প্রভাত ডেস্ক : ভয়াবহ বন্যায় বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে ভারতের পশ্চিমাঞ্চলীয় রাজ্য গুজরাট। রাজ্যটিতে বন্যায় এখন পর্যন্ত ২৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। ঘরবাড়ি থেকে বাস্তুচ্যুত হয়ে নিরাপদ স্থানে চলে যেতে বাধ্য হয়েছে হাজার হাজার মানুষ। অবশ্য বৃষ্টি এবং বন্যায় বিপর্যস্ত গুজরাটের এই দুর্যোগ থেকে শিগগিরই অবকাশ পাওয়ার আশা নেই। রাজ্যটির আবহাওয়া বিভাগ আরও বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছে। আবহাওয়া অফিস ৩০ আগস্ট পর্যন্ত অতি ভারী বৃষ্টির সতর্কতা জারি করেছে। এছাড়া রেড অ্যালার্ট জারি করা হয়েছে গুজরাটের ১১টি জেলায়। গতকাল বৃহস্পতিবার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।সংবাদমাধ্যম বলছে, লাগাতার বৃষ্টির কারণে গুজরাটে বন্যা পরিস্থিতি ভয়ঙ্কর রূপ নিয়েছে। বন্যায় এখনও পর্যন্ত কমপক্ষে ২৯ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। বাস্তুচ্যুত ২৩ হাজারেরও বেশি মানুষ। জোর তৎপরতার মাধ্যমে উদ্ধারকাজ চালাচ্ছে দেশটির কেন্দ্রীয় ও রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী।
বন্যার চলমান এই পরিস্থিতির মধ্যে আরও উদ্বেগ বাড়াচ্ছে আবহাওয়ার পূর্বাভাস। আবহাওয়া দপ্তর গুজরাটের ১১টি জেলায় রেড অ্যালার্ট জারি করেছে। হলুদ সতর্কতা জারি রয়েছে আরও ২২ জেলায়। নতুন করে বৃহস্পতিবার আবারও বৃষ্টি হলে বন্যা পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হয়ে উঠতে পারে বলেই আশঙ্কা করা হচ্ছে। বিগত কয়েকদিন ধরে লাগাতার বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত গুজরাট। একের পর এক এলাকা পানিতে প্লাবিত হচ্ছে। আবহাওয়া দপ্তরের পক্ষ থেকে বৃহস্পতিবার কচ্ছ ও সৌরাষ্ট্র অঞ্চলে রেড অ্যালার্ট জারি করা হয়েছে। রাজ্যটির দ্বারকা, জামনগর, মোরবি, সুরেন্দ্র নগর, রাজকোট, জুনাগড়, আমরেলি, ভাবনগরসহ একাধিক জায়গায় ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। আজও বৃষ্টি চলবে।
রাজ্য ইমারজেন্সি অপারেশন সেন্টারের তথ্য অনুযায়ী, এবারে বার্ষিক গড় বৃষ্টিপাতের তুলনায় ১০৫ শতাংশ বেশি বৃষ্টিপাত হয়েছে। সেই কারণেই বন্যা পরিস্থিতির এতোটা অবনতি হয়েছে। রাজ্য সরকার জানিয়েছে, ১৪০টি জলাধার-বাঁধ ও ২৪টি নদীর পানি বিপদসীমার ওপর দিয়ে বইছে।
লাগাতার বৃষ্টির কারণে আজওয়া ও প্রতাপপুরা বাঁধ থেকে পানি ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। সেই কারণেই বিশ্বমৈত্রী নদীর দুই পাড়ে থাকা এলাকাগুলো প্লাবিত হয়েছে। ভাদোদরাসহ একাধিক শহরে ১০-১২ ফুট পানি জমে রয়েছে। বন্যায় এখনও পর্যন্ত ২৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। ঘরছাড়া হাজার হাজার মানুষ। রাজ্য ও জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী উদ্ধারকাজ চালাচ্ছে। সেনাবাহিনী, বিমান বাহিনী ও উপকূল রক্ষী বাহিনীকেও ডাকা হয়েছে উদ্ধারকাজে সাহায্যের জন্য। এদিকে বুধবার বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ভূপেন্দ্র প্যাটেলের সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় সব ধরনের সহায়তার আশ্বাসও দিয়েছেন তিনি। ভারতের আবহাওয়া বিভাগ বৃহস্পতিবার সৌরাষ্ট্রের বিচ্ছিন্ন জেলাগুলোতে অত্যন্ত ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছে। বন্যা কবলিত এলাকা থেকে এখনও বহু মানুষকে সরিয়ে নেওয়া হয়নি। ক্ষুধার্ত এবং ভেজা অবস্থায় তারা নিরাপদ থাকার জন্য লড়াই করছে। গুজরাটের স্বাস্থ্যমন্ত্রী রুশিকেশ প্যাটেল বলেছেন, সরকার বন্যার পানি বিশ্বমৈত্রী নদীতে ছাড়ার পরিবর্তে নর্মদা খালে সরিয়ে দেওয়ার কথা ভাবছে।