প্রভাত ডেস্ক : ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কলকাতার আরজি কর মেডিকেল কলেজে কর্তব্যরত এক তরুণী চিকিৎসককে ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনায় অভিযুক্তদের ফাঁসি চেয়ে শুক্রবার মিছিল করেছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জী। আবার ওই ঘটনায় মমতার পদত্যাগ চেয়ে মিছিল করেছে বিজেপি। বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রাজ্যটিতে শুক্রবার মিছিল, পাল্টা-মিছিল, বনধ একইসঙ্গে সব চলেছে। প্রশ্ন উঠেছে, হঠাৎ করে কেন একইসঙ্গে এতগুলো রাজনৈতিক কর্মসূচীতে নেমে পড়ল ক্ষমতাসীন-বিরোধী সব দলগুলোই?
একাধিক বিশ্লেষকের মতে, গত বুধবার আর বৃহস্পতিবারের মাঝ রাতে দেশটিতে লাখ লাখ নারী-পুরুষ রাস্তা দখল করে নিয়েছিলেন। জনতার সেই স্বতঃ:স্ফূর্ত প্রতিবাদ দেখেই রাজনৈতিক দলগুলো রাস্তায় নামতে বাধ্য হয়েছে।
তারা বলছেন, ওই রাতের রাস্তা দখল সবগুলো রাজনৈতিক দলকেই একটা বার্তা দিয়েছে যে নারী নিরাপত্তার ব্যবস্থা বা দোষীদের শাস্তির ব্যবস্থার দাবি নিয়ে দলগুলো যদি শুধু রাজনীতিই করে যায়, তাহলে সাধারণ মানুষ পথে তো নামবেই।
আর সেই রাতের ‘জনসমুদ্র’ দেখে শুক্রবার থেকে রাজনৈতিক দলগুলোও রাস্তায় নামতে বাধ্য হয়েছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। রাজনৈতিক দলগুলো যখন রাস্তায় নেমেছে শুক্রবার, তার মধ্যেই আরজি কর মেডিকেল কলেজ সহ রাজ্যের সব সরকারি মেডিক্যাল কলেজে জুনিয়ার ডাক্তাররা কর্মবিরতি চালাচ্ছেন। দেশের বিভিন্ন রাজ্যে রেসিডেন্ট ডাক্তাররাও কাজ করছেন না। ভারতে চিকিৎসকদের সবচেয়ে বড় সংগঠন ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন শনিবার সকাল থেকে ২৪ ঘণ্টার জন্য ধর্মঘট ডেকেছে।
রাজ্যের প্রধান বিরোধী দল বিজেপি আবার শুক্রবার কলকাতায় ধর্না-অবস্থান, জেলায় জেলায় রাস্তা অবরোধ আর দুপুরে দু ঘণ্টার জন্য ‘সামাজিক কর্মবিরতি’র ডাক দিয়েছিল। মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ির উদ্দেশ্যে এক মশাল মিছিলও করার কথা ছিল মুখ্যমন্ত্রীর পদত্যাগের দাবিতে। তবে মিছিল শুরুর আগেই পুলিশ বিজেপি নেতা-কর্মীদের গ্রেফতার করে নিয়ে যাওয়ায় সেই মিছিল আর হয়নি। এর আগে কলকাতার শ্যামবাজারে বিজেপির ধর্না অবস্থান মঞ্চ পুলিশ ভেঙ্গে দিয়েছিল। সেখান থেকেও বেশ কয়েকজন নেতা-কর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
অন্যদিকে বামদলগুলোও মুখ্যমন্ত্রীর পদত্যাগের দাবি জানিয়ে বলেছে, ‘দফা এক, দাবি এক, মমতা ব্যানার্জীর পদত্যাগ’। এর আগের বহুল আলোচিত গণধর্ষণ ও হত্যার মামলাগুলোতে মমতা ব্যানার্জী ‘ছোট ঘটনা’, ‘বিচ্ছিন্ন ঘটনা’র মতো আর কী কী মন্তব্য করেছিলেন, সেগুলোও তুলে ধরছে বামদলগুলো।