখা গেছে।
হাটের ভেতরে গিয়ে দেখা যায়, ক্রেতারা ঘুরে ঘুরে কোরবানির পশু দেখছেন, পছন্দ করছেন। কোনো গরু কিংবা খাসি পছন্দ হলে বিক্রেতার কাছে দাম জানতে চাইছেন, দামাদামি করছেন। বনিবনা হলে কিনে নিচ্ছেন। কেউ কেউ আবার দাম শুনেই এগিয়ে যাচ্ছেন পরের গরু দেখতে।
মেহেরপুর থেকে তিনটি গরু নিয়ে এই বাজারে দুই দিন আগে আসেন মোহাম্মদ রমজান আলী। পাঁচ লাখ টাকায় একটি গরু বিক্রি করেছেন তিনি। তার ভাষ্য মতে, বিক্রি হওয়া গরুতে তার লাভ থাকছে ৫০ হাজার টাকা। শেষ অবদি বাকি গরু বিক্রি না হলে লোকসান দিয়ে বাড়িতে ফিরতে হবে।
দুই ছেলেকে নিয়ে শ্যামলীর বাসিন্দা মো. ইয়াসিন এসেছেন কোরবানির পশু কিনতে। ইয়াসিন বলেন, কালকে হাট ঘুরে পশু দেখেছি, কিন্তু গরু কিনতে পারি নাই। আজ না কিনে উপায় নেই। এখনো দেখছি, পছন্দ হলে কিনব।
হাট থেকে ছোট আকারের একটি গরু নিয়ে বের হচ্ছেন হাবিবুর রহমান। তিনি জানান, ১ লাখ ১০ হাজার টাকা দিয়ে কিনলাম। ঘণ্টাখানেক হাটে ঘোরার পর কাঙ্ক্ষিত গরু পেয়েছি। ভাবছি একটা পিকআপে করে নিয়ে যাব, কিন্তু অল্প একটু জায়গা যেতে তিন হাজার চায়। তাই কষ্ট হলেও হেঁটে রওনা হলাম।
হাটের দক্ষিণ কিনারায় তিনটি শাহিওয়াল আর চারটি ফ্রিজিয়ান (সংকর) প্রজাতের গরু নিয়ে দাঁড়িয়ে আছেন এক ব্যবসায়ী। গরুর দাম জানতে চাইলে বিরক্তি প্রকাশ করে জানতে চায় কিনবেন? ১০ লাখ টাকা দিয়ে নিয়ে যান। ইদ্রিস নামের এ ব্যবসায়ীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সপ্তাহের ব্যবধানে মাত্র তিনটি গরু বিক্রি করতে পেরেছেন। বাকি গরু বিক্রি করতে না পারায় হতাশ তিনি।
ইদ্রিস বলেন, লাভতো দূরের কথা যদি খরচটা উঠতো গরু ছেড়ে দিতাম। কিন্তু টাকাওয়ালা লোকেরা মনে হয় সবাই হারিয়ে গেছে। মানুষের কাছে কী টাকা নেই, নাকি ভয়ে কেউ বড় গরু কিনতে সাহস পাচ্ছে না সেটাই বুঝতে পারছি না।
গাবতলী পশুর হাটের দুই নং হাসিল ঘরের দায়িত্বে থাকা জাকিরুল আলম বলেন, আজকে এখনো হাট জমা শুরু হয়নি। বৃহস্পতিবার যথেষ্ঠ কোরবারির পশু বিক্রি হয়েছে। আজকে বেলা বাড়লে হবে। ছোট ও মাঝারি গরু বিক্রি বেশি হয়। বড় গরুর হাসিল খুবই কম। শতকরা এক দুইটা।


আপনার মতামত লিখুন :
এই বিভাগের আরও