প্রভাত রিপোর্ট: গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সভাপতি ও প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন অধ্যাপক আলী রীয়াজ এবং রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে লিয়াজোঁর দায়িত্বে থাকা প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার। বৈঠকে ঐকমত্য কমিশনের অগ্রগতি নিয়ে আলোচনা হয়। কোন কোন জায়গায় আলোচনা আটকে যাচ্ছে, তা–ও জানতে চান প্রধান উপদেষ্টা। মনির হায়দারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে তাঁদের বৈঠক অনুষ্ঠিত হওয়ার বিষয়টি স্বীকার করেন।
সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানে নিয়োগ, সংবিধান সংশোধন পদ্ধতি এবং নারী আসনে সরাসরি ভোটের প্রস্তাব নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে ঐকমত্য কমিশনের কয়েক দফা আলোচনা হলেও এখন পর্যন্ত ঐকমত্য হয়নি। এসব ক্ষেত্রে সংস্কার কমিশনের প্রস্তাব নিয়ে বিএনপিসহ কয়েকটি দলের আপত্তি আছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রটি জানায়, আলোচনায় প্রধান উপদেষ্টা কয়েকটি সংস্কারের বিষয়ে বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছেন। তিনি সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলোতে স্বাধীনভাবে নিরপেক্ষ নিয়োগের ব্যবস্থা নিশ্চিত করা, ভবিষ্যতে কোনো দল চাইলেই যাতে সংবিধান পরিবর্তন করে ফেলতে না পারে, সে ধরনের বিধান এবং নারী আসনে সরাসরি নির্বাচনের ব্যবস্থা নিশ্চিত করার কথা বলেছেন। এসব সংস্কার নিশ্চিত করেই নির্বাচন করার পক্ষে মত দেন প্রধান উপদেষ্টা।
এছাড়াও আগামী বছরের ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হতে পারে বলে যুক্তরাজ্যের লন্ডনে এক যৌথ বিবৃতিতে যে ঘোষণা এসেছিল, তার বাস্তবায়ন হবে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের প্রতিবেদন বা জুলাই সনদের ভিত্তিতে। গতকাল বৃহস্পতিবার অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজের সঙ্গে এক বৈঠকে এমনটা জানিয়েছেন। প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র থেকে বিষয়টি জানা গেছে।
সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানে নিয়োগ, সংবিধান সংশোধন পদ্ধতি এবং নারী আসনে সরাসরি ভোটের প্রস্তাব নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে ঐকমত্য কমিশনের কয়েক দফা আলোচনা হলেও এখন পর্যন্ত ঐকমত্য হয়নি। এসব ক্ষেত্রে সংস্কার কমিশনের প্রস্তাব নিয়ে বিএনপিসহ কয়েকটি দলের আপত্তি আছে।
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর গতকাল জাতীয় প্রেসক্লাবে এক আলোচনা সভায় প্রধান উপদেষ্টাকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, ‘তিনি (প্রধান উপদেষ্টা) নির্দেশ দিয়েছেন ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচনের সব কাজ গুছিয়ে রাখার জন্য নির্বাচন কমিশনকে, এটা অত্যন্ত ইতিবাচক ব্যাপার।’
প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়–সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, গত মঙ্গলবার নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের বৈঠক হয়েছিল। সে বিষয়টি নিয়েও গতকাল প্রধান উপদেষ্টাকে ঐকমত্য কমিশনের পক্ষ থেকে অবহিত করা হয়। ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি আলী রীয়াজের সঙ্গে বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন, তিনি রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের আলোচনার বিষয়ে ওয়াকিবহাল। বিটিভি নিউজে সরাসরি সম্প্রচার করা কমিশনের আলোচনা তিনি দেখেন ও মনোযোগ দিয়ে সবার বক্তব্য শোনেন। দলগুলো সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে আলোচনা করে যাচ্ছে, এটাকে তিনি খুবই ইতিবাচকভাবে দেখছেন। তিনি আশা করেন, আগামী তিন সপ্তাহের মধ্যে আলোচনার ভালো অগ্রগতি হবে এবং লন্ডনে দেওয়া ঘোষণা বাস্তবায়নের পথ সুগম হবে।
গত বুধবার আইনশৃঙ্খলাবিষয়ক উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধিদের সঙ্গে এক বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা নির্বাচনের জন্য আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে সব প্রস্তুতি শেষ করার নির্দেশনা দেন, যা পরে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব গণমাধ্যমকে জানান।
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ইউনূস যুক্তরাজ্য সফরে গেলে তাঁর সঙ্গে বৈঠক করেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। ১৩ জুন লন্ডনে ওই বৈঠকের পর একটি যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়, বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন, সব প্রস্তুতি শেষ করা গেলে ২০২৬ সালে পবিত্র রমজান মাস শুরু হওয়ার আগের সপ্তাহেও (ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে) নির্বাচন আয়োজন করা যেতে পারে। সে ক্ষেত্রে সেই সময়ের মধ্যে সংস্কার ও বিচারের বিষয়ে পর্যাপ্ত অগ্রগতি অর্জন করা প্রয়োজন হবে।
অবশ্য লন্ডন বৈঠকের ঘোষণার পর ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানে দৃশ্যমান তৎপরতা না থাকায় বিএনপির নেতাদের মধ্যে একধরনের সংশয় তৈরি হয়েছিল। গত বুধবার আইনশৃঙ্খলাবিষয়ক উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধিদের সঙ্গে এক বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা নির্বাচনের জন্য আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে সব প্রস্তুতি শেষ করার নির্দেশনা দেন, যা পরে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব গণমাধ্যমকে জানান।
এ জন্য বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর গতকাল জাতীয় প্রেসক্লাবে এক আলোচনা সভায় প্রধান উপদেষ্টাকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, ‘তিনি (প্রধান উপদেষ্টা) নির্দেশ দিয়েছেন ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচনের সব কাজ গুছিয়ে রাখার জন্য নির্বাচন কমিশনকে, এটা অত্যন্ত ইতিবাচক ব্যাপার।’