মো. হাবিবুর রহমান, ডেমরা (ঢাকা) : কয়েক দিনের পর্যায়ক্রমে হওয়া বৃষ্টিসহ গত বুধবার ও বৃহস্পতিবারের বৃষ্টিতে তলিয়ে গেছে রাধানীর ডেমরার নিম্নাঞ্চলসহ অভ্যন্তরীণ অধিকাংশ সড়ক। আর এ সুযোগে তলিয়ে যাওয়া সড়কগুলোতে অভ্যন্তরীণ যানবাহনের ২০ টাকার ভাড়া ৬০ টাকা করে নিচ্ছেন চালকরা। এদিকে বৃষ্টির পানি নিম্নাঞ্চলের অধিকাংশ বাড়ীঘরেও প্রবেশ করেছে। ড্রেনেজ ব্যবস্থা অকেজো হয়ে স্থায়ী জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। বেশি সমস্যায় রয়েছেন ডিএনডির অভ্যন্তরের নিম্নাঞ্চলসহ বেশ কয়েকটি এলাকার মানুষ। এছাড়াও বৃষ্টি ও ড্রেনের ময়লা পানি মিশে সড়কে ও নিচু বাড়ী ঘরে বিভৎস পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। বিশেষ করে অভ্যন্তরীণ পানি নিষ্কাশন খালগুলো দিয়ে বৃষ্টির পানি সরতে না পারায় এ জলাবদ্ধতা বৃদ্ধি পেয়েছে বলে অভিযোগ এলাকাবাসীর। এতে অধিবাসীরা রয়েছেন চরম ভোগান্তিতে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, ডিএসসিসির ৬৪ ও ৬৫ নম্বর ওয়ার্ডের কোনাপাড়া, মাতুয়াইল, ফার্মের মোড়, মাতুয়াইল মেডিকেল সড়ক, ৬৬ নম্বর ওয়ার্ডের নিম্নাঞ্চলের পূর্বডগাইর গ্রীন সিটি এলাকা, বাদশা মিয়া রোড, ডগাইর নতুনপাড়া, পশ্চিম সানারপাড়, কোদালদোয়া, বামৈল পশ্চিমপাড়া, সাইনবোর্ড এলাকা, ৬৭ নম্বর ওয়ার্ডের পূর্ব—বক্সনগর, পূর্ব বক্সনগর ও মহাকাশরোড ও শুকুরশী এলাকার বেশ কিছু সড়কে বৃষ্টির পানি জমে গেছে। অনেক বাড়ী ঘরেও বৃষ্টির পানি প্রবেশ করেছে।
বেশি ভাড়া আদায়ের বিষয়ে জানতে চাইলে ইজিবাইক চালক মাহিম মিয়া বলেন, বৃষ্টির পানি সড়কে জমে থাকলে অল্প সময় ইজিবাইক চালানো যায়। রাস্তায় খানাখন্দ ও গর্ত বুঝা যায়না। অনেক সময় ব্যাটারিতে পানি ঢুকে ইজিবাইক চলাচলের অনুপযোগী হয়ে যায়। তাই ভাড়া একটু বেশি না নিলে সব খরচ বাদ দিয়ে কিছুই রোজগার থাকেনা।
এ বিষয়ে ৬৫ নম্বর ওয়ার্ডের ফার্মের মোড় এলাকার বাসিন্দা সাহালম বলেন, বৃষ্টি হলেই ফার্মের মোড় থেকে মাতুয়াইল মেডিকেল সড়কে জমে তলিয়ে যায়। আর এ সুযোগে বৃহস্পতিবার সকাল থেকে ২০ টাকার ভাড়া ৬০ টাকা করে নিচ্ছে ইজিবাইক ও অটোরিকশা চালকেরা। পাশাপাশি নিম্নাঞ্চলের অধিকাংশ সড়কেও পানি জমে। তখন ড্রেনের পানি ও বৃষ্টির পানি জমে একাকার হয়ে যায়। এক বিভৎস জীবনযাপন করি আমরা।
এসব বিষয়ে ৬৬ নম্বর ওয়ার্ডের সদ্য সাবেক কাউন্সিলর আব্দুল মতিন সাউদ বলেন, অন্যান্য ওয়ার্ডের চেয়ে অনেকটা নিচু এলাকা হচ্ছে ৬৬ ও ৬৭ নম্বর ওয়ার্ড। তাই বৃষ্টি হলেই নিম্নাঞ্চলগুলোতে পানি জমে যায়। সুষ্ঠু ড্রেনেজ ব্যবস্থা থাকলেও ড্রেনগুলোতে ময়লা জমে শক্ত হয়ে গেছে বলে সামান্য বৃষ্টিতেই পানি জমে সড়কে। ড্রেন পরিস্কার করার টেন্ডারের সময় দুই বছর আগে শেষ হলেও ঠিকাদারেরা কাজ অসম্পূর্ন রেখে চলে গেছে।
এসব বিষয়ে ডিএসসিসির ৬৭ নম্বর ওয়ার্ডের সানারপাড় এলাকার বাসিন্দা নূর আলম বলেন, নিচু জমিতে পানি আটকে রেখে মাছের চাষ করা হয় বলে এলাকার নিচু বাড়ী ঘরে বৃষ্টি হলেই পানি জমে। এবার টানা বৃষ্টিতে পানি জমে মারাত্মক ভোগান্তির সৃষ্টি হয়েছে।
এ বিষয়ে ডিএসসিসির ৬৭ নম্বর ওয়ার্ডের সদ্য সাবেক কাউন্সিলর ইবরাহীম খলিল বলেন, আমাদের ডেমরা থানাধীন ওয়ার্ড এলাকাগুলো অপরিকল্পিতভাবে ছিল। এগুলোকে আমরা পর্যায়ক্রমে অবকাঠামোগত উন্নয়নসহ বাসযোগ্য এলাকায় রূপান্তর করার কাজ করছিলাম। শেখ হাসিনার পতনের পর আমাদের দায়িত্ব বাতিল করা হয়েছে। আর ডিএনডির অভ্যন্তর বলে ইরিগেশন এ প্রকল্পকে পরিকল্পিতভাবে উন্নয়ন করতে আরও কিছুটা সময় লাগবে।