• বৃহস্পতিবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৫, ০১:৪৩ অপরাহ্ন
শিরোনাম
প্লট বরাদ্দে দুর্নীতির মামলায় জয় ও পুতুলের ৫ বছরের কারাদণ্ড চকরিয়ার ডুলাহাজারায় চেকপোস্টে ২০ হাজার ইয়াবাসহ পাচারকারী গ্রেফতার বাউল আবুল সরকারের মুক্তির দাবিতে খুলনায় মানববন্ধনে হামলা, মারধর পাকিস্তানের আদিয়ালা জেলেই আছেন ইমরান খান, সুস্থ আছেন : কর্তৃপক্ষ গিনি-বিসাউর ক্ষমতা নিল সেনাবাহিনী, প্রেসিডেন্ট গ্রেপ্তার তিন মামলায় শেখ হাসিনার ২১ বছরের কারাদণ্ড নাজিরপুরে পরিবার পরিকল্পনা কর্মীদের স্মারকলিপি প্রদান কচুয়ায় নানা আয়োজনে প্রাণিসম্পদ প্রদর্শনী মেলা অনুষ্ঠিত সব হারিয়ে মানবিক বিপর্যয়ের মুখে কড়াইল বস্তিবাসী শাহবাগে বিএমইউয়ে আগুন, ফায়ার সার্ভিসের চেষ্টায় নিয়ন্ত্রণে

চীন থেকে মার্কিন আমদানি সরছে, বাংলাদেশের সামনে বড় সুযোগ : মাসরুর রিয়াজ

প্রভাত রিপোর্ট / ৪৭ বার
আপডেট : সোমবার, ৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

