সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
Proval Logo

সংঘাতে ১৪ পুলিশসহ নিহত অর্ধশতাধিক

প্রকাশিত - ০৪ আগস্ট, ২০২৪   ০৮:৪৬ পিএম
webnews24

প্রভাত রিপোর্ট : বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকে এক দফা দাবিতে সর্বাত্মক অসহযোগের প্রথম দিন গতকাল রবিবার সারাদেশে ১৪ জন পুলিশসহ অর্ধশতাধিক মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। রাজধানী ঢাকায় বিভিন্ন অঞ্চলে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে পুলিশ ও আওয়ামী লীগের দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়েছে। এ ছাড়া বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান, গাড়ি এবং বাড়িতে আগুণ জ¦ালিয়ে দেওয়া হয়েছে। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্তÑ নরসিংদীতে সংঘর্ষে ৬ জন, ফেনীতে ৫ জন, রংপুরে যুবলীগ কর্মীসহ ৩ জন, বগুড়ায় ৩ জন, সিরাজগঞ্জে ৩ জন, কিশোরগঞ্জে ৩ জন, পাবনায় ৩ জন, মুন্সীগঞ্জে ৩ জন, মাগুরায় ছাত্রদল নেতাসহ ২ জন, কুমিল্লায় ২ জন, ঢাকায় ৩ জন, সিলেটের গোলাপগঞ্জে ২ জন, বরিশাল সদরে ১ আওয়ামী লীগ নেতা ও জয়পুরহাটে ১ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।
নরসিংদী শহরের মাধবদী পৌরসভা মোড়ে আওয়ামী লীগের ৬ নেতাকর্মীকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যার খবর পাওয়া গেছে। তারা হলেন- সদর উপজেলা চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেনের ছোট ভাই দেলোয়ার হোসেন, সদর উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক সভাপতি মনির হোসেন ভুঁইয়া, সদর উপজেলার চরদীঘলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেন, ছাত্রলীগ কর্মী জলিল, সজীব ও মোক্তার। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, আন্দোলনকারীরা সকাল থেকেই ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করছিলেন। হঠাৎ করেই তারা মিছিল নিয়ে শহরের ভিতরে প্রবেশ করতে থাকেন। মাধবদীতে আগে থেকেই আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা অবস্থান নিয়েছিলেন। দীর্ঘক্ষণ ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষের পর আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা পিছু হটে। অন্যরা সরে যেতে পারলেও ৬ জন আটকা পড়েন। বিক্ষোভকারীরা তাদেরকে নৃসংষভাবে কুপিয়ে ও পিটিয়ে হত্যা করে।
সিলেটের গোলাপগঞ্জ উপজেলার সদরের ঢাকা দক্ষিণ বাজার এলাকায় আন্দোলনকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষে মারা যায় ২ জন। মৃতদের একজন ধারাবাহর গ্রামের মকবুল আলীর ছেলে ব্যবসায়ী তাজ উদ্দিন (৪৩)। ছাত্র-জনতার সঙ্গে ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীদের সংঘর্ষে ফেনীতে ৫ জন নিহত হয়েছেন। পাবনায় আন্দোলনকারীদের বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ চলাকালে ৩ জন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। নিহতরা হলেন- জাহিদুল ইসলাম (২১), মাহবুবুর রহমান (২২) ও ফাহিম হোসেন (১৭)। রংপুরে দুপক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষে যুবলীগকর্মীসহ ৩ জন নিহত হন। নিহতরা হলেন- রংপুর সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলর হারাধন রায় হারা, যুবলীগকর্মী মাসুম মিয়া (৩১) ও নগরীর গোড়াপীপাড়ার বাসিন্দা খাইরুল (৩০)। ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক ও কালিয়াকৈর নবীনগর আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়ে অগ্নিসংযোগ করে তারা। এ সময় তারা চন্দ্রা ত্রিমোড় এলাকায় পুলিশ বক্সও ভাঙচুর আন্দোলনকারীরা।
ফরিদপুরে আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে বিক্ষোভকারী সেখান থেকে একটি মিছিল বের করেন। আওয়ামী লীগের কর্মী-সমর্থকেরা প্রতিরোধ করার চেষ্টা করলে বিক্ষোভকারীরা তাদের পিটিয়ে-আহত করে সরিয়ে দেয়। পরে কার্যালয়ে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে বিক্ষোভকারীরা। পুড়িয়ে দেওয়া হয় অর্ধশতাধিক মোটরসাইকেল। তারা চকবাজারে যুবলীগের কার্যালয়েও হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করে। আন্দোলনকারীরা শহরের বিভিন্ন স্থানে অগাস্ট মাস উপলক্ষে নির্মিত তোরণ, বিল বোর্ড ও ব্যানার ভাঙচুর করে।
চট্টগ্রামের নিউ মার্কেট এলাকায় আন্দোলনকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষের ঘটনায় আহত ৩০ জনকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।
মাগুরা ১১টার দিকে শহরের ঢাকা রোডে পুলিশ ও বিএনপি সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এই সংঘর্ষে যুগ্ম-সম্পাদক মেহেদী হাসান রাব্বী নিহত হন বলে দাবি করেছেন জেলা ছাত্রদলের সভাপতি আব্দুর রহিম। আর দুপুরে মারা গেছেন শ্রীপুর উপজেলার রায়নগর গ্রামের গোলাম রসুলের ছেলে।
মুন্সীগঞ্জে ত্রিমুখী সংঘর্ষে নিহত হয়েছেন ২জন। মুন্সীগঞ্জ শহরে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আওয়ামী লীগ-ছাত্রলীগ ও পুলিশের ত্রিমুখী সংঘর্ষে নিহত হওয়া দুই জনের বয়স ২২ থেকে ২৫ বছরের মধ্যে।

ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে সঙ্গে থাকুন
ওয়েব নিউজ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

আরও পড়ুন
বাগেরহাটে বেশিরভাগ ডিলার আত্মগোপনে :