প্রভাত স্পোর্টস : লর্ডস ক্রিকেট তীর্থ। বিশ্বকাপ ক্রিকেটের প্রথম তিনটি ফাইনালই হয়েছিল লন্ডনের এই ভেন্যুতে। ২০০৯ সালে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপটা যখন ইংল্যান্ডে গেল, তখনো ফাইনালের ভেন্যু হিসেবে লর্ডসকে বেছে নিতে দুবার ভাবেননি আয়োজকেরা। কিন্তু বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের প্রথম দুটি ফাইনাল ইংল্যান্ডে হলেও ভেন্যুর নামটি লর্ডস ছিল না। ২০২১ সালে সাউদাম্পটনে ও ২০২৩ সালে ওভালে হয় ফাইনাল। তবে এবার লর্ডসের সেই ‘অপূর্ণতা’ ঘুচতে যাচ্ছে। আইসিসি গতকাল ২০২৩-২৫ চক্রের বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালের ভেন্যু হিসেবে লর্ডসের নাম ঘোষণা করেছে। আগামী বছরের ১১ থেকে ১৫ জুন হবে সেই ফাইনাল। সেই ফাইনালে মুখোমুখি হবে কোন দুটি দল, সেটি এখনো বলার মতো সময় আসেনি। তবে আপাতত পয়েন্ট তালিকার শীর্ষ দুইয়ে আছে ভারত ও অস্ট্রেলিয়া। মাত্রই পাকিস্তানের বিপক্ষে ঐতিহাসিক সিরিজ জেতা বাংলাদেশেরও সম্ভাবনা আছে পয়েন্ট তালিকার শীর্ষ দুইয়ে থেকে লর্ডসে ফাইনালের টিকিট কাটার! দুই ম্যাচের সিরিজে পাকিস্তানকে ধবলধোলাই করার বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ‘জটিল’ পয়েন্ট তালিকার চারে উঠে এসেছে বাংলাদেশ। আটে থেকে সিরিজ শুরু করা নাজমুল হোসেনের দল রাওয়ালপিন্ডিতে প্রথম টেস্টের পরে ছয়ে উঠে এলেও পয়েন্ট জরিমানা দিয়ে আবার নেমে যায় সাতে। সেই দলটি পিন্ডিতে দ্বিতীয় টেস্ট জয়ের পর তিন ধাপ লাফ দিয়ে উঠে এসেছে চারে।
বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপে ২০২৩-২০২৫ চক্রে তিনটি সিরিজে ছয়টি টেস্ট খেলা বাংলাদেশের শতকরা পয়েন্ট ৪৫.৮৩। শীর্ষে থাকা ভারতের শতকরা পয়েন্ট ৬৮.৯২, দ্বিতীয়স্থানের অস্ট্রেলিয়ার পয়েন্ট ৬২.৫০। শতকরা ৫০ ভাগ পয়েন্ট নিয়ে নিউজিল্যান্ড আছে তিনে।
বাংলাদেশের এখনো তিনটি সিরিজ হাতে রয়েছে। বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের প্রথম দুই আসরেই পয়েন্ট তালিকার তলানিতে থাকা বাংলাদেশ তো ফাইনালে খেলার আশার করতেই পারে। ভারত, দক্ষিণ আফ্রিকা ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সিরিজ বাকি বাংলাদেশে। তিনটি সিরিজই হবে এ বছর। এ মাসেই ভারত সফর, এরপর দেশের মাটিতে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে খেলার পর ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে যাবে বাংলাদেশ। এই তিন সিরিজে দুটি করে মোট ছয়টি টেস্ট খেলবে বাংলাদেশ।
বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপে প্রতিটি জয়ের জন্য ১২ পয়েন্ট, ড্র ৪ ও টাই হলে ৬ পয়েন্ট। তবে সিরিজভেদে ম্যাচের সংখ্যা কমবেশি হওয়ায় সরাসরি এই পয়েন্টের ওপর ভিত্তি করে ক্রম সাজানো হয় না। বরং মোট প্রাপ্ত পয়েন্ট দলগুলো যত ম্যাচ খেলবে তত ম্যাচের সম্ভাব্য সর্বোচ্চ পয়েন্টের শতকরা হিসাব বের করে ক্রম সাজানো হয়। যেমন এখন পর্যন্ত ছয় টেস্ট খেলা বাংলাদেশের পয়েন্ট ৩৩। যেহেতু ৬ ম্যাচে সর্বোচ্চ ৭৮ পয়েন্ট পাওয়া সম্ভব, বাংলাদেশের পয়েন্ট ৪৫.৮৩ শতাংশ।
বাংলাদেশ যদি হাতে থাকা শেষ ছয়টি টেস্টই জেতে ও আর কোনো পয়েন্ট জরিমানা না দেয়, তবে শতকরা হিসেবে সর্বোচ্চ ৭২.৯১ পয়েন্ট পেতে পারে। আবার ছয়টি ম্যাচই হারলে পয়েন্ট কমে ২২.৯১ শতাংশ হয়ে যাবে। পরের ৬ টেস্টে তিনটি করে হার-জিত দেখলে শতকরা পয়েন্ট হবে ৪৭.৯১। শেষ পর্যন্ত কী হবে কে বলতে পারে, তবে অন্তত কাগজ-কলমের হিসাবে বাংলাদেশের ফাইনাল খেলার সম্ভাবনা ভালো করেই আছে।
পয়েন্ট তালিকার শীর্ষ দুই দল ভারত ও অস্ট্রেলিয়া নভেম্বর-জানুয়ারিতে মুখোমুখি হবে পাঁচ ম্যাচের সিরিজে। দুই দলের পয়েন্ট কাটাকুটির খেলা তালিকায় ভালোই প্রভাব রাখতে পারে। আর তাতে কাছেপিঠে থাকা দলগুলো ফাইনাল খেলার সম্ভাবনা বাড়বে বই কমবে না। বাংলাদেশের কাছে ধবলধোলাই হওয়া পাকিস্তান ১৯.০৫ শতাংশ পয়েন্ট নিয়ে পড়ে আছে আটে। ১৮.৫২ পয়েন্ট নিয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজই শুধু পাকিস্তানের নিচে।