• মঙ্গলবার, ০১ জুলাই ২০২৫, ০২:৩২ অপরাহ্ন
শিরোনাম

চাল উৎপাদনে রেকর্ড : তারপরও দাম বেড়েছে কেজিতে ৪-৮ টাকা

প্রভাত রিপোর্ট / ১২ বার
আপডেট : শনিবার, ২১ জুন, ২০২৫

প্রভাত অর্থনীতি: ঢাকার খুচরা বাজারগুলোতে মিনিকেট চাল বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৮০-৮২ টাকায়, যেখানে ঈদের আগে এ দাম ছিল ৭২–৭৪ টাকা। মোজাম্মেল মিনিকেটের দাম ছিল ৭৫ টাকা, যা বেড়ে এখন ৮৮–৯০ টাকায় পৌঁছেছে। মাঝারি দানার চাল ব্রি-২৮, ব্রি-২৯ ও পাইজাম কেজিতে ৪ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৬০–৬৪ টাকায়। আর মোটা চাল হিসেবে পরিচিত স্বর্ণার দাম বেড়ে এখন কেজি ৫৭–৫৮ টাকা, যা আগের চেয়ে ২–৩ টাকা বেশি।
পাইকারি বাজারেও চালের দাম একইভাবে বেড়েছে। রাজধানীর কারওয়ান বাজারে এখন ৫০ কেজির এক বস্তা মিনিকেট চাল বিক্রি হচ্ছে ৩ হাজার ৯০০ থেকে ৪ হাজার টাকায়। ঈদের আগে এ বস্তার দাম ছিল ৩ হাজার ৫০০ থেকে ৩ হাজার ৬০০ টাকা। ব্রি-২৮ ও পাইজাম চালের বস্তা (৫০ কেজি) এখন বিক্রি হচ্ছে ৩ হাজার ১০০ টাকায়, যা ঈদের আগে ছিল ২ হাজার ৮০০-২ হাজার ৯০০ টাকা।
সরকারি তথ্য অনুযায়ী, এবার দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি চাল উৎপাদন হয়েছে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানিয়েছে, ৪৮ লাখ হেক্টর জমিতে রেকর্ড ২ কোটি ১৪ লাখ টন চাল উৎপাদিত হয়েছে। বোরো মৌসুমে রেকর্ড পরিমাণ ধান উঠলেও কুরবানির ঈদের পর চালের দাম হঠাৎ করে কেজিতে ৪ থেকে ৮ টাকা বেড়েছে। এতে একদিকে যেমন ভোক্তারা চাপে পড়েছেন, অন্যদিকে কৃষকরাও অসন্তুষ্ট।
পাইকারি চাল বিক্রেতা মো. শাওন গণমাধ্যমকে বলেন, ‘এখন চালের দাম বাড়ার কোনও যুক্তি নেই। কিন্তু ঈদের পর থেকে প্রতিদিনই দাম বাড়ছে।’
বাজার বিশ্লেষক ও কৃষি সংশ্লিষ্টরা বলছেন, করপোরেট প্রতিষ্ঠান ও মিল মালিকরা ধান মজুত করে রেখেছে এবং এখন কৃত্রিম সংকট তৈরি করে দাম বাড়াচ্ছে। তারা ঈদের আগেই কৃষকদের কাছ থেকে কম দামে ধান কিনে গুদামে মজুত করেছেন। এখন নানা অজুহাতে চালের দাম বাড়ানো হচ্ছে।
নওগাঁ চালকল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ফরহাদ হোসেন চকদার বলেন, ‘সম্প্রতি বৃষ্টির কারণে বোরো ধানের গুণগত মান কিছুটা নষ্ট হয়েছে। ফলে ধানের দাম বেড়েছে। গত ১৫-২০ দিনে প্রতি মণ ধানের দাম ১০০-১৫০ টাকা বেড়েছে। এর ফলে মিল পর্যায়ে চালের দাম কেজিতে ২ টাকা করে বেড়েছে।’ তবে বাজার বিশ্লেষকদের মতে, রেকর্ড পরিমাণ চাল উৎপাদন হলেও কৃষক ও ভোক্তা—কেউই এর সুফল পাচ্ছেন না। কারণ, ধান যখন কৃষকের হাতে থাকে, তখন দাম কম থাকে। কিন্তু ব্যবসায়ীদের হাতে যাওয়ার পর চালের দাম বাড়িয়ে তোলা হয়।
কনজ্যুমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সহ-সভাপতি এস এম নাজের হোসেন বলেন, ‘সবসময় কৃষকের হাতে যখন ফসল থাকে তখন দাম কমিয়ে রাখা হয়। এতে কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। আবার যখন কৃষকের হাত থেকে পণ্য চলে যায়, তখন দাম বাড়িয়ে ভোক্তাকে ক্ষতির মুখে ফেলা হয়। সরকার এটাকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না।’
এদিকে চালের বাজার চড়া হলেও অন্যান্য নিত্যপণ্যের দাম কিছুটা স্থিতিশীল রয়েছে। ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১৫০–১৬০ টাকা কেজিতে, আর ডিম প্রতি ডজন ১২০–১৩০ টাকায়। সোনালি মুরগির দাম কিছুটা কমে এখন কেজি ২৬০–২৮০ টাকায় নেমেছে।
বাজারে পটল, ঢ্যাঁড়স ও ঝিঙে—এই তিন ধরনের সবজি মিলছে ৫০–৬০ টাকা কেজিতে। তবে আলুর দাম কেজিতে ৫ টাকা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৫–৩০ টাকায়। আর স্থানীয় বাজারে পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৫৫–৬০ টাকা কেজি দরে।


আপনার মতামত লিখুন :
এই বিভাগের আরও