মো. বাবুল শেখ,পিরোজপুর : পিরোজপুরের নাজিরপুর উপজেলার শেখমাঠিয়া ইউনিয়নের রঘুনাথপুর আবাসন প্রকল্প–১ এলাকায় মাদক সেবন, বিক্রি, নারী হয়রানি ও স্থানীয়দের মারধরের অভিযোগ উঠেছে একদল যুবকের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় চার ভুক্তভোগী নারী — ময়না বেগম (৪০), স্বামী নজরুল ইসলাম খান, ও সেলিনা বেগম , হামিদা আক্তার সৃতি, পিতা. বাবুল শেখ, জান্নাতী বেগম পিতা. জাহাঙ্গীর শেখ , ফাতেমা খাতুন পিতা. মো. নজরুল ইসলাম খান — সম্প্রতি পৃথকভাবে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এবং নাজিপুর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
বুধবার ( ৫ নভেম্বর) সকালে উপজেলার ৭ নং সেখমাটিয়া ইউনিয়ন পরিষদের গ্রাম্য শালিস কেন্দ্রে উপস্থিত হয়ে উভয় পক্ষের সাথে কথা বলে জানা যায় মো. বনী আমিন শেখ (২২), পিতা. জাবুল শেখ; ইয়াসিন শেখ, পিতা রেজাউল শেখ; ও জসিম শেখ, পিতা রেজাউল শেখ । এরা রঘুনাথপুর ( ক্ষেজুরতলা) আবাসন প্রকল্পের বাসিন্দা এবং দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় মাদক সেবন ও বিক্রির সঙ্গে জড়িত। পাশাপাশি তারা প্রায়ই অন্যের জমিতে প্রবেশ করে নারিকেল, লেবুসহ ফল ফসল নষ্ট এবং স্থানীয়দের অকথ্য ভাষায় গালাগাল ও শারীরিকভাবে নির্যাতন করেন বলে ভুক্তভোগিরা অভিযোগ করেছেন। জানা গেছে, বনি আমিন সম্প্রতি কয়েকটি মামলায় জেল খেটে বেরিয়ে এসেছেন ।

ময়না বেগমের অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে, অভিযুক্তরা নেশাগ্রস্ত অবস্থায় তার ঘরে প্রবেশ করে হামলা ও মারধর করে। অন্যদিকে, সেলিনা বেগম তার অভিযোগে জানিয়েছেন, একই অভিযুক্তরা তার কন্যাকে নেশাগ্রস্ত অবস্থায় কুপ্রস্তাব ও অশালীন মন্তব্য করে। প্রতিবাদ করতে গেলে তাদের পরিবারকেও বিভিন্নভাবে হুমকি দেয়া হয়। বনি আমিন এর পিতা ও কিছু দিন আগে এক নারীর সঙ্গে ধরা পড়ার পরে গ্রাম্য শালিসে বিচার করা হয় ।
এদিকে জান্নাতী অভিযোগ করে বলেন, তাকে রাস্তা থেকে তুলে নিয়ে দুই সপ্তাহ আটকে রেখে শারীরিক নির্যাতন করে পরে স্থানীয় লোকজন ও প্রশাসনের সহযোগিতায় উদ্ধার করে । পরে মামলা করা হয়েছে । সে মামলা চলমান রয়েছে । স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, অভিযুক্তরা প্রায়ই এলাকার নিরীহ মানুষদের মারধর করে এবং আতঙ্ক সৃষ্টি করে রাখে। মেয়েদের স্কুলে যাওয়ার সময় হয়রানি করে । ফলে এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে অশান্তি বিরাজ করছে।
বনি আমিনের মারধরের শিকার ইউনিয়ন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক জব্বার শেখও। তিনি জানান, আমাকেও মারধর করেছে, তার নিজস্ব একটি বাহিনী তৈরি করে নানা অপকর্ম লিপ্ত হয়েছেন।
আবাসন প্রকল্পের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মো. রেজাউল শেখ জানান, বনি আমিন বিএনপির নাম ভাঙিয়ে এমনটা করছে। সে সন্ত্রাসী প্রকৃতির লোক। তার ভয়ে আবাসনের কেউ কথা বলতে পারে। সে কয়েক বার নানা অপকর্মের জন্য জেল খেটেছে । বর্তমানে তার নামে তিনটি নারী নির্যাতন মামলা চলমান রয়েছে। আমরা তার বিচার দাবি করছি ।
শেখমাঠিয়া ইউনিয়ন বিএনপির সদস্য সচিব জহিরুল ইসলাম জহির জানান, বনি আমিন কখনো বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলো না। যদি জড়িত থাকে তাহলে তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে। তবে সন্ত্রাসী কোনো দলের হয় না তার বিরুদ্ধে প্রশাসনের আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার দাবী জানাই।
অভিযোগকারীরা প্রশাসনের দ্রুত হস্তক্ষেপ ও অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন। নাজিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাজিয়া শাহনাজ তমা ট্রেনিং-এ থাকায় তার বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।