প্রভাত রিপোর্ট: বৈশ্বিক বাণিজ্য যুদ্ধের কারণে বাংলাদেশের জন্য নতুন সুযোগ তৈরি হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন অর্থনীতিবিদ ও পলিসি এক্সচেঞ্জ বাংলাদেশের চেয়ারম্যান মাসরুর রিয়াজ। তার মতে, চীন থেকে আমেরিকার আমদানি সরছে, আর আমেরিকান কোম্পানিগুলো বিকল্প বাজার খুঁজছে। এই পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ নন-এলাই বা ওপেনলি নন-পলিটিক্যাল দেশ হিসেবে একটি সম্ভাবনাময় গন্তব্য হতে পারে। সোমবার (৮ সেপ্টেম্বর) সকালে রাজধানীর একটি হোটেলে বাংলাদেশ বিজনেস ফোরাম (বিবিএফ) আয়োজিত ‘বাণিজ্য যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশের করণীয় ও এফবিসিসিআই এর ভূমিকা’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি জানান, বৈশ্বিক জরিপে দেখা গেছে—৩২ শতাংশ ফার্ম চায়না প্লাস ওয়ান কৌশলে যাচ্ছে। অর্থাৎ, তারা কেবল চীনে নয়, অন্যত্রও উৎপাদন ও আমদানির কেন্দ্র স্থাপন করছে। একইভাবে ৭২ শতাংশ গ্লোবাল ফার্ম মনে করছে, ট্রেড ও প্রোডাকশন রিডিস্ট্রিবিউশনের জন্য নন-এলাই দেশগুলোই হবে সেরা জায়গা। এ কারণে বাংলাদেশের সামনে বড় সুযোগ তৈরি হয়েছে। তবে তিনি সতর্ক করে দেন—সুযোগ থাকলেই যে তা কাজে লাগানো সম্ভব হবে, তা নয়; এজন্য বাংলাদেশের পাঁচটি বড় দুর্বলতা কাটিয়ে উঠতে হবে।
বাংলাদেশের করণীয় তুলে ধরে তিনি বলেন, প্রতিযোগিতায় সক্ষমতা বাড়াতে হবে। বর্তমানে গ্লোবাল কম্পিটেটিভ ইনডেক্সে বাংলাদেশের অবস্থান ১০৫, যেখানে ভারত ও ভিয়েতনাম প্রায় ৬০-এর কাছাকাছি। আমদানি-রফতানির ক্ষেত্রে ট্রেড ফ্যাসিলিটেশন উন্নত করতে হবে। এছাড়া গভর্নেন্স ইমপ্রুভমেন্ট, তৈরি পোশাকের বাইরে বিকল্প খাত তৈরি করা ও পাবলিক-প্রাইভেট ডায়ালগ ও এভিডেন্স বেইজড অ্যানালাইসিসে সক্ষমতা বাড়ানোর কথা বলেন তিনি।
মাসরুর রিয়াজ আরও জানান, বাণিজ্য যুদ্ধের অভিঘাতে ২০২৫ সালে বাংলাদেশের বৈশ্বিক বাণিজ্য প্রবৃদ্ধি প্রত্যাশিত ৩ শতাংশ থেকে কমে ২ শতাংশে নেমে আসবে। ২০২৬ সালে এটি ২ দশমিক ৫ শতাংশ হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ট্রাম্প প্রশাসনের ট্যারিফ নীতির কারণে বৈশ্বিক জিডিপি প্রবৃদ্ধি ২০২৫ সালে ০ দশমিক ৬ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে, যার বড় প্রভাব পড়েছে এশিয়ায়।
অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধে বাংলাদেশ রিকন্ডিশন্ড ভেহিকেলস ইমপোর্টার্স অ্যান্ড ডিলারস অ্যাসোসিয়েশনের (বারভিডা) সভাপতি আবদুল হক বলেন, বাংলাদেশের রফতানি প্রায় ৬৫ শতাংশ ইইউ ও যুক্তরাষ্ট্রনির্ভর। ফলে কয়েকটি গন্তব্যের ওপর অতিরিক্ত নির্ভরশীলতা তৈরি হয়েছে। চলমান বাণিজ্য যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে নতুন বাজারে প্রবেশে শুল্ক-কোটা বাধা, মান নিয়ন্ত্রণের কঠোরতা ও দ্বিপাক্ষিক চুক্তির ঘাটতি বড় প্রতিবন্ধক হিসেবে কাজ করছে। তিনি আরও বলেন, অবকাঠামোগত ঘাটতি, জ্বালানি সংকট, ডলার সংকট ও নীতিগত অনিশ্চয়তার কারণে বিনিয়োগকারীরা দ্বিধাগ্রস্ত। তাই ব্যবসায়ীদের বিকল্প বাজার সন্ধান, রপ্তানি বাজার বৈচিত্র্য, বন্দর আধুনিকায়ন এবং ই-কমার্সের প্রসারে মনোযোগী হতে হবে। একইসঙ্গে বাণিজ্য যুদ্ধে টিকে থাকতে এফবিসিসিআইকে আরও শক্তিশালী করার আহ্বান জানান তিনি।
এফবিসিসিআই-এর সাবেক সভাপতি শফিউল্লাহ চৌধুরি বলেন, পূর্ববর্তী সরকারের আমলে এফবিসিসিআই কার্যত অকার্যকর ছিল এবং সংগঠনটি ব্যবসায়ীদের স্বার্থ রক্ষা করতে পারেনি। গণঅভ্যুত্থানের পর সংগঠনটির নেতৃত্বে একজন সাবেক আমলাকে বসানো হয়েছে, যার ব্যবসা-বাণিজ্য নিয়ে অভিজ্ঞতা নেই। ব্যবসায়ীদের বর্তমান অবস্থা ‘এতিমের মতো’ আখ্যা দিয়ে আবদুল হক বলেন, আমরা কার কাছে যাব, কোথায় যাব, কী করব বুঝতে পারছি না। হঠাৎ করে পোর্ট চার্জ বাড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে, নানা ধরনের হয়রানির শিকার হচ্ছেন ব্যবসায়ীরা।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা হোসেন জিল্লুর রহমান, বিকেএমইএ সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম প্রমুখ।


আপনার মতামত লিখুন :
এই বিভাগের আরও