• শুক্রবার, ২৮ নভেম্বর ২০২৫, ০৩:৫৪ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম
হোমনা সরকারি কলেজ ছাত্রদলের উদ্যোগে বিনামূল্যে রক্তের গ্রুপ নির্ণয় ক্যাম্পেইন ধানের শীষের পক্ষে ভোট চেয়ে গণসংযোগ ও লিফলেট বিতরণ তিতাস উপজেলা ছাত্রদলের পাথরঘাটায় আওয়ামী লীগ ট্যাগ লাগিয়ে বিএনপির একাধিক নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা প্লট বরাদ্দে দুর্নীতির মামলায় জয় ও পুতুলের ৫ বছরের কারাদণ্ড চকরিয়ার ডুলাহাজারায় চেকপোস্টে ২০ হাজার ইয়াবাসহ পাচারকারী গ্রেফতার বাউল আবুল সরকারের মুক্তির দাবিতে খুলনায় মানববন্ধনে হামলা, মারধর পাকিস্তানের আদিয়ালা জেলেই আছেন ইমরান খান, সুস্থ আছেন : কর্তৃপক্ষ গিনি-বিসাউর ক্ষমতা নিল সেনাবাহিনী, প্রেসিডেন্ট গ্রেপ্তার তিন মামলায় শেখ হাসিনার ২১ বছরের কারাদণ্ড নাজিরপুরে পরিবার পরিকল্পনা কর্মীদের স্মারকলিপি প্রদান

পাথরঘাটায় আওয়ামী লীগ ট্যাগ লাগিয়ে বিএনপির একাধিক নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা

প্রভাত রিপোর্ট / ৭২ বার
আপডেট : বৃহস্পতিবার, ২৭ নভেম্বর, ২০২৫

মো. জাফর ইকবাল, পাথরঘাটা : বরগুনার পাথরঘাটায় আওয়ামী লীগের ট্যাগ লাগিয়ে বিএনপির একাধিক নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন বরগুনা জেলার ৭ নং ঢলুয়া ইউনিয়নের ৮ নং ওয়ার্ড বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোঃ বাদল।
মামলার বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে বরগুনা জেলা ও পাথরঘাটা উপজেলা বিএনপির নেতাকর্মীদের মাঝে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়।
২০১৩ সালের ১২ আগস্ট, ২০১৬ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি এবং ২০২০ সালের ১৪ এপ্রিলের তিনটি পৃথক ঘটনা দেখিয়ে বরগুনা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভু, সাবেক সংসদ সদস্য গোলাম সরোয়ার টুকু, সাবেক সংসদ সদস্য শওকত হাচানুর রহমান রিমন, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবীর ও ১৭ জন আইনজীবীসহ ১৩৪ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও ৪০ জনকে আসামি করে গত শনিবার ২২ নভেম্বর ২০২৫ খ্রিঃ বরগুনা সদর থানায় মামলাটি দায়ের করেন বাদল।
মামলার এজাহারে তিনি উল্লেখ করেন, আসামিরা উল্লিখিত তিন দফায় বরগুনা সদর রোডের কাঠপট্টিতে তাঁর ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে নগদ দুই লাখ ২০ হাজার টাকা লুট করে এবং দুই লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি করে। তাঁকে তুলে নিয়ে চোখ বেঁধে মারধর করে। চোখ বাঁধা অবস্থায় অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে দীর্ঘদিন আটক করে রাখে। ওই সময় তাঁকে জঙ্গি, চোর এবং রাষ্ট্রবিরোধী কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগ তুলে র‍্যাব-পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে। আসামিরা তাঁকে ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে জবানবন্দি দিতে বাধ্য করে যে, তিনি জঙ্গি এবং বিএনপির উগ্রপন্থি লোক। এসব ঘটনায় পুলিশ তাঁকে দুই দফায় রিমান্ডে নিয়ে অন্তত ৯ দিন নির্যাতন করে এবং এসব ঘটনায় বিভিন্ন মেয়াদে চার বছর ছয় মাস তাকে কারাভোগ করতে হয়েছে বলে দাবি তার।
উল্লেখিত মামলায় পাথরঘাটা উপজেলার চরদুয়ানি ইউনিয়নের ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি মোঃ জসিম মৃধাকে চরদুয়ানি ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি উল্লেখ করে আওয়ামী লীগ নেতা সাজিয়ে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের সাথে আসামী করা হয়েছে।
একই ভাবে পাথরঘাটা উপজেলার কালমেঘা ইউনিয়নের ফাহিম মাহমুদ, সদর ইউনিয়নের রহিম মোল্লা এবং আল আমিনসহ অনেক বিএনপি নেতা কর্মীর বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।
এঘটনায় জসিম মৃধার পক্ষে বুধবার ( ২৬ নভেম্বর ) চরদুয়ানি ইউনিয়নের খলিফারহাটে মানববন্ধন করেছেন এলাকাবাসী।
মানববন্ধনে বক্তারা আক্রোশ মূলক মামলা থেকে জসিম মৃধাসহ সকল বিএনপি নেতা কর্মীদের অব্যাহতি দিয়ে মামলার বাদির বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান।
এ ব্যাপারে জসিম মৃধা বলেন আমি যেদিন থেকে রাজনীতি বুঝেছি সেদিন থেকেই বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি’র আদর্শে উজ্জীবিত হয়ে ছাত্রদল করা শুরু করেছি। আমি চরদুয়ানী ইউনিয়ন ছাএদলের সভাপতি ছিলাম। আমার বাবা মরহুম আ: ছালাম মৃধা চরদুয়ানী ইউনিয়ন বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। বিগত ১৭ বছরের সকল গুরুত্বপূর্ণ কর্মসূচিতে আমি আমার ছাত্রদলের কর্মীদের নিয়ে সক্রিয়ভাবে অংশ গ্রহন করেছি।
জসিম মৃধা বলেন, গত ২২ তারিখ একটি মামলায় বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের লোকজনের সাথে আমার নামটি ষড়যন্ত্রমূলকভাবে যুক্ত করা হয়েছে। আমি বাদীকে ফোনে জানতে চাইলে তিনি বলেন সে আমাকে চিনে না এবং পাথরঘাটা থেকে নাম দেয়া হয়েছে বলে জানান। তিনি বলেন আমি জেলার এবং উপজেলার সকল নেতাদের কাছে এই ষড়যন্ত্রের বিচার চাই।
এব্যাপারে পাথরঘাটা উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক চৌধুরী মোঃ ফারুক ও সদস্য সচিব এম কামরুল ইসলাম বলেন পাথরঘাটা উপজেলা বিএনপি’র সক্রিয় অনেক নেতাকর্মীর নামে আওয়ামী লীগের তালিকায় মামলা হয়েছে, যা খুবই দুঃখজনক তারা বলেন বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবগত করা হয়েছে এব্যাপারে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
জানতে চাইলে পাথরঘাটা উপজেলা যুবদলের ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক মোঃ জসীম উদ্দিন রানা, যুগ্ম আহবায়ক হাসান আবু বকর মেসাল বলেন চরদুয়ানি ইউনিয়নের জসিম মৃধা এবং কালমেঘা ইউনিয়নের ফাহিম এরা যুবদলের সক্রিয় কর্মী।
তারা বলেন এছাড়াও ওই মামলায় পাথরঘাটা উপজেলা বিএনপির একাধিক সক্রিয় নেতাকর্মীকে আসামি করা হয়েছে আমরা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদসহ বিএনপি’র ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে বাদীর বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের জোর দাবি করছি।
উল্লেখ্য আগস্টের পর বরগুনায় আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে বিএনপির নেতাকর্মীরা আরও পাঁচটি মামলা করেছেন বলে নিশ্চিত করেছেন আদালত পরিদর্শক মাহবুব হোসেন।
সর্বশেষ মামলায় এক নম্বর সাক্ষী রাখা হয়েছে বরগুনা জেলা জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি আসাদুজ্জামান আল-মামুন এবং ৩ নম্বর সাক্ষী রাখা হয়েছে জেলা বিএনপির সদস্য সচিব হুমায়ূন হাসান শাহিনসহ বিএনপির জ্যেষ্ঠ নেতাদের। তবে এই বিষয়ে কিছুই জানেন না বলে দাবি তাদের। শুধু তাই নয়, গণহারে আসামি করা এবং তাদের অজান্তে সাক্ষী রাখায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন এই দুই নেতা।


আপনার মতামত লিখুন :
এই বিভাগের আরও