• সোমবার, ১৭ নভেম্বর ২০২৫, ০৯:০৪ পূর্বাহ্ন
বিএমইউতে ৩ দফা দাবিতে মানববন্ধন

চিকিৎসক নিয়োগে দ্রুত সিদ্ধান্ত না নিলে কঠোর কর্মসূচির হুমকি

প্রভাত রিপোর্ট / ১৯ বার
আপডেট : বুধবার, ৫ নভেম্বর, ২০২৫

প্রভাত রিপোর্ট: বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএমইউ) ও এর অধীন সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতালে শূন্য পদে দ্রুত নিয়োগ, হাসপাতালটি পূর্ণমাত্রায় চালু এবং রেসিডেন্ট চিকিৎসকদের জন্য হোস্টেল ও লাইব্রেরি সুবিধা নিশ্চিত করার দাবিতে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছেন চিকিৎসকরা। সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতাল পূর্ণরূপে দ্রুত চালু এবং বিএমইউতে দ্রুততম সময়ে চিকিৎসক নিয়োগের কোনো সিদ্ধান্ত না এলে কর্মবিরতিসহ কঠোর কর্মসূচির হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তারা।
বুধবার শাহবাগের বিএমইউ ক্যাম্পাসে “সচেতন চিকিৎসক সমাজ”-এর ব্যানারে আয়োজিত এই মানববন্ধনে বিভিন্ন বিভাগ, ইউনিট ও হাসপাতালের শিক্ষক, রেসিডেন্ট চিকিৎসক এবং ট্রেইনি ডাক্তাররা অংশ নেন।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, কোরিয়ার অর্থায়নে নির্মিত সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতালটি দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম আধুনিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু দক্ষ চিকিৎসক, নার্স ও টেকনোলজিস্টের অভাবে হাসপাতালটি এখনো পূর্ণমাত্রায় চালু হয়নি। উন্নত যন্ত্রপাতি ও ওয়ার্ডগুলো দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ পড়ে আছে, যার ফলে কোটি কোটি টাকার বিনিয়োগ নষ্ট হওয়ার ঝুঁকিতে।
অফথালমোলজি বিভাগের রেসিডেন্ট ডা. মো. নাজমুল হাসান বলেন, এই হাসপাতাল চালু হলে শুধু রোগীরা নয়, মেডিকেল শিক্ষার্থীরাও উপকৃত হতেন। কিন্তু পর্যাপ্ত চিকিৎসক ও মেডিকেল অফিসার না থাকায় অনেক ইউনিটই খোলা যাচ্ছে না। আমরা চাই—অবিলম্বে নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হোক। তিনি বলেন, “৫ আগস্টের পর দেশে যেভাবে প্রশাসনিক ও সাংগঠনিক সংস্কার শুরু হয়েছে, বিএমইউ সেই পরিবর্তনের বাইরে থাকা উচিত নয়। এটি দেশের একমাত্র সুপার স্পেশালাইজড বিশ্ববিদ্যালয়; তাই এটিকে সচল রাখার দায়িত্ব সরকারের।”
মানববন্ধনে চিকিৎসকরা আরও অভিযোগ করেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের শত শত রেসিডেন্ট চিকিৎসককে রাজধানীর বিভিন্ন জায়গায় কষ্ট করে থাকতে হয়। তাদের জন্য নির্দিষ্ট কোনো হোস্টেল নেই, ফলে সময় মতো ডিউটিতে পৌঁছানো ও রাতের জরুরি সেবা দেওয়া কঠিন হয়ে পড়ে।
ডা. মাহমুদুর রহমান মাজেদ বলেন, বিএমইউর ছাত্রাবাসগুলো নামকাওয়াস্তে আছে। থাকার পরিবেশ নেই, নিরাপত্তা নেই। অথচ রেসিডেন্ট চিকিৎসকরাই হাসপাতাল চালিয়ে রাখছেন দিনরাত। তারা বলেন, আধুনিক লাইব্রেরি ও একাডেমিক সাপোর্টের অভাবে গবেষণাও বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। ফলে দেশীয় চিকিৎসা গবেষণায় নতুন জ্ঞান বা উদ্ভাবনের ক্ষেত্র তৈরি হচ্ছে না।
চিকিৎসকরা মনে করেন, শূন্যপদ পূরণ ও হাসপাতাল সচল করা কেবল চিকিৎসকদের দাবি নয়, এটি জনস্বার্থের বিষয়। কারণ হাসপাতালটি পুরোপুরি চালু হলে দেশের সাধারণ মানুষ আন্তর্জাতিক মানের স্বাস্থ্যসেবা পাবেন এবং তরুণ চিকিৎসকেরা উন্নত প্রশিক্ষণ লাভ করবেন।
ডা. আবু ইউসুফ আব্দুল্লাহ বলেন, ৫ আগস্টের পর সব জায়গায় সংস্কার হচ্ছে। এই বিশ্ববিদ্যালয়কে এখনও ঠিক মতো সংস্কার করা হয়নি। নানাভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজ বাধাগ্রস্ত করা হচ্ছে। কোরিয়ার অর্থায়নে সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতাল করা হয়েছে, এখনও পুরোপুরি সুফল পাচ্ছে না দেশের জনগণ। চিকিৎসক, নার্স, টেকনোলজিস্ট-ওয়ার্ড বয়সহ সব পদে নিয়োগ করে পুরোপুরিভাবে হাসপাতাল চালু করা হোক।


আপনার মতামত লিখুন :
এই বিভাগের আরও