জাহাঙ্গীর আলম শেখ, গাজীপুর: গাজীপুরের বিভিন্ন এলাকায় ভাওয়ালের গড় যত টুকুই অবশিষ্ট আছে তাও যেন আজ হারাতে বসেছে। এভাবেই দিনের বেলায় প্রকাশ্যে গজারির গাছ কেটে মাথায় নিয়ে বন থেকে বের হয়ে আসেন মা ও ছেলে। সোমবার (৩০ জুন) বিকেল বেলায় ন্যাশনাল পার্ক এলাকায় গিয়ে চোখে পরে এমন দৃশ্য ।
গাজীপুর জেলার রাজেন্দ্রপুর এলাকায় এই ন্যশানাল পার্কের অবস্থান । এই পার্কের আশেপাশে শত বছরের অধিক সময় ধরেই বসবাস করছে আদিবাসী মানুষ । বিশেষ করে গারো জনগোষ্ঠীর মানুষেরা এখানে বসবাস করছে ।
পার্কটির ভেতরে কৃষি ও চাষাবাদ করার জমি থাকার কারনে অবাধে তাদের আনাগোনা করার সুযোগ রয়েছে,এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে কেটে নিয়ে আসে গজারির গাছ।যার কারনেই প্রতিদিন কমছে এই বন। কৃষিকাজ কাজ করতে যেয়ে গভীর বনের ভেতর ছোট মাঝারি বড় আকারের গাছপালা কেটে ফেলে রাখা হয়। পরে খন্ড খন্ড করে এই সমস্ত গাছ সুবিধাজনক সময়ে নিয়ে আসা হয় বলে জানান নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এই কাজে থাকা ঐ ব্যক্তি ।
জাতীয় উদ্যানটির উওর অংশে কোন নিরাপত্তা বেস্টনী না থাকায় ও কিছুটা দূর্গম এলাকা হওয়ায় এবং যাতায়াতের সুবিধা না থাকায় ।আবার কিছুটা বন কর্মকর্তাদের গাফিলতি থাকা অথবা যোগসাজশে এমনটা ঘটছে বলে মনে করেন স্থানীয় বাসিন্দারা । শুধু জাতীয় উদ্যান ও আশপাশের এলাকায় নয় । এই ভাওয়াল গড় গাজীপুর জেলার যেখানে যেখানে রয়েছে ।
সেই এলাকা গুলোতেই এমন দৃশ্য চোখে পড়েছে । নতুন করে রাজনৈতিক ক্ষমতা পাওয়া ও স্থানীয় পর্যায়ে প্রভাবশালী ব্যক্তিদের সহযোগিতায় বন ধ্বংসের যজ্ঞ চালিয়ে যাচ্ছে এক শ্রেণীর মানুষ । অনেক সময় তাদের চিহ্নিত করে মামলা মোকদ্দমা দিয়েও ফেরাতে পারছেননা বলে জানান দায়ীত্বে থাকা বন কর্মকর্তা ।তিনি আরও বলেন আমাদের পর্যাপ্ত লোকবল না থাকা যাতায়াতের বাহন কম থাকায় সঠিকভাবে পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারছি না ।
পরিবেশ কর্মী ও সাংবাদিক শান শাহাবুদ্দিন বলেন আমরা ইচ্ছে করলেই যে কোনো একটি গাছের চারা লাগাতে বা রোপণ করতে পারবো । কিন্তু ইচ্ছে করলেই শালগাছ বা এই গজারির গাছ লাগাতে পারবো না । যে ভাবে এই বন ধ্বংস করা হচ্ছে তাতে আমাদের এ আঞ্চলের পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য হুমকির সম্মুখীন হবে ।তিনি আরও বলেন গাজীপুরে অপরিকল্পিত ভাবে শিল্পায়ন হওয়ার কারণে বনাঞ্চল, পশু , পাখি, মানুষ সকলের জীবন আজ দুর্বিষহ । তাই এখন পরিকল্পিত ব্যবস্থা গ্রহন করা দরকার।