• মঙ্গলবার, ০১ জুলাই ২০২৫, ০৮:৫১ অপরাহ্ন
শিরোনাম

নির্যাতিতদের সমর্থনে আন্তর্জাতিক দিবসে ময়মনসিংহে অধিকার-এর মানববন্ধন

প্রভাত রিপোর্ট / ১৩ বার
আপডেট : বৃহস্পতিবার, ২৬ জুন, ২০২৫

ময়মনসিংহ ব্যুরো: ময়মনসিংহে জাতিসংঘ ঘোষিত ‘নির্যাতিতদের সমর্থনে আন্তর্জাতিক দিবস’উপলক্ষ্যে মানববন্ধন ও সংহতি সমাবেশ করেছে মানবাধিকার সংগঠন অধিকার ময়মনসিংহ নেটওয়ার্ক। গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল দশটায় ময়মনসিংহ প্রেসক্লাবের সামনে আয়োজিত মানববন্ধন ও সংহতি সমাবেশে অধিকারের ময়মনসিংহের সমন্বয়কারী-সাংবাদিক আব্দুল কাইয়ুমের সঞ্চালনায় মানববন্ধনে বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক, পেশাজীবী ও গণমাধ্যমের প্রতিনিধিরা ছাড়াও নির্যাতনের শিকার ব্যক্তিরাও অংশ নেন। এসময় বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সহ-সভাপতি এডভোকেট নূরুল হক, ময়মনসিংহ প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম, ময়মনসিংহ মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক এম এ হান্নান খান, এনসিপির ময়মনসিংহ জেলা কমিটির সদস্য ও ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার প্রধান সমন্বয়কারী মোজাম্মেল হক, দৈনিক দিগন্ত বাংলার সম্পাদক আনম ফারুক, পুলিশি নির্যাতনের শিকার শিক্ষক এসএম রায়হান, ছাত্র-জনতার আন্দোলনে আওয়ামী লীগ ও পুলিশের নির্মম নির্যাতনের শিকার মাহদী হাসান তারেক, এবং গুমের পর নির্যাতনের শিকার গোলাম মোস্তফা, রাশেদ ও বাছেদ। মানববন্ধনে আরও উপস্থিত ছিলেন সাংবাদিক সাজ্জাতুল ইসলাম, আব্দুল আউয়াল, আব্দুল্লাহ আল মামুন, কাওসার আহমেদ, আরিফ আহমেদ, সাইফুল ইসলাম তরফদার, মনির হোসেন ও রাশেদুজ্জামান রনি প্রমুখ।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, বাংলাদেশে নির্যাতন এখন একটি সাংগঠনিক ও প্রতিষ্ঠানিক চর্চায় পরিণত হয়েছে। স্বাধীনতার পর থেকে প্রতিটি সরকারের আমলে নির্যাতনের ঘটনা ঘটলেও শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার আমলে তা চরম মাত্রায় পৌঁছেছে। এই সময়ে গুম, বিচারবহির্ভূত হত্যা এবং রিমান্ডে নির্যাতনের ঘটনা ভয়াবহভাবে বেড়েছে। ‘অধিকার’-এর তথ্য অনুযায়ী, ২০০৯ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২৪ সালের আগস্ট পর্যন্ত ১৮২ জন এবং অন্তবর্তী সরকারের সময় (২০২৪ সালের ৯ আগস্ট থেকে ২০২৫ সালের ২০ জুন পর্যন্ত) আরও ১০ জন ব্যক্তি নির্যাতনের কারণে মারা গেছেন। বক্তারা বলেন, রিমান্ড এখন যেন টর্চারের অপর নাম হয়ে দাঁড়িয়েছে। অথচ সংবিধানের ৩৫(৫) অনুচ্ছেদ এবং ‘নির্যাতন ও হেফাজতে মৃত্যু (নিবারণ) আইন, ২০১৩’ অনুযায়ী যেকোনো ধরনের নির্যাতন সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ।
তারা বলেন, বাংলাদেশে দায়মুক্তির সংস্কৃতি, বিচারব্যবস্থায় রাজনৈতিক প্রভাব এবং তদন্ত ও আইনি প্রক্রিয়ার দুর্বলতা নির্যাতনের পরিবেশকে আরও শক্তিশালী করেছে। থানায়, ডিটেনশন সেন্টারে, কারাগারে এবং গোপন বন্দিশালায় মানুষ নিয়মিতভাবে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন। ভুক্তভোগীরা নতুন করে নির্যাতনের শঙ্কায় অধিকাংশ সময় নীরব থাকেন। বক্তারা এই পরিস্থিতিকে রাষ্ট্রীয় ব্যর্থতা এবং মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন বলে আখ্যা দেন।
বক্তারা মানবাধিকার রক্ষাকর্মীদের ওপর বাধা প্রদান বন্ধের দাবি জানিয়ে বলেন, নির্যাতন মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন এবং গণতন্ত্র ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার পথে প্রধান অন্তরায়। নির্যাতন বন্ধে দেশের মানুষকে আরও বেশি সচেতন হতে হবে এবং ঐক্যবদ্ধভাবে নির্যাতনবিরোধী আন্দোলনে অংশ নিতে হবে। মানবাধিকার সংগঠন ‘অধিকার’ এই লক্ষ্যে বাংলাদেশের জনগণকে পাশে থাকার আহ্বান জানায়।


আপনার মতামত লিখুন :
এই বিভাগের আরও