প্রভাত স্পোর্টস : টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের প্রথম আসরেই শিরোপা উত্সব করেছিল ভারত। সংক্ষিপ্ত সংস্করণের বৈশ্বিক আসরে এরপর তাদের খালি হাতে ফিরতে হয়েছে বারবার। ২০১৩ সালের পর আইসিসির কোনো আসরের শিরোপাই তো জিততে পারেনি ভারত। ওই আক্ষেপ ঘুচিয়ে বিরাট কোহলি-রোহিত শর্মাদের সামনে আরেকটি বিশ্বকাপ জেতার হাতছানি। নিউ ইয়র্কের নাসাউ কাউন্টি ক্রিকেট স্টেডিয়ামে আয়ারল্যান্ডকে ৮ উইকেটে হারিয়ে ওই মিশন শুরু করেছে ভারত। জাসপ্রিত বুমরাহ, হার্দিক পান্ডিয়া, আর্শদীপ সিংহ ৯৬ রানে বেধে ফেলে আইরিশদের। ওই রান মাত্র দুই উইকেট হারিয়ে ৪৬ বল বাকি থাকতে ছাড়িয়ে যায় রোহিত শর্মার দল।
টস জিতে প্রথমে আইরিশদের ব্যাটিংয়ে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন অধিনায়ক রোহিত শর্মা।
আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে এর আগে সাতটি টি-টোয়েন্টি খেলে একটিও হার ছিল না ভারতের। নিউ ইয়র্কের বিশাল জয়ে গৌরবের রেকর্ডটা অক্ষুণ্নই থাকল তাদের। নাসাউ কাউন্টি স্টেডিয়ামে রান করা মোটেও সহজ নয়! এই মাঠে অনুষ্ঠিত আগের ম্যাচে শ্রীলঙ্কার ৭৭ রান তাড়া করতেও সতেরতম ওভার খেলতে হয়েছিল দক্ষিণ আফ্রিকাকে। এটা মাথায় রেখেই হয়তো পরে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন রোহিত।
৯ রানের মধ্যে আয়ারল্যান্ডের দুই উদ্বোধনী ব্যাটারকে তুলে নিয়ে অধিনায়ক রোহিতের সিদ্ধান্ততে যথার্থ প্রমাণ করেছেন আর্শদীপ সিং।
জোড়া আঘাতে নিজের দ্বিতীয় এবং ইনিংসের তৃতীয় ওভারে উইকেট দুটি শিকার করেন ভারতীয় এই পেসার। অধিনায়ক পল স্টারলিংকে (২ রান) ঋশভ পান্তের ক্যাচ বানানোর ৫ বল পর অভিজ্ঞ অ্যান্ড্রু বালবিরনির (৫ রান) স্টাম্প উড়িয়েছেন আর্শদীপ। এরপর ধবংসযজ্ঞে হার্দিক পান্ডিয়া এবং জাসপ্রিত বুমরাহ যোগ দিলে পথ হারিয়ে ফেলে আইরিশরা। লরকান টাকারকে বোল্ড করেন পান্ডিয়া আর হ্যারি টেক্টটরকে ফেরান বুমরাহ।
এই ঝড় সামলে ওঠার আগে আবার জোড়া আঘাত পান্ডিয়ার। কার্টিস ক্যাম্ফার এবং মার্ক অ্যাডাইরকেও তুলে নেন এই পেসার। পান্ডিয়ার দুই শিকারের মাঝে জর্জ ডকরেলকে মোহাম্মদ সিরাজ শিকার বানালে স্কোর পঞ্চাশ পেরুনোর আগেই ৭ উইকেট হারিয়ে খাদের কিনারে চলে যায় আইরিশরা। এরপর অক্ষর প্যাটেলকে ব্যারি ম্যাককার্থি ফিরতি ক্যাচ দিলে ৮/৫০ এ পরিণত হয় আয়ারল্যান্ড। ওই ধবংসস্তুপ থেকেও তারা একশর কাছাকাছি গিয়েছে গ্যারেথ ডেলানির ২৬ এবং জস লিটলের ১৪ রানের ইনিংস দুটোর কল্যাণে! ২৭ রানে ৩ উইকেট নেন পাণ্ডিয়া। আর কৃপণে বোলিংয়ে ৩ ওভারে একটি মেডেনসহ মোটে ৬ রান খরচায় ২ শিকার বানান বুমরাহ। আর্শদীপ ২ উইকেট নিতে খরচা করেছেন ৩৫ রান।
ভারতের শুরুও ছিল নড়বড়ে। একশর নীচে লক্ষ্য তাড়ায় ইনিংসের গোড়াপত্তন করতে নেমে মোটে ১ রানে আউট হন বিরাট কোহলি। ইনিংসের তৃতীয় ওভারে তাঁকে তুলে নিয়ে মার্ক অ্যাডাইর ভয় ধরিয়ে দিলেও রোহিত শর্মার হাফসেঞ্চুরিতে জয়ের বন্দরে পৌঁছাতে একটুও সমস্যা হয়নি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের প্রথম আসরের চ্যাম্পিয়নদের। রিটায়ার্ড হার্ট হয়ে মাঠ ছাড়ার আগে ৩৭ বলে ৪টি চার ৩টি ছক্কায় ৫২ রানের ইনিংস খেলেছেন ভারত অধিনায়ক। ৩৬ রানের হার না মানা ইনিংসে রোহিতকে দারুণ সঙ্গ দিয়েছেন ঋশভ পান্টও। তবে নিজের নামের প্রতি একদম সুবিচার করতে পারেননি সূর্য্যকুমার যাদব (২ রান)। তাঁর উইকেটটি নিয়েছেন বেন হোয়াইট।
সহজ জয়ে শুরু করায় পাকিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচের জন্য নিশ্চিতভাবে আত্মবিশ্বাসে ভরপুর জ্বালানি পাবে ভারত। আগামী ৯ জুন নিউ ইয়র্কের নাসাউ কাউন্টি স্টেডিয়ামে বাবর আজমের দলের মুখোমুখি হবেন রোহিত শর্মারা।
প্রভাত/আসো