প্রভাত রিপোর্ট: জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) ‘বাউলের দ্রোহ’ নামের একটি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে গভীর রাত পর্যন্ত উচ্চশব্দে গান-বাজনার মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি সৃষ্টির অভিযোগ উঠেছে। তবে এ বিষয়ে প্রশাসন কোনো ব্যবস্থা না নেওয়ায় উপাচার্যের বাসভবনের সামনে সাউন্ড বক্স বাজিয়ে অভিনব প্রতিবাদ করেছেন শিক্ষার্থীরা।
সোমবার (১ ডিসেম্বর) দিনগত রাত দেড়টার দিকে জাবি উপাচার্য অধ্যাপক মোহাম্মদ কামরুল আহসানের বাসভবনের সামনে গান বাজিয়ে এ প্রতিবাদ করেন শিক্ষার্থীরা। পরে প্রক্টরিয়াল বডির হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী শাহরিয়ার আনজুম বলেন, দীর্ঘদিন ধরে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের নামে অতিরিক্ত শব্দ করা হচ্ছে, যা শিক্ষার্থীদের অভিযোগ সত্ত্বেও প্রশাসন আমলে নিচ্ছে না। আজকেও প্রায় পাঁচ-ছয় ঘণ্টা ধরে উচ্চ শব্দে একটি অনুষ্ঠান চলছে। এরই প্রতিবাদের আমাদের এই আয়োজন।
প্রতিবাদকারী শিক্ষার্থীদের মধ্যে আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান নিয়ম কানুনগুলো সময় বা সাউন্ড লিমিট কম থাকার কারণে সংশোধন করা যেতে পারে। যদিও বর্তমান নিয়ম কানুনগুলো হয়ত নিখুঁত নয়, তবে সেগুলোর প্রতি সম্মান রাখা উচিত। উচ্চ শব্দে গান বাজনা বন্ধ করার জন্য শিক্ষার্থীদের অভিযোগের পরেও প্রশাসন কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। তিনি বলেন, প্রক্টরের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও তারা অভিযোগ শোনেননি বা উচ্চ শব্দ বন্ধে এগিয়ে আসেননি।শিক্ষার্থীদের ঘুমে ব্যাঘাত ঘটানোর প্রতিবাদে আমরা একটি ব্যবস্থা গ্রহণে এই সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজনের সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
এ বিষয়ে ‘বাউলের দ্রোহ’এর আয়োজক সজিব আহমেদ জেনিস বলেন, অনুষ্ঠানে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটেছে। ঘটনাস্থলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর সরাসরি শিল্পীকে গান বন্ধ করতে বলেছেন, যা আগে কখনো ঘটেনি। তিনি বলেন, প্রথমবার প্রক্টর যখন আসেন আমরা সাউন্ড কমিয়ে দিয়ে এবং বাইরের শব্দ বন্ধ করে অনুষ্ঠান চালিয়ে যাচ্ছিলাম যাতে কারো অসুবিধা না হয়। এর আগেও রাগ (Rag) এর প্রোগ্রাম রাত ২টা বা আড়াইটা পর্যন্ত চললেও কারো কোনো আপত্তি ছিল না, কিন্তু আজকের অনুষ্ঠানের বন্ধের বিষয়টি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত আক্রমণ বলে মনে হচ্ছে।
বিষয়টি নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক এ কে এম রাশিদুল আলম বলেন, আজ সন্ধ্যায় একটি অনুষ্ঠানে শব্দের মাত্রাতিরিক্ততার কারণে শিক্ষার্থীদের পড়াশোনায় ব্যাঘাত ঘটে। আমাদের অনুরোধ সত্ত্বেও রাত ১০টা থেকে দেড়টা পর্যন্ত এই অনুষ্ঠান চলে। উপাচার্যের নির্দেশে প্রক্টরিয়াল বডি অনুষ্ঠানস্থলে গিয়ে আয়োজকদের শব্দের মাত্রা কমাতে এবং অনুষ্ঠানটি বন্ধ করার অনুরোধ জানান। অবশেষে, রাত ১.৪৫-এর দিকে আয়োজকরা অনুষ্ঠানটি শেষ করেন। তিনি আরও বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ শিক্ষার্থীদের কাছে দায়িত্বশীল আচরণ এবং পরীক্ষার আগে অন্য শিক্ষার্থীদের অসুবিধা সৃষ্টি না করার জন্য অনুরোধ জানিয়েছে